Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

প্রাণনাশের হুমকি, অভিযোগ বিজেপির মহিলা কাউন্সিলরের

বিজেপির এক মহিলা কাউন্সিলরের অফিসে ভাঙচুর করে তাঁকে ক্রমাগত প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এলাকার তৃণমূলের দুই কর্মীর বিরুদ্ধে। কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে পুলিশের ভূমিকাকেও। গত ৫ মে থানায় তা নিয়ে বিস্তারিত অভিযোগ জানানো হলেও পুলিশ কিছু করছেন না বলে বাধ্য হয়ে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে সে কথা জানাতে হল বলে দাবি করেছেন শিলিগুড়ির ১ নম্বর ওয়ার্ডের ওই মহিলা কাউন্সিলর মালতি রায়।

কাউন্সিলর মালতি রায়।

কাউন্সিলর মালতি রায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৬ ০২:২০
Share: Save:

বিজেপির এক মহিলা কাউন্সিলরের অফিসে ভাঙচুর করে তাঁকে ক্রমাগত প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এলাকার তৃণমূলের দুই কর্মীর বিরুদ্ধে। কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে পুলিশের ভূমিকাকেও।

গত ৫ মে থানায় তা নিয়ে বিস্তারিত অভিযোগ জানানো হলেও পুলিশ কিছু করছেন না বলে বাধ্য হয়ে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে সে কথা জানাতে হল বলে দাবি করেছেন শিলিগুড়ির ১ নম্বর ওয়ার্ডের ওই মহিলা কাউন্সিলর মালতি রায়। সোমবার শিলিগুড়ি জার্নালিস্ট ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠক করে মালতিদেবী অভিযোগ করেন, গত ৩০ এপ্রিল তিনি কলকাতায় থাকলে ওয়ার্ডে তাঁর অফিসে হামলা চালায় তৃণমূলের দুই ব্যক্তি। অভিযুক্তদের নাম মাসুম কপূর এবং নরসিংহ মাহাতো। নাম করে তাদের বিরুদ্ধে থানায় একাধিকবার অভিযোগ জানানো হয়েছে। ভাঙচুরের দিন দলের কর্মীরা অভিযোগ করেন। পরে তিনি ফিরে এসে থানাতে অভিযোগ করেন। এর পরেও পুলিশ হাত গুটিয়ে রয়েছে বলে অভিযোগ।

পুলিশ কমিশনার মনোজ বার্মা বলেন, ‘‘দলীয় কার্যালয়ে হামলা নিয়ে আগে একটি অভিযোগ করা হয়েছিল। তৃণমূলের তরফেও পাল্টা অভিয়োগ করা হয়েছে। তা নিয়ে মামলা করা হয়েছে। কিন্তু প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে কোনও অভিযোগ মেলেনি।’’

পুলিশ কমিশনারের বক্তব্য যে যথাযথ নয় এ দিন সাংবাদিক বৈঠকে থানায় জমা দেওয়া তাঁকে প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগপত্র দেখিয়ে তা জানিয়েও দেন কাউন্সিলর মালতি দেবী। পুলিশকে করা ওই অভিযোগ পত্রে থানার সিল, সই সবই রয়েছে। পুলিশ কমিশনার কী করে অস্বীকার করছেন সেই প্রশ্ন উঠেছে। মালতিদেবী বলেন, ‘‘পুলিশ কোনও ব্যবস্থা না-নেওয়ায় অভিযুক্তরা আমার লোকদের শাসিয়ে বেড়াচ্ছে যতদিন আমি কাউন্সিলর পদ থেকে পদত্যাগ করব না ততদিন তারা আমাদের কোনও কাজ করতে দেবেন না। কাউন্সিলরের অফিস খুলতে দেবেন না। আমাকে এবং আমার পরিবারের লোকদের খুন করবেন। তার জন্য তারা জেলে যেতেও রাজি।’’

প্রকাশ্যে এ ধরনের হুমকি এবং কাজে বাধা দেওয়ায় এ দিন বিষয়টি পুরসভার মেয়রকেও লিখিত ভাবে জানান মালতি দেবী। ঘটনা শুনে ক্ষুব্ধ মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘মালতি দেবী কোন দলের কাউন্সিলর সেটা বিষয় নয়। তিনি একজন কাউন্সিলর। তাঁর অফিসে ভাঙচুর করা হয়েছে, তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে, অথচ পুলিশ কিছু করছে না। আমরা ওঁর পাশে রয়েছি। তাঁকে সমস্ত ধরনের সাহায্য করা হবে। দরকার হলে তিনি কাউন্সিলর অফিস খোলার সময় আমি নিজে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকব।’’ অভিযুক্ত তৃণমূলের দুই কর্মী অবশ্য তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

মাসুম কপূর বলেন, ‘‘কাউন্সিলরকে তাঁর অফিসে পাওয়া যায় না। নানা কাজে গিয়ে বাসিন্দারা ফিরে আসে। ক্ষুব্ধ বাসিন্দারাই অফিসে ভাঙচুর করেছে বলে শুনেছি। খবর পেয়ে আমি সেখানে গেলে কাউন্সিলরের অফিস বন্ধ দেখি। মিথ্যে অভিযোগ করা হচ্ছে।’’ একই কথা জানান, নরসিংহ মাহাতো। তিনি বলেন, ‘‘মিথ্যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে। কাউন্সিলর এলাকায় কাজ করেন না বলেই তার বিরুদ্ধে অনেকে ক্ষুব্ধ।’’

কাউন্সিলর অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৩০ এপ্রিল পঞ্চানন কলোনি-১ এলাকায় ওই অফিসে ভাঙচুর করা হয়। অভিযোগ, সে সময় অভিযুক্তরা হুমকি দেয় কাউন্সিলর পদ না ছাড়লে অফিস খুলতে দেওয়া হবে না। কাজ করতে দেওয়া হবে না। কাউন্সিলর এবং তার পরিবারের লোকদের মেরে ফেলা হবে। তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বও ঘটনা নিয়ে কাউন্সিলরের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি রঞ্জন সরকার বলেন, ‘‘এ ধরনের ঘটনা অনভিপ্রেত। কাউন্সিলর সতীর্থ হিসাবে আমাদের জানালে আমরাও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতাম। তবে বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি যাতে না হয় সেটাই কাম্য। যে অভিযোগ উঠেছে তা সঠিক হলে দল যে এ ধরনের কাজ কোনও ভাবেই সমর্থন করবে না তা জানিয়ে দেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE