শিলিগুড়ির মহানন্দা নদীর লালমোহন মৌলিক ঘাটে। ছবি: বিনোদ দাস।
বিহারের পটনার পরে, শিলিগুড়ি ও সংলগ্ন এলাকায় সবচেয়ে বড় মাপের ছটপুজোর আয়োজন শুরু হয়ে গিয়েছে। আগামী রবিবার বিকেলে এবং সোমবার সকালে ছটপুজোর জন্য পুরসভার তরফে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রায় ১০,৬০০ পরিবারকে পুজোর সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। এর বাইরে, অন্তত আরও ৫০ হাজার পরিবার ছটপুজো করবেন। বরো-ভিত্তিক, ওয়ার্ড-ভিত্তিক জিনিসপত্র বিলির কাজ চলছে। সে সঙ্গে চলছে নদীঘাট প্রস্তুতির কাজ। ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুনালের নির্দেশ মতো নদীর গতি যাতে না আটকায়, দেখা হচ্ছে।
আজ, শনিবারের বিকেলের মধ্যে প্রতিটি নদীঘাট সাফাই করে তীরে বালির বস্তা বসানো, পর্যাপ্ত আলো ও পানীয় জলের বন্দোবস্ত হয়ে যাবে বলে পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে। গত কয়েক দিন ধরে মেয়র গৌতম দেব থেকে শুরু করে বরো চেয়ারম্যান, মেয়র পারিষদেরা বিভিন্ন ঘাটের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখেছেন। শিলিগুড়ি মহকুমার চারটি ব্লক ছাড়াও, শিলিগুড়ি শহর লাগোয়া ফুলবাড়ি থেকে শালুগাড়া অবধি মহানন্দা নদীর দু’ধার ধরে ছটপুজো হয়। আগে নদীর মাঝ-বরাবরও সারি দিয়ে ঘাট তৈরি হত। তা গ্রিন ট্রাইবুনালের নির্দেশে বন্ধ করা হয়। যা নিয়ে কয়েক বছর আগেও শিলিগুড়িতে আইন-শৃঙ্খলার সমস্যাও দেখা দেয়। পরে, পুণ্যার্থীরা সরকারি নির্দেশ মেনেই পুজো করা শুরু করেন।
শুক্রবার সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন এলাকায় ছটপুজোর সামগ্রী বিলি করেন মেয়র গৌতম দেব। তিনি বলেন, ‘‘বহু বছর ধরেই শিলিগুড়িতে বিরাট ভাবে ছটপুজোর আয়োজন হয়। পটনার পরে এমন বিপুল সংখ্যার মানুষের সমাগম কোথাও হয় না। পুরসভার তরফে আমরা প্রয়োজনীয় সমস্ত ব্যবস্থা নিচ্ছি।’’
শিলিগুড়ির মহানন্দা নদীর লালমোহন মৌলিক ঘাট, সন্তোষীঘাট, পার্বতী ঘাট, মহারাজ কলোনি ঘাটের পরে প্রচুর নদীর ঘাট রয়েছে। ঘাটে এতটাই ভিড় হয় যে, সবাই পুজো করার জায়গা পান না। এই সমস্যা মেটাতে এখন শহরের গান্ধী ময়দান থেকে শুরু করে ৭, ৬, ৮, ৪, ৫, ৯ নম্বরের মতো ওয়ার্ডে ফাঁকা জমি, ক্লাবের মাঠ বা ময়দান ‘আর্থমুভার’ যন্ত্র দিয়ে সুইমিং পুলের মতো খুঁড়ে তাতে কৃত্রিম জলাশয় তৈরি করা হয়। তার পরে তাকে সাজিয়ে তোলা হয়। সেখানেও ছটপুজো হয়। শাসক থেকে বিরোধী দলের নেতারা ঘুরে ঘুরে ঘাটগুলিতে জনসংযোগের কাজও করে থাকেন।
আলুপট্টির বাসিন্দা বিনোদ গুপ্তর পরিবার দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে থেকে শিলিগুড়িতে আছে। তিনি বলেন, ‘‘চার প্রজন্ম ধরে আমরা নদীতে পুজো করছি। এখানকার মতো জনসমাগম উত্তর-পূর্বে আর কোথাও হয় বলে মনে হয় না।’’ মহানন্দা পাড়ার বাসিন্দা, ক্রীড়া পরিষদের ক্রিকেট সচিব মনোজ বর্মাও প্রতি বছর ঘাটে সুসজ্জিত স্টল তৈরি করে পুজো করেন। তিনি বলেন, ‘‘শিলিগুড়ির অন্তত ৬০ শতাংশ মানুষ ছটপুজো করেন। পুরসভা আগের চেয়ে অনেক বেশি কাজ করছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy