Advertisement
E-Paper

ত্রিপলের তলাতেই আক্রান্তর রাত কাটল

প্রতিবেশীরা জানান, ওই মহিলার পাশের বাড়ি বলে তাঁদেরও মুদির দোকানে জিনিস দিতে অস্বীকার করছেন বিক্রেতা।

অভিজিৎ সাহা

শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০২০ ০৫:৫৮
ঠাঁই নাই: অসমাপ্ত বাড়িতে ছেলেকে নিয়ে মহিলা। নিজস্ব চিত্র

ঠাঁই নাই: অসমাপ্ত বাড়িতে ছেলেকে নিয়ে মহিলা। নিজস্ব চিত্র

ত্রিপল মাথায় কেটেছে বৃষ্টির রাত। সকাল থেকে চড়চড়ে রোদেও দুই নাবালক ছেলেকে নিয়ে ভরসা সেই ত্রিপলটুকুই। এ ভাবে ২৪ ঘণ্টা কাটলেও কোভিড হাসপাতাল বা সেফ হোমে ঠাঁই পেলেন না করোনা সংক্রমিত এক মহিলা। আর তাঁর প্রতিবেশীরা জানান, ওই মহিলার পাশের বাড়ি বলে তাঁদেরও মুদির দোকানে জিনিস দিতে অস্বীকার করছেন বিক্রেতা। অথচ পুরসভার কোনও হুঁশই নেই, বলছেন তাঁরা।

বুধবার দুপুরে অমানবিকতার এমনই ছবি দেখা গেল পুরাতন মালদহের সামুন্ডায় কলোনি এলাকায়। পুরসভা, প্রশাসনের এই ভূমিকায় সরব বাসিন্দাদের একাংশের ক্ষোভ, শুধু রিপোর্ট দিয়েই কী দায়িত্ব শেষ হয়ে যায়! তাঁর চিকিৎসার দায়িত্ব কার, প্রশ্ন তাঁদের। পরে এ দিন বিকেলের পর তাঁকে সেফ হোমে পাঠানো হয়।

সামুন্ডায় কলোনিরই বাসিন্দা, পেশায় পরিচারিকা ওই মহিলা আট ও বারো বছরের ছেলেকে নিয়ে একাই থাকেন। তাঁর স্বামী বহুদিন আগেই ঘর ছেড়েছেন। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পে মহিলাকে ঘর দেয় পুরসভা। প্রকল্পের প্রথম কিস্তির ৫০ হাজার টাকায় বাড়ি তৈরি শুরু হলেও কাজ এখনও শেষ হয়নি। তাই এখন তিনি ছেলেদের নিয়ে এক পড়শির বাড়ির বারান্দায় থাকতেন। চারদিন আগে তিনি জ্বরে আক্রান্ত হন। এরপরেই তিনি পুরাতন মালদহের মৌলপুর গ্রামীণ হাসপাতালে গিয়ে করোনা পরীক্ষা করান। মঙ্গলবার দুপুরে তাঁর রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে।

তারপরই ছেলেদের নিয়ে তিনি নিজের ভিটেতেই আশ্রয় নেন। সন্ধের পর তাঁদের এলাকারই এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তবে স্থানীয়দের একাংশ তাঁদের স্কুলে থাকতে আপত্তি জানান। ফলে ফের নিজের জমিতেই ফেরেন তিনি। রাতভর ছিলেন খোলা আকাশের নীচে। এ দিন সকালেও ব্যবস্থা করা হয়নি। মহিলা বলেন, ‘‘রাতে ঝিরঝিরে বৃষ্টি হল। মাথায় ত্রিপল নিয়ে বসেছিলাম। সকাল থেকে আবার চড়া রোদ। কিন্তু পুরসভা, প্রশাসনের দেখা মেলেনি। প্রতিবেশীরাই খাবার দিয়ে সাহায্য করেছেন।’’

ওই ওয়ার্ডের কো-অডিনেটর তৃণমূলের শঙ্কু সিংহ বলেন, ‘‘সংক্রামিত হওয়ার বিষয়টি বিকেলে জানতে পারি। তারপরই স্কুলে থাকার ব্যবস্থা করা হচ্ছিল। তবে এলাকাবাসীদের একাংশের বিরোধিতায় সেটা করা যায়নি। এ দিন প্রশাসনের সহযোগিতায় মহিলা ও তাঁর আট বছরের ছেলেকে ইংরেজবাজারের সেফ হোমে পাঠানো হয়েছে। আর বড় ছেলেকে অন্যত্র রাখা হয়েছে।’’

মালদহের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভূষণ চক্রবতী বলেন, ‘‘এমন হওয়ার কথা নয়। রিপোর্ট আসার পরেই সংক্রমিতদের জানিয়ে দেওয়া হয়। পুরাতন মালদহের ক্ষেত্রে ঠিক কী হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

Coronavirus in West Bengal COVID-19 Old Malda
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy