Advertisement
E-Paper

ব্রিগেড প্রস্তুতির প্রতিযোগিতা

সকালে এক দলের সভার পর বিকেলে একই জায়গায় সভা করল অন্য দলের। ব্রিগেড সভার প্রস্তুতিকে ঘিরে তৃণমূলের দুই শিবিরে রীতিমতন শুরু হয়েছে প্রতিযোগিতা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০১৯ ০৪:৪৭
বালুরঘাটে তৃণমূলের সভায় চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। রয়েছেন অর্পিতা ঘোষ, শঙ্কর চক্রবর্তী ও জেলা নেতৃত্ব। নিজস্ব চিত্র

বালুরঘাটে তৃণমূলের সভায় চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। রয়েছেন অর্পিতা ঘোষ, শঙ্কর চক্রবর্তী ও জেলা নেতৃত্ব। নিজস্ব চিত্র

সকালে এক দলের সভার পর বিকেলে একই জায়গায় সভা করল অন্য দলের। ব্রিগেড সভার প্রস্তুতিকে ঘিরে তৃণমূলের দুই শিবিরে রীতিমতন শুরু হয়েছে প্রতিযোগিতা। একদিকে বিধায়ক গোষ্ঠী, অন্য দিকে রয়েছে ব্লক সভাপতির গোষ্ঠী। আর এই দুই শিবিরের প্রতিযোগিতাকে ঘিরে তৃণমূলের অন্দরের কলহ প্রকাশ্য এসেছে। করণদিঘি ব্লকে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে এ সব কথা। তৃণমূল সূত্রে পাওয়া খবরে, উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘি ব্লকে দলের এ ছবি নিয়ে বিব্রত দলের নীচুতলার কর্মীরাও।

সূত্রের খবর, একদিকে বিধায়ক মনোদেব সিংহ তাঁর লোকজন সভা করছেন ব্রিগেড সভাকে ঘিরে। আবার একই জায়গায় ব্রিগেড নিয়ে প্রস্তুতি সভা করছেন দলের ব্লক সভাপতি সুভাষ সিংহও।

বিধায়কের সভায় দেখা যায় না ব্লক সভাপতির লোকজন। আবার ব্লক সভাপতির সভায় হাজির হচ্ছেন না বিধায়কের লোকজন। শুধু তাই নয়, সূত্রের খবর, দুই শিবিরের তরফেই বিরোধী দল থেকে কে বেশি লোক ভাঙিয়ে আনতে পারে, তা নিয়েও শুরু হয়েছে দৌড়।

করণদিঘির এক বাসিন্দা জানান, ব্রিগেড প্রস্তুতি নিয়ে দুই শিবিরের মধ্যে যা চলছে, তা নির্বাচনী প্রচারের মতোই। গত সাত দিনে দুই শিবির থেকেই বিভিন্ন বিরোধী দল থেকে কয়েক জন সদস্যদের ভাঙিয়ে আনা হয়েছে তৃণমূলের পতাকার তলায়। জেলার তৃণমূলের কাছে এই খবর পৌঁছে গিয়েছে। জেলার নেতৃত্ব বিরোধ ভুলে এক সঙ্গে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন। তাতে যদিও দুই শিবিরের চাপানউতোর কমছে না বলেই খবর।

ব্লক সভাপতি সুভাষ সিংহের দাবি, ব্রিগেড প্রস্ততি সভা নিয়ে দলের একটি কর্মসূচির তালিকা করা হয়। সেই তালিকা বিধায়ককে পাঠানো হলে তিনি তা গ্রহণ করেননি। তিনি বলেন, ‘‘একই জায়গায় দু’বার সভা হয়ে যাচ্ছে। তাই পরে সভার জায়গা আলাদা করে ভাগ করে নেওয়া হয়।’’

অন্য দিকে বিধায়ক মনোদেব সিংহের দাবি, ‘‘একজন বিধায়ক হিসেবে দলের যারা ডাকছেন, সেখানে যাচ্ছি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘তৃণমূলের শাখা সংগঠনগুলির আমন্ত্রণে যাচ্ছি। বিরোধের কিছু নেই।’’

যদিও অন্দরের খবর, করণদিঘি ব্লকের তৃণমূল সভাপতির শিবিরে আছেন যুব তৃণমূলের সভাপতি মহম্মদ আজাদ, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কামরুজ্জামান। আর বিধায়কের সঙ্গে রয়েছেন পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি স্যামুয়েল মার্ডি, সংখ্যালঘু সেল, আদিবাসি-তফসিলি জাতির সংগঠন।

উত্তর দিনাজপুরের তৃণমূলের জেলা কমিটির সদস্য জাভেদ আখতার বলেন, ‘‘করণদিঘিতে এক সঙ্গে সকলে মিলে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’

মঞ্চে অর্পিতা, হাজির শঙ্করও : ব্রিগেড সমাবেশের আগে দলীয় কর্মীদের উজ্জীবিত করতে তৃণমূল শনিবার বালুরঘাটে একটি সমাবেশের ডাক দেয়। জেলার পর্যবেক্ষক পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে সভার প্রধান বক্তা হিসেবে সামনে রেখে কয়েক দিন ধরে জেলাজুড়ে ব্যাপক প্রচার চলেছিল। কিন্তু শুক্রবারই খবর পৌঁছে যায় ফিরহাদ সভায় আসছেন না। সে খবর ব্লকের কর্মী-সমর্থকদের কাছেও পৌঁছে যাওয়ায় জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রের নেতৃত্বে আয়োজিত ওই সভায় লোক না হওয়ার সম্ভাবনা শুক্রবার রাতে তৈরি হয় বলে দল সূত্রে খবর। কিন্তু এক মঞ্চে জেলার সমস্ত নেতা হাজির হওয়ায় জনসমাগম এ দিন ভালই হয়। যদিও জেলা বিজেপি সভাপতি নীলাঞ্জন রায় দাবি করেন, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে সভায় লোক হয়নি। এ দিন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন জেলার সাংসদ অর্পিতা ঘোষ, প্রতিমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা, প্রাক্তন মন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তীও।

মূল বক্তা চন্দ্রিমা ভাষণে দাবি করেন, ‘‘স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে আমরা বলতে পারি তাঁর বাণীকে তুচ্ছ করে যারা রথ চালাতে চেয়েছিল, তাদের রথ আজও চলেনি। ব্যাটারি ডাউন হয়ে গিয়েছে রথের।’’ সভায় বিপ্লব অভিযোগ করেন, বিগ্রেডে দলীয় কর্মীরা যাতে যেতে না পারেন, তার জন্য চক্রান্ত করে বালুরঘাট থেকে গৌড় লিঙ্কের সাধারণ প্যাসেঞ্জার কামরা, মালদহগামী ডেমু এবং ইন্টারসিটি ট্রেন চলাচল বন্ধ করে রাখা হয়েছে।

নীলাঞ্জন বলেন, ‘‘তৃণমূল নিজেদের ছত্রভঙ্গ ঘর আগে সামলাক।’’

Meeting Brigade TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy