১০০ টাকার উপরে যাবতীয় ভারতীয় নোট নেপালে ব্যবহার বেআইনি বলে ফের সে দেশে নির্দেশ জারি হওয়ায় উদ্বিগ্ন শিলিগুড়ি-সহ উত্তরবঙ্গের ব্যবসায়ীরা। এর ফলে পর্যটন ব্যবসা কিছুটা হলেও মার খাবে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে। শিলিগুড়ি-সহ উত্তরবঙ্গের যে ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা নিয়মিত নেপালে লেনদেন চালান, তাঁরাও সমস্যায় পড়ার আশঙ্কা করছেন। তাই নেপাল সীমান্তের পানিট্যাঙ্কি ও নকশালবাড়িতে সরকারি তরফে মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্র চালুর দাবি তুলেছে সব সংগঠন।
ফেডারেশন অব চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ, নর্থ বেঙ্গলের (ফোসিন) সম্পাদক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘এর আগে ১০০০ ও ৫০০ টাকার নোট চলত না নেপালে। নোটবন্দির পরে ২০০০, ৫০০ ও ২০০ টাকার নতুন নোট চালু হয়। এগুলি নিয়ে নতুন নির্দেশ না থাকায় নেপালে অনেকেই এই টাকার লেনদেন করছিলেন। এ বার ফের কড়াকড়ি শুরু হওয়ায় সমস্যা বাড়ল।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমরা বহুদিন ধরেই সীমান্তে বিদেশি মুদ্রা বিনিময় কাউন্টার চালুর জন্য নানা স্তরে চিঠি দিয়েছি। ফের পাঠাব।’’
নর্থ বেঙ্গল মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সঞ্জয় টিব্রেয়াল জানান, শিলিগুড়ির অন্তত হাজারখানেক ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ী নেপালে লেনদেন করেন। নেপাল থেকে চা পাতা, দুধ-সহ নানা পণ্য এ দেশে আসে। ভারত থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যও যায়। ফের নতুন বড় মাপের নোটে লেনদেন বাতিল হওয়ায় সকলেই সমস্যায় পড়লেন। তিনি বলেন, ‘‘নেপালের ব্যবসায়ীরাও আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। শীঘ্রই আমরা দু’পক্ষ মিলে বৈঠকে বসব। বিদেশি মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্র চালুর জন্য দরবার করা হবে।’’
হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের উপদেষ্টা রাজ বসু জানান, চলতি শীতের মরসুমে উত্তরবঙ্গ থেকেই অন্তত ২০ হাজার পর্যটকের নেপালে যাওয়ার কথা। তাঁদের মধ্যে মধ্যবিত্ত ও উচ্চ মধ্যবিত্তদের একাংশ নগদ নিয়ে যেতেই অভ্যস্ত। সে ক্ষেত্রে এক এক জন মাথা পিছু ২০ থেকে ৪০ হাজার টাকা নিয়ে যান। ওই পুরো পরিমাণ ১০০ টাকার নোটে নিতে হবে। এক একটি দলে ৪০ জন থাকলে ওই পরিমাণ ১০০ টাকার নোট জোগাড় করা চাট্টিখানি ব্যাপার নয়। রাজ বলেন, ‘‘এখন নেপালে ঢোকার পরে অনেকে ভারতীয় নোট ভাঙিয়ে দেন। কিন্তু, সীমান্ত পেরিয়ে ওই নোট নিয়ে ঢোকাই তো এ বারে বেআইনি। কাজেই সীমান্তেই নোট ভাঙানোর ব্যবস্থা করতে হবে কেন্দ্রকে।’’
এই অবস্থায় ব্যবসায়ীদের একাংশ দার্জিলিঙের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়ার দ্বারস্থ হয়েছেন। পর্যটন ব্যবসায়ীরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও গোটা বিষয়টি জানিয়ে হস্তক্ষেপ চাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy