প্রতিবেশী দুই গৃহবধূর কাছ থেকে দুই শিশুকন্যাকে উদ্ধারের ঘটনায় কোচবিহারে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার বিকেলে কোচবিহার চাইল্ড ওয়েল ফেয়ার কমিটি ওই শিশু দুটিকে উদ্ধার করে।
এ দিনই শিশু দু’টিকে বাণেশ্বরের একটি দত্তক হোমে পাঠানো হয়েছে। ওই ঘটনায় বাদুরিয়ার মতো শিশু পাচার চক্রের কোনও যোগসূত্র রয়েছে কি না, তা নিয়েও রহস্য দানা বেঁধেছে। কমিটি সূত্রের খবর, উদ্ধার হওয়া শিশুকন্যাদের একজনের বয়স দেড় মাস, অন্য জনের একমাস। কোচবিহার শহর লাগোয়া মহিষবাথান এলাকার বাসিন্দা প্রতিবেশী দুই গৃহবধূ ওই শিশুদের নিজেদের বাড়িতে রেখেছিলেন। বিষয়টি জানতে পেরে কমিটির তরফে খোঁজখবর শুরু হয়। এ দিন বিকেলের মধ্যে কমিটি কাছে শিশু দু’টিকে নিয়ে উপস্থিত হতে নির্দেশ দেওয়া হয়। পুলিশকে বিষয়টি জানান হয়। এ দিন বিকেলে ওই দুই গৃহবধূ শিশুকন্যা দু’টিকে নিয়ে কমিটির কাছে হাজির হন। কমিটি কর্তাদের দাবি, শিশুকন্যা দু’টিকে কী ভাবে তাঁরা পেলেন, সেই প্রশ্নে সন্তোষজনক ব্যাখা না মেলায় শিশুদের তাঁদের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। কোচবিহার জেলা চাইল্ড প্রটেকশন অফিসার স্নেহাশিস চৌধুরী বলেন, “দু’টি শিশুকে কোথা থেকে আনা হয়েছে সে সব প্রশ্নে সদুত্তর মেলেনি। বক্তব্যে নানা অসঙ্গতি রয়েছে। তাই শিশু দু’টিকে কমিটির হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। সব কিছু খতিয়ে দেখেই আইনী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।” কোচবিহারের পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল বলেন, “পুরো বিষয়টি নজরে রয়েছে। বিস্তারিত খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।” কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, মহিষবাথান এলাকার বাসিন্দা ওই দুই গৃহবধূর একজনের দুটি পুত্র সন্তান রয়েছে। অন্যজন নিঃসন্তান। আগেই একটি ছেলে তিনি দত্তক নেন। দু’জনের স্বামী পেশায় ব্যবসায়ী। ওই কমিটির এক কর্তা জানান, গৃহবধূদের একজন কমিটির একটি শিশুকে কখনো তার আত্মীয়ার বলে দাবি করেন। কিন্তু বারবার বলার পরেও তারা ওই আত্মীয়াকে উপস্থিত করতে পারেননি। আবার তিনি নিজে শিশুটিকে একজনের মাধ্যমে নিয়ে এসেছেন বলায় সন্দেহ বেড়েছে। অন্য গৃহবধূ তার ওই প্রতিবেশীর কাছ থেকে শিশুকন্যাটি নিয়েছেন বলে জানান।
পুলিশের একটি সূত্রের অবশ্য দাবি, ওই শিশুদের একজনকে কোচবিহারের একটি নার্সিংহোমের সামনে পরিত্যক্ত অবস্থায় দেখে একজন গৃহবধূ উদ্ধার করেন। একটি নার্সিংহোমে চিকিৎসাও করান। অন্য শিশুটিকে কোথা থেকে আনা হয়েছে, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। তা নিয়ে খোঁজখবর হচ্ছে। সব মিলিয়েই বেশ কিছু প্রশ্নে ধোঁয়াশা রয়েছে। প্রশাসনের কর্তারাও খোঁজখবর নিচ্ছেন।