উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদ ব্লক তৃণমূল সভাপতি বদলকে কেন্দ্র করে দলের বিদায়ী ব্লক সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় দত্তের গোষ্ঠীর সঙ্গে জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্যের গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে এসেছে। সোমবার রাতে অমলবাবু মৃত্যুঞ্জয়বাবুকে হেমতাবাদ ব্লক তৃণমূল সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ প্রফুল্ল বর্মনকে দায়িত্ব দেন।
মঙ্গলবার সকালে হেমতাবাদের দলীয় কার্যালয়ে অনুগামীদের নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন মৃত্যুঞ্জয়বাবু ও তাঁর স্ত্রী সবিতা ক্ষেত্রী। সবিতাদেবী গত বিধানসভা নির্বাচনে হেমতাবাদে তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন। এ দিন মৃত্যুঞ্জয়বাবু ও সবিতাদেবী, অমলবাবুর বিরুদ্ধে এলাকার বেকার যুবকদের কাছ থেকে প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরির টোপ দিয়ে টাকা তোলার অভিযোগ তোলেন। এ দিন সন্ধ্যায় স্ত্রী সবিতাদেবীকে নিয়ে রায়গঞ্জ থেকে রাধিকাপুর এক্সপ্রেস ট্রেনে চেপে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন মৃত্যুঞ্জয়বাবু। তিনি বলেন, ‘‘নিজের একক সিদ্ধান্তে অমলবাবু আমাকে ব্লক সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে অমলবাবুর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানাতে কলকাতায় যাচ্ছি।’’
অমলবাবুর পাল্টা অভিযোগ, ‘‘মৃত্যুঞ্জয়বাবু দীর্ঘদিন ধরে অনুগামীদের নিয়ে হেমতাবাদের বিভিন্ন এলাকায় দাদাগিরি করে সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা তোলা আদায় করেছেন। তাঁকে সতর্ক করেও কোনও লাভ হয়নি। তাই দলের ভাবমূর্তি রক্ষার স্বার্থে তাঁকে ব্লক সভাপতির পদ থেকে সরানো হল। পদ হারিয়ে উনি আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছেন।’’
মৃত্যুঞ্জয়বাবুর পাল্টা দাবি, ‘‘অমলবাবু টাকা ছাড়া কাউকে দলীয় পদে বসান না। শীঘ্রই উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ রাজ্য নেতৃত্বের হাতে তুলে দেব।’’
মৃত্যুঞ্জয়বাবু ও সবিতাদেবী অভিযোগ করেন, বিধানসভা নির্বাচনের সময় নির্বাচনী প্রচারের খরচের জন্য সবিতাদেবীকে ২৫ লক্ষ টাকা দেন রাজ্য নেতৃত্ব। কিন্তু আগাম শর্ত অনুযায়ী সবিতাদেবীকে প্রার্থী করার বিনিময়ে অমলবাবু সেই টাকা থেকে ১৭ লক্ষ টাকা নেন। ফলে টাকার অভাবে সর্বত্র প্রচার না হওয়ায় তিনি নির্বাচনে পরাজিত হন। নির্বাচনে হারের পর অমলবাবু দলীয় ও সরকার মনোনীত বিভিন্ন পদে বসানোর আশ্বাস দিয়ে এত দিন মুখ বন্ধ রাখতে বাধ্য করেছিলেন বলেও তাঁদের অভিযোগ। সবিতাদেবী বলেন, ‘‘দলে একচ্ছত্র ক্ষমতা ধরে রাখতে অমলবাবু অন্তর্ঘাত করে আমাকে হারিয়েছেন। এখন স্বামীরও পদ কেড়ে নিলেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy