অসহায়: স্বামীর মৃত্যুর পরে দুই নাবালক ছেলেকে নিয়ে দিশাহারা রোকেয়া। ইটাহারে। নিজস্ব চিত্র
আনলক-পর্বে এখনও ট্রেন পরিষেবা স্বাভাবিক হয়নি। এই পরিস্থিতিতে ভিন্ রাজ্যে কাজে যেতে রায়গঞ্জ থেকে আত্মীয়ের অটোরিকশায় হরিয়ানার গুরুগ্রামে রওনা দিয়েছিলেন ইটাহার ব্লকের জয়হাট গ্রাম পঞ্চায়েতের বাহাডোলে ফিরোজ আখতার হোসেন। সঙ্গে ছিলেন আরও তিন জন। পুলিশ জানিয়েছে, পথে উত্তরপ্রদেশের ফিরোজাবাদে জাতীয় সড়কে অটোরিকশার সঙ্গে ট্রাকের সংঘর্ষ হয়। দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় বছর আটত্রিশের ফিরোজের। ১৩ অগস্ট ভোরে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
ফিরোজের কাকা নুরুল ইসলাম বলেন, “ওই অটোরিকশায় আমার ভাইপো ছাড়াও দক্ষিণ দিনাজপুরের আরও তিন জন ছিলেন। দুর্ঘটনায় দক্ষিণ দিনাজপুরের মহীপালের এক পরিযায়ী শ্রমিকেরও মৃত্যু হয়েছে বলে শুনেছি। বাকি দুই শ্রমিক জখম।”
ইটাহার থানার ওসি অভিজিৎ দত্ত বলেন, “উত্তরপ্রদেশ পুলিশ ১৩ অগস্ট ফিরোজাবাদ জেলার একটি হাসপাতাল মর্গে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করিয়েছে। পরিবারের লোকেরা ১৫ অগাস্ট ফিরোজের মৃতদেহ নিয়ে বাহাডোলে ফেরেন।”
স্থানীয় সূত্রে খবর, ফিরোজের স্ত্রী রোকেয়া খাতুন গৃহবধূ। তাঁদের আট ও পাঁচ বছর বয়সী দুই ছেলে রয়েছে। ফিরোজের রোজগারেই সংসার চলত। রোকেয়া বলেন, “দুইছেলেকে নিয়ে কী ভাবে সংসার চালাবো, ভেবে পাচ্ছি না।”
পারিবারিক সূত্রে খবর, ফিরোজ গত পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে গুরুগ্রামে গাড়ির যন্ত্রাংশ তৈরির একটি কারখানায় কাজ করতেন। তাঁর ভাই আনোয়ার হোসেন বলেন, “লকডাউনেকারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ২০ জুন দাদা বাড়ি ফেরে। কিছুদিন আগে কারখানা খোলার খবর পায় দাদা। ট্রেন চালু না হওয়ায় ১০ অগস্ট দক্ষিণ দিনাজপুরের আরও তিন পরিযায়ী শ্রমিকের সঙ্গে কাজে যোগ দেওয়ার জন্য এক আত্মীয়ের অটোরিকশা ভাড়া করে গুরুগ্রামে রওনা দেয়।”
ইটাহারের তৃণমূল বিধায়ক অমল আচার্য বলেন, “দলের তরফে প্রাথমিক ভাবে ফিরোজের স্ত্রীকে আর্থিক সাহায্য করা হয়েছে। সরকারি উদ্যোগে তাঁর কাজের ব্যবস্থা করে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy