Advertisement
E-Paper

চার দশকের স্মৃতিই সম্বল, বন্ধ হল ঊর্বশী

সলমন খান অভিনীত ‘বজরঙ্গি ভাইজানে’র এক সপ্তাহ সুপারহিট সপ্তাহ দিয়েই বরাবরের মত বন্ধ হয়ে গেল শিলিগুড়ির চার দশকের অন্যতম পুরানো সিনেমা হল ‘ঊর্বশী’।

কৌশিক চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৫ ০২:৪৫
বন্ধ ঊর্বশীর সামনে কর্মীরা।

বন্ধ ঊর্বশীর সামনে কর্মীরা।

সলমন খান অভিনীত ‘বজরঙ্গি ভাইজানে’র এক সপ্তাহ সুপারহিট সপ্তাহ দিয়েই বরাবরের মত বন্ধ হয়ে গেল শিলিগুড়ির চার দশকের অন্যতম পুরানো সিনেমা হল ‘ঊর্বশী’। গত বৃহস্পতিবার রাত ৭টা’র শো শেষবারের মত চালানো হয়েছে সিনেমা হলটিতে। রাতের মধ্যেই সিনেমা হলের সামনের সমস্ত সিনেমার পোস্টার, ফ্লেক্স নামিয়ে মূল গেটটি লোহার শেকল জড়িয়ে তালা দিয়ে দেওয়া হয়। এই নিয়ে গত এক দশকের মধ্যে স্টেশন ফিডার রোডে থাকা দুটি সিনেমা হলই বন্ধ হয়ে গেল। এর আগে বন্ধ হয়েছে ঊর্বশী থেকে ঢিলছোড়া দূরত্বে থাকা ‘আনন্দলোক’ সিনেমা হলটি। এখন সেখানে লজ হয়েছে।

ঊর্বশীর মালিকপক্ষের দাবি, গত ৩-৪ বছর ধরে একেবারেই লোকসানে চলছিল হলটি। মাল্টিপ্লেেক্সর যুগে রক্ষনাবেক্ষণের খরচ, কর্মীদের বেতন দিয়ে বিরাট হলটি চালানো আর সম্ভব হচ্ছিল না। তাই কর্মীদের বকেয়া বুঝিয়ে দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হল সিনেমা হলটি। আগামী দিনে শহরের বহু বাসিন্দার স্মৃতি জড়ানো ঊর্বশীকে ভেঙে বাণিজ্যিক ভবন তৈরি করে সেখানে মাল্টিপ্লেক্সের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে‌ছেন হলের মালিক সন্দীপ হরলালকা। তিনি বলেন, ‘‘বিরাট হলটি এখন রক্ষনাবেক্ষণ করাই মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর লোকসান টানতে পারছি না। ওখানে বাণিজ্যিক ভবন করে তার মধ্যে একটি সিঙ্গেল প্লেক্স তৈরির ভাবনা রয়েছে।’’


বন্ধ ঊর্বশী সিনেমা হল শিলিগুড়িতে

যদিও কর্মীদের দাবি, মালিকপক্ষ চুক্তি মত চেক দিলেও তা এখনও ভাঙানো যায়নি। আগামী বুধবারের মধ্যে মালিকপক্ষ টাকা মিটে যাবে বলে জানিয়েছেন। হল সূত্রের খবর, কর্মী পিছু ১ লক্ষ থেকে ৩ লক্ষ ২৫ হাজার টাকার চেক দিয়ে দিয়ে হল বন্ধ করেছেন মালিক। হলের দীর্ঘদিনের বুকিং স্টাফ দীপক পাল, জেনারেটর স্টাফ প্রদীপ রায় জানান, তাঁদের আর হলে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘‘চেক ভাঙানো যায়নি। বুধবার টাকা মিলবে বলে মালিকপক্ষ জানিয়েছে। টাকা না পেলে কী করব জানি না।’’

৭০-এর দশকে সন্দীপবাবুর পারিবারিক সংস্থা ওই সিনেমা হলটি তৈরি করে। এ ছাড়াও তাঁদের মহাবীরস্থানে নিউ সিনেমাহলও রয়েছে। বর্তমানে সেটি অংশীদারি ব্যবসার মধ্যে দিয়ে চলছে। ঊর্বশীর আসনের সংখ্যা শেষ অবধি ছিল ১৩৮৫টি। হল সূত্রের খবর, তার মধ্যে একটি অংশের আসন বসার উপযুক্ত ছিল না। পর্দা, আওয়াজের অবস্থায় খারাপ হয়েছিল। এ ছাড়া শৌচাগার এবং করিডরগুলির সংস্কারের অভাবে দিনের পর দিন খারাপ হয়। ভবনের কয়েকটি জায়গা সংস্কারের অভাবে বিপজ্জনক হয়ে গিয়েছে অভিযোগ।

সব মিলিয়ে আপাতত হলটিতে ৮ জন স্থায়ী এবং ৩ জন অস্থায়ী কর্মী ছিলেন। তাঁদের অনেকেই এদিন জানান, টিকিটের দর কম থাকায় যে শ্রেণির দর্শক হলটিতে আসত তাতে প্রতি সপ্তাহেই ১০-১৫টি চেয়ার ভাঙত। আবার তিনটি শো মিলিয়ে খুব জনপ্রিয় সিনেমা হলে ৩০০ বেশি দশর্ক হয়নি।। মালিক সন্দীপবাবু জানান, এখন ১৫০-২০০ আসনের একটি স্ক্রিনে ভাল ব্যবসা হচ্ছে। কর্মীদের বকেয়া মিটিয়েছি। সবাই কয়েকদিনের মধ্যে টাকা পেয়ে যাবেন।

ইস্টার্ন ইন্ডিয়া মোশন পিকচার্স রিপ্রেজেনটেটিভ অ্যাসোসিয়েশনের উত্তরবঙ্গ জোনের সম্পাদক তিলক গুন জানান, ‘‘বড় সিনেমা হল চালানো এখন ঝক্কির ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। ব্যবসা হোক না হোক ড্রিস্ট্রিবিউটারদের চাহিদা মত টাকা না দিলে তাঁরা ছবি দিচ্ছেন না। তাই হল মালিকেরা বড় ছোট হলের দিকে ঝুঁকছেন।’’

—নিজস্ব চিত্র।

Siliguri Cinema hall koushik sarkar north bengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy