Advertisement
E-Paper

রাজ্য ভাগ নিয়ে মন্তব্য নয়, নির্দেশ বিজেপির

রাজনৈতিক সূত্রের মতে, পৃথক রাজ্যের দাবি তুলে নানা মন্তব্য আখেরে বিজেপির উপরে কার্যত ‘চেপে বসেছে’। কামতাপুর, গ্রেটার-সহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা বিজেপির উপরে পৃথক রাজ্যের দাবিতে চাপ বাড়াচ্ছেন।

অনির্বাণ রায়

শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২২ ০৮:০৬
গত সপ্তাহে এক ‘ভার্চুয়াল’ বৈঠকে বিজেপি কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনসল-সহ রাজ্যের শীর্ষ নেতাদের অনেকেই ছিলেন।

গত সপ্তাহে এক ‘ভার্চুয়াল’ বৈঠকে বিজেপি কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনসল-সহ রাজ্যের শীর্ষ নেতাদের অনেকেই ছিলেন। প্রতীকী ছবি।

পৃথক রাজ্য প্রসঙ্গে মন্তব্য করা যাবে না—জনপ্রতিনিধি থেকে দলের পদাধিকারীদের নির্দেশ দিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। রাজ্য ভাগের ন্যূনতম প্রসঙ্গ চলে আসে এমন বিষয় নিয়ে নেতাদের বিশেষত উত্তরের নেতাদের মুখে কুলুপ আঁটার নির্দেশ গেরুয়া শিবিরের। সূত্রের দাবি, সম্প্রতি বিজেপি নেতাদের একাংশ যে ভাবে উত্তরবঙ্গকে ভেঙে পৃথক রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠনের পক্ষে সওয়াল করেছেন বা যুক্তি দিয়েছেন তা ভাল ভাবে নেয়নি রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের নেতৃত্বও। সঙ্ঘের মতে এই সব মন্তব্য বিজেপির কাছে ‘শাঁখের করাতে’ পরিণত হয়েছে। দুদিন আগেই পৃথক রাজ্যের দাবিতে গণভোট চেয়ে মন্তব্য করেছিলেন বিজেপির জলপাইগুড়ির সাংসদ জয়ন্ত রায়। নিজের সেই অবস্থান থেকে সরে মঙ্গলবার সাংসদের মন্তব্য, “আমি তো দাবি করিনি। আমি কোনও কথাও বলিনি। কেউ কেউ এই দাবি করতে পারেন, সে কথা বলেছি মাত্র।”

গত সপ্তাহে এক ‘ভার্চুয়াল’ বৈঠকে বিজেপি কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনসল-সহ রাজ্যের শীর্ষ নেতাদের অনেকেই ছিলেন। সম্প্রতি উত্তরবঙ্গকে আলাদা রাজ্য বা অংশবিশেষ কেটে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের প্রসঙ্গে আমলই দেননি বিজেপির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক তথা এ রাজ্যের পর্যবেক্ষক বনসল। আগামী দিনে উত্তরবঙ্গে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল কিংবা আলাদা রাজ্য হতে পারে কি না, জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেছিলেন, ‘‘বলছি তো, এমন কোনও আওয়াজই নেই ওখানে।’’

সূত্রের দাবি, বৈঠকে পৃথক উত্তরবঙ্গ রাজ্যের প্রসঙ্গ ওঠে। তখন দলের দক্ষিণবঙ্গের এক সাংসদ বলেন, “সে দাবি তুললে তো জঙ্গলমহল থেকেও আলাদা হওয়ার দাবি উঠবে।” দলের এক রাজ্য নেতা মন্তব্য করেন, “দক্ষিণবঙ্গে রাজনীতি করাই সমস্যা হয়ে যাবে।” তার পরেই দলের এক কেন্দ্রীয় নেতা রাজ্য ভাগ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে নিষেধ করেন। সে নিষেধই এ বার নির্দেশ হয়ে জেলায় জেলায় পৌঁছছে।

বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার দলের নির্দেশের প্রসঙ্গে বলেন, “আমাদের অবস্থান খুব পরিষ্কার। এবং আমি জোর গলায় আবার বলছি, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বাংলাকে যে ভাবে রেখে গিয়েছেন, আমরা সে ভাবেই বাংলাকে দেখতে চাই।”

রাজনৈতিক সূত্রের মতে, পৃথক রাজ্যের দাবি তুলে নানা মন্তব্য আখেরে বিজেপির উপরে কার্যত ‘চেপে বসেছে’। কামতাপুর, গ্রেটার-সহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা বিজেপির উপরে পৃথক রাজ্যের দাবিতে চাপ বাড়াচ্ছেন। কেপিপির হুঁশিয়ারি, পৃথক রাজ্য গঠন করা না হলে, আগামী দিনে উত্তরবঙ্গে তারা বিজেপিকে সমর্থন করবে না। অন্য দিকে উত্তরবঙ্গকে ভাগ করলে, তার প্রভাব দক্ষিণবঙ্গের সংগঠনের পড়বে সূত্রে কথা মানছেন অনেক বিজেপি নেতা। কেপিপি বা অন্য সব সংগঠনের ‘চাপ-হুমকি’ প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্তের মন্তব্য, “ওদের যদি অত শক্তি থাকত, তবে উত্তরবঙ্গে ওদেরই সাংসদ, বিধায়ক থাকত।”

বিজেপি সূত্রের দাবি, লোকসভা ভোটের আগে অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে আপাতত দলের নেতাদের পৃথক রাজ্যের দাবি না তুলে উত্তরবঙ্গ ‘বঞ্চিত’ এই মর্মে সওয়াল করতে বলা হয়েছে দলের তরফে। দলের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামীর মন্তব্য, “দলীয় নির্দেশ নিয়ে আমি বলার কেউ নই। তবে উত্তরবঙ্গ বঞ্চিতই।”

BJP West Bengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy