শহরের গরিব, নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত ভোট ব্যাঙ্ক ধরে রাখতে পুরকর ছাড় দেওয়া তো বটেই, নির্দিষ্ট পরিমাণ পানীয় জল নিখরচায় সরবরাহের আশ্বাসও উঠে এল বামফ্রন্টের ইস্তাহারে। বুধবার জেলা সিপিএম দফতরে আয়োজিত সাংবাদিক বৈঠকে জলপাইগুড়ি পুরভোটের ইস্তেহার প্রকাশ করেন জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক সলিল আচার্য।
শাসকদলের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক আক্রমণ তীব্র করতে বামফ্রন্ট নেতৃত্ব নাম না করে পুরসভার বিদায়ী চেয়ারম্যান মোহন বসুর সঙ্গে বর্তমান জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায়ের অতীত লড়াইকেও ইস্তেহারে হাতিয়ার করেছেন। বলা হয়েছে, পুরসভার এক সময়ের সহযোদ্ধা প্রাক্তন কাউন্সিলার (সৈকতবাবু) শাসক দলে যোগ দিয়ে চেয়ারম্যানের (মোহনবাবু) বিরুদ্ধে কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগ তুলে প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দেন। চেয়ারম্যানকে জেলে ঢুকতে হবে বলে হুমকি ছিল তাঁর। কিছুদিন আগে তৃণমূলে যোগ দেন চেয়ারম্যান। এখন তাঁর সঙ্গে হাত মিলিয়ে নির্বাচনের ময়দানে প্রাক্তন কাউন্সিলার। এর পরেই ইস্তেহারে বামফ্রন্টের কটাক্ষ ‘এহেন চরিত্রের ব্যক্তি এবারের নির্বাচনে প্রার্থী!’
বামফ্রন্টের আক্রমণ ফিরিয়ে দিয়ে পুরসভার বিদায়ী চেয়ারম্যান মোহন বসু বলেন, “রাজনীতিতে অনেক উল্টো ঘটনাও ঘটে। যারা উন্নয়ন নিয়ে মাথা ঘামাতে চায় না তাঁরা এভাবে পুরনো ঘটনা নিয়ে চর্চা করে সময় কাটাতে পছন্দ করেন। আমরা শহরকে পাল্টে দিতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। ওই প্রত্যয় নিয়ে লড়াইয়ের ময়দানে। তাই পরনিন্দা না করে উন্নয়নের কথা বলছি।” জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বামফ্রন্ট কোমায় চলে গিয়েছে। ওঁদের নিয়ে শব্দ খরচের মানে নেই।” যদিও জেলা বামফ্রন্ট আহ্বায়ক বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ‘‘ইতিবাচক কথা এবার নির্বাচনী প্রচারে থাকবে। রাজনৈতিক আক্রমণের পাশাপাশি বামফ্রন্ট শহর উন্নয়নের বিষয়ে কি ভাবছে সেটাও তুলে ধরা হবে।’’
শহরবাসীর মন ছুঁয়ে যেতে বামফ্রন্টের ইস্তাহার জুড়ে রয়েছে ২০১০ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত নাগরিক পরিষেবার নানা সমস্যার কথা। অভিযোগ করা হয়েছে, চা নিলাম কেন্দ্র যে শহরের অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাইলস্টোন হতে পারে সেটা বিগত পুর কর্তারা ভাবনায় আনতে পারেনি। যে কারণে চা নিলাম কেন্দ্র ধুঁকতে থাকলেও তাঁরা আন্দোলন গড়ে তোলার কথা বলার সাহস দেখাতে পারেনি। কংগ্রেস ভেঙে তৃণমূল বোর্ড দখলের পরে পুরসভা ‘ঠিকাদারদের মৃগয়াক্ষেত্রে পরিণত’ হয় বলে ইস্তাহারে বামফ্রন্টের কটাক্ষ। তাঁদের অভিযোগ, গোটা শহর ডাম্পিং গ্রাউণ্ডে পরিণত হয়েছে। চলছে শুয়োরের চাষ। তাঁদের আশ্বাস, ক্ষমতায় এলে বামফ্রন্ট পুরসভাকে কর্পোরেশনে উন্নীত করে অত্যাধুনিক শহর গড়ে তুলবে। শহরকে যানজট মুক্ত করা হবে, করলা নদী রক্ষার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বামফ্রন্টের ওই আশ্বাসকে উপহাস করেছেন পুরসভার বিদায়ী চেয়ারম্যান। মোহনবাবুর কথায়, ‘‘ওঁরা দীর্ঘদিন পুরসভার ক্ষমতায় ছিলেন। তখন কেন ওই সমস্ত সমস্যা সমাধানের কথা মাথায় আসেনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy