E-Paper

‘নদী বন্ধনে’ কোথায় কত বরাদ্দ স্পষ্ট নয়

মালদহ জেলায় নদী ভাঙন একটি জ্বলন্ত সমস্যা। জেলায় প্রায় ৮০ কিলোমিটার এলাকা দিয়ে বয়ে যাওয়া গঙ্গা নদীর ভাঙনে ফি বছর জেরবার বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারা।

জয়ন্ত সেন 

শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৯:৪৬
নদী ভাঙন।

নদী ভাঙন। —ফাইল চিত্র।

এ বারের রাজ্য বাজেটে ‘নদী বন্ধন’ নামে নতুন প্রকল্পের ঘোষণা করা হল। এই প্রকল্পে ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে নদীর ভাঙন রোধে পদক্ষেপ করা হবে বলে রাজ্য সরকারের তরফে ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু ভাঙন কবলিত মালদহ জেলায় ওই প্রকল্পে কত টাকা খরচ করা হবে, তা বাজেটে স্পষ্ট করা হয়নি। ফলে মালদহ জেলায় ভাঙন ঠেকাতে আদৌ কত টাকা খরচ হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। এই জেলায় গঙ্গা, ফুলহার, মহানন্দা-সহ একাধিক নদীতে যে হারে ভাঙন হয়, তা ঠিকঠাক ঠেকাতেই বাজেটের ওই টাকা খরচ হয়ে যাবে।

তবে বাকি জেলাগুলিতে কী হবে?

উত্তরবঙ্গে দক্ষিণ দিনাজপুরের আত্রেয়ী নদী, উত্তর দিনাজপুরে শ্রীমতী ও কুলিক নদী, কোচবিহারে তোর্ষা, জলঢাকা, রায়ডাক, আলিপুরদুয়ারে কালজানি, জলপাইগুড়িতে তিস্তা, জলঢাকা নদীতেও ভাঙন রয়েছে। কোন এলাকায় ওই প্রকল্পে কত বরাদ্দ দেওয়া হবে, তা স্পষ্ট কী ভাবে হবে?

মালদহ জেলায় নদী ভাঙন একটি জ্বলন্ত সমস্যা। জেলায় প্রায় ৮০ কিলোমিটার এলাকা দিয়ে বয়ে যাওয়া গঙ্গা নদীর ভাঙনে ফি বছর জেরবার বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারা। গত বছরেও ভাঙনেও ভিটেমাটি হারিয়েছেন শতাধিক বাসিন্দা। আবার ভাঙনের আগ্রাসনে নদীপারের বাসিন্দাদের অনেকে নিজেরাই ঘরবাড়ি ভেঙে সরিয়ে নিয়েছেন। এ বার বাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে জল ঢুকে দু’দফায় বন্যা হয়েছে মানিকচক ব্লকের ভূতনিতে। আবার মাসখানেকের বেশি সময় ভূতনির তিনটি পঞ্চায়েত এলাকায় জল দাঁড়িয়ে থাকায়, সেই জল বার করতে আর এক দিকের বাঁধের একাংশ কেটে ফেলতে হয়। ওই দুই জায়গার ভাঙা অংশ জোড়া দিতে কয়েক কোটি টাকার দরকার রয়েছে।

গত মরসুমে রতুয়া ১ ব্লকের মহানন্দাটোলা পঞ্চায়েত এলাকার বিস্তীর্ণ অংশে ভয়াবহ গঙ্গা ভাঙন হয়েছে। সেখানে এমন পরিস্থিতি হয়ে রয়েছে যে, গঙ্গাকে যদি ঠেকানো না যায় তবে ফুলহার নদীর সঙ্গে মিশে যাওয়ার একটা আশঙ্কা রয়েছে। ফলে সেখানেও কাজ করতে গেলে কয়েক কোটি টাকার প্রয়োজন। কালিয়াচক ৩ ব্লকের পারলালপুর থেকে গোলাপ মণ্ডলপাড়া পর্যন্ত অংশে গঙ্গা নদীর ভাঙন অব্যাহত। পারলালপুরে ঐতিহ্যবাহী রাধাগোবিন্দ মন্দিরের একাংশ গঙ্গার গ্রাসে চলে গিয়েছে। সেই মন্দির রক্ষা করাও একটা চ্যালেঞ্জের বিষয় এবং সেখানেও বড় আর্থিক বোঝা রয়েছে।

জেলার ৪৮ কিলোমিটার এলাকায় প্রবাহিত ফুলহার নদীরও ভাঙন রয়েছে। এ ছাড়া মহানন্দা, টাঙন ও পুর্নভবার মতো নদীগুলিতে কিছু ভাঙন আছে। যত দূর খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, গত মরসুমে সেচ দফতরের মালদহ ও মহানন্দা ডিভিশন মিলিয়ে প্রায় ৫০ কোটি টাকা ভাঙন প্রতিরোধের কাজে খরচ করেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু তার পরেও ভাঙন ঠেকানো যায়নি। ফলে রাজ্য বাজেটে ‘নদী বন্ধন’ প্রকল্পে বরাদ্দ ২০০ কোটি টাকার মধ্যে কত টাকা বাস্তবে মালদহ জেলার জন্য খরচ হবে, তা নিয়েই প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যাচ্ছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Malda River Erosion

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy