‘ইন্টিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট অব স্মল অ্যান্ড মিডিয়াম টাউন’ (আইডিএসএমটি) প্রকল্পে শিলিগুড়ি পুরসভার উদ্যোগে বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল ২০০০ সাল নাগাদ। ছয় তলা বাণিজ্যিক ভবন তৈরি করে আর্থিক উন্নয়নের ব্যবস্থা করাই কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে ওই প্রকল্পের লক্ষ্য ছিল। বামফ্রন্ট আমলে দুই তলা নির্মাণের পরে মাঝপথে জমির মালিকানা দাবি করে এক ব্যক্তি মামলা করেন। তার জেরে আটকে যায় নির্মাণকাজ। সেই থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে বর্তমান পরিস্থিতিতে কয়েকশো কোটি টাকার ওই জমি এবং অসমাপ্ত নির্মাণ।
২০০৯ সালে কংগ্রেস পুরবোর্ডে ক্ষমতায় এলে তারা বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ওই জায়গায় ‘পিপিপি’ মেডেলে স্বাস্থ্য পরিষেবার পরিকাঠামো গড়তে চায়। কথাবার্তাও এগোয়। মামলাকারীর তরফে জমির জন্য টাকা দাবি করা হয়েছিল। তবে পুরসভা কর্তৃপক্ষ তা দিতে চাননি বলে অভিযোগ। ফলে সেই চেষ্টাও মাঝপথে থমকে পড়ে। শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব বলেন, ‘‘ওই সম্পত্তি নিয়ে মামলা চলছে। তা মিটলে বিষয়টি দেখব।’’
পুরসভার একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, সেবক রোডের চেকপোস্টের আগের মোড়ে ৬ বিঘারও বেশি জায়গা রয়েছে। প্রাক্তন মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত বলেন, ‘‘জমি নিয়ে মামলা ছিল। আমরা সেখানে বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে স্বাস্থ্য পরিষেবার ব্যবস্থা গড়তে চেয়েছিলাম। কিন্তু মালিকানা নিয়ে যে মামলা ছিল, সেটা মেটানো যায়নি। মধ্যস্থতার জন্য কথা বলা হয়েছিল। তবে কাজ হয়নি।’’
বর্তমানে শিলিগুড়ি পুরসভার সিপিএমের পরিষদীয় নেতা মুন্সি নুরুল ইসলামের দাবি, তাঁরা সেখানে বাণিজ্যিক ভবন গড়ে হকারদের পুনর্বাসন দিতে চেয়েছিলেন। সেই সঙ্গে প্রকল্পের পরিকল্পনা মতো ব্যাঙ্কেয়েট হল, কাফেটেরিয়া-সহ বাণিজ্যিক ব্যবহারের জায়গা করারও কথা ছিল। উপরের তলায় হাউজ়িং কমপ্লেস গড়ে তা বিক্রি করারও কথা ছিল। তা থেকে যে আয় হত, তা সামাজিক প্রকল্পে খরচ করাই ছিল পরিকল্পনার উদ্দেশ্য। সেই জমির আরও এক জন মালিকানা দাবি করেন নথিপত্র দেখিয়ে। নুরুল ইসলাম বলেন, ‘‘কী ভাবে ওই জমির নথিপত্র বেরিয়েছে জানা নেই। মাঝপথে কাজ বন্ধ হয়ে যায়।’’ সেই থেকে ওই অবস্থায় পড়ে রয়েছে অসমাপ্ত ভবন এবং জায়গাটি।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)