শুধু সপরিবারে ভারতে বসবাস নয়, ভোটার তালিকায় নাম তোলা, আধার, রেশন ও প্যান কার্ড তৈরির অভিযোগ উঠল এক বাংলাদেশির বিরুদ্ধে। মেখলিগঞ্জ ব্লকের কুচলিবাড়ি পঞ্চায়েতের আঁখড়া এলাকায় ক্ষিতিশ ঋষি নামে ষাটোর্ধ্ব এক ব্যক্তি সপরিবারে ভারতে বসবাস করছেন। তিনি যে বাংলাদেশি তা-ও স্বীকার করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ক্ষিতিশ ঋষি প্রথমে স্ত্রীকে নিয়ে আঁখড়ায় এসে বসবাস শুরু করেন। পরে ছেলে ও মেয়েকে বাংলাদেশ থেকে নিয়ে আসেন। ২০২৩ সালে ক্ষিতিশ ঋষির নাম ভোটার তালিকায় ওঠে। ২০২৫ সালে তাঁর ছেলে ও মেয়ের নামও ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়। পরিবারের সদস্যদের নামে আধার কার্ড, রেশন কার্ড এবং প্যান কার্ড তৈরি হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা কৃষ্ণকান্ত রায় বলেন, ‘‘বাংলাদেশ থেকে এসে অবৈধ ভাবে বসবাস করছে একটি পরিবার। তারা জাল নথির মাধ্যমে ভোটার তালিকায় ঢুকেছে। প্রশাসনকে লিখিত ভাবে জানানো হলেও কোনও পদক্ষেপকরা হয়নি।’’
রবিবার দুপুরে ক্ষিতিশ ঋষির বাড়িতে দিয়ে দেখা যায়, তিনি পাট শুকনোর কাজে ব্যস্ত। তিনি বাংলাদেশি কি না সেই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “হ্যাঁ, আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি। যখন বাংলাদেশ স্বাধীন হয় তখন আমার বাবা-মা ও শ্বশুর-শাশুড়ি খান সেনাদের (পাকিস্তান সেনা) গুলিতে মারা যান। আমি স্ত্রীকে নিয়ে ভারতে পালিয়ে আসি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘পরে আবার দেশে ফিরে যাই, কিন্তু অত্যাচারের কারণে বেশি দিন থাকতে পারিনি। ছেলেকে নিয়ে আবার ভারতে চলে আসি। হলদিবাড়ি, খামচারহাট-সহ বিভিন্ন জায়গায় কাজ করে সংসার চালাতাম।”
ক্ষিতিশ আরও জানান, দীর্ঘ দিন ধরে ভারতে থাকা সত্ত্বেও তাঁরা সরকারি নাগরিকত্ব পাননি। তবে কয়েক বছর আগে কুচলিবাড়িতে স্থায়ী ভাবে থাকার পর নথিপত্র তৈরি করেছেন। তাঁর দাবি, সেগুলো অবৈধ ভাবে নয়, সরকারি প্রক্রিয়ায় বানানো। তিনি বলেন, “তিন বছর আগে ভোটার কার্ড পেয়েছি। আমরা আর অবৈধ নই।” একাধিকবার চেষ্টা করেও মেখলিগঞ্জ মহকুমা শাসক অতনুকুমার মণ্ডলের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি। ফলে, তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)