Advertisement
২৪ মার্চ ২০২৩

ভরসা পেয়ে উঠছে ঝাঁপ

পানিঘাটা, মিরিকের পর কার্শিয়াঙের গাড়িধুরা। বুধবার সকালে তৃণমূল জেলা সভাপতি তথা পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব এলাকায় শান্তি মিছিল করেন।

ভিড়: দোকান খুলতেই ভিড় করেছেন বাসিন্দারা। নিজস্ব চিত্র

ভিড়: দোকান খুলতেই ভিড় করেছেন বাসিন্দারা। নিজস্ব চিত্র

কৌশিক চৌধুরী
গাড়িধুরা (কার্শিয়াং) শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:৫২
Share: Save:

ভয় ভীতির আতঙ্ক কাটিয়ে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার চেষ্টা করছেন পাহাড়বাসী।

Advertisement

পানিঘাটা, মিরিকের পর কার্শিয়াঙের গাড়িধুরা। বুধবার সকালে তৃণমূল জেলা সভাপতি তথা পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব এলাকায় শান্তি মিছিল করেন। তার পরে স্টেশনারি থেকে হোটেল, মিষ্টির দোকান, মোবাইলের দোকান পরপর খুলতে থাকে। মিছিলে দলীয় পতাকা, ব্যানার ছিল না। বন্‌ধকে উপেক্ষা করে শুধু দোকানপাট খুলল না, ক্ষোভ উগরে শাসক দলে নাম লেখালেন মোর্চার একাংশ নেতা-কর্মীরাও।

রোহিণী, শিমূলবাড়ি, লংভিউ, ম্যারিয়নবাড়ি থেকে শ্রমিকেরা সকালে গাড়িধুরায় আসেন। তাঁরা প্রশ্ন তোলেন, ‘‘বন্‌ধ করে কী লাভ হচ্ছে! ঘরের টাকা পয়সা শেষ। দেনা করে চলছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিত করতে শান্তি মিছিলে এসেছি।’’ এক হোটেল মালিক জানান, অনেক পর দোকান পরিস্কার করে খুললাম। টাকা পয়সা তো সব শেষ। আর বন্ধ করছি না।’’ জুতোর দোকানদার জানালেন, ‘‘কয়েকদিন ধরে সাহস করে অর্ধেক সাটার খুলেছিলাম। আজ থেকে পুরো খুলে দিলাম। খেয়ে বাঁচলে তো আন্দোলন।’’ এক মোবাইলের রিচার্জের দোকানদার জানান, কোম্পানিকে টাকা দিতে পারিনি। বাসিন্দাদের কাছে টাকা পাব। দোকান না খুললে তো কেউ টাকা দেবে না।

বন্‌ধে ক্ষুব্ধ মোর্চা থেকে ছেড়ে তৃণমূলে আসা কর্মীরাও। তাঁরা স্পষ্টই বললেন, ‘‘এলাকায় পাথর, বাঁশ ফেলে রাস্তা আটকে, পিকেটিং করে, আন্দোলন করে কী পেলাম! নেতারা তো বিদেশে না কি বাড়ি ঘর রয়েছে। আমরাই পরিবার নিয়ে না খেয়ে মরছি। আর মোর্চা করছি না।’’

Advertisement

গত ৮ জুন থেকে অস্থিরতা শুরুর পরে প্রথমবার রাজ্যের কোনও মন্ত্রী পাহাড়ি এলাকায় গেলেন। এ দিন ১৫০টি চা শ্রমিক পরিবারের হাতে চাল, আটার বস্তা তুলে দেন মন্ত্রী। আদলপুরেও সকাল থেকেই দোকানপাট খোলে। কোথাও কোনও মোর্চা নেতা-কর্মীদের দেখা মেলেনি। পুলিশ গোটা এলাকায় ছেয়ে ছিল। কিছুদিন আগেও এলাকায় রাস্তায় বসে দিনভর পিকেটিং করতে দেখা গিয়েছে মোর্চা কর্মীদের। অনুষ্ঠানের মাঝেই সুকনা থেকে এসে তৃণমূলে নাম লেখান নারী মোর্চার দুই নেত্রী। মন্ত্রী গৌতমবাবু বললেন, ‘‘আমরা স্থানীয়দের পাশে থেকে ভরসা দিচ্ছি। ভয়। পুলিশ-প্রশাসন আছে।’’

চায়ের দোকানে বসেও বেশ খানিকক্ষণ আড্ডা দেন মন্ত্রী। তিন মাস পর গাড়িধূরাতে খোলা হয় তৃণমূলের দফতরটিও। গৌতমবাবুর সঙ্গে ছিলেন তৃণমূল নেতা তথা স্কুল ক্রীডা বোর্ডের চেয়ারম্যান মদন ভট্টাচার্যও। পরে রাজ্যসভার সাংসদ শান্তা ছেত্রী, প্রদীপ প্রধান, মিলন ডুকপা, রাজেন মুখিয়ার মত পাহাড়ের নেতারাও আসেন। সকলে মিলিয়ে গাড়িধূরার রাস্তায় ঘোরেন। দলীয় দফতরে বসে বৈঠকেও করেন মন্ত্রী। তৃণমূলের নেতানেত্রীরা বলেন, ‘‘আমরা পাহাড়-সমতলের মেলবন্ধন, শান্তি চাই। বোমা, বন্‌ধের রাজনীতি করে বিভেদ তৈরি করা হচ্ছে। পাহাড়বাসী তা বুঝতে পেরেই তো স্বাভাবিক জীবনে ফিরছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.