Advertisement
E-Paper

শ্রমিক সরবরাহ ঘিরে রণক্ষেত্র রতুয়া

সেতু তৈরির কাজে শ্রমিক সরবরাহ ঘিরে দুই গোষ্ঠীর বিবাদের জেরে রণক্ষেত্র হয়ে উঠল মালদহের রতুয়ার নাকাট্টি ঘাট এলাকা। সোমবার বিকেল থেকে দফায় দফায় দুই গোষ্ঠীর বিবাদের জেরে বন্ধ হয়ে যায় ফুলহার নদী পারাপারের ফেরিঘাট।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৬ ০১:৫৮
রতুয়ার নাকাট্টিঘটে সেতু তৈরির কাজে শ্রমিক সরবরাহ ঘিরে দুই গোষ্ঠীর বোমাবাজি। ছবি :বাপি মজুমদার।

রতুয়ার নাকাট্টিঘটে সেতু তৈরির কাজে শ্রমিক সরবরাহ ঘিরে দুই গোষ্ঠীর বোমাবাজি। ছবি :বাপি মজুমদার।

সেতু তৈরির কাজে শ্রমিক সরবরাহ ঘিরে দুই গোষ্ঠীর বিবাদের জেরে রণক্ষেত্র হয়ে উঠল মালদহের রতুয়ার নাকাট্টি ঘাট এলাকা।

সোমবার বিকেল থেকে দফায় দফায় দুই গোষ্ঠীর বিবাদের জেরে বন্ধ হয়ে যায় ফুলহার নদী পারাপারের ফেরিঘাট। উভয় গোষ্ঠীর লোকজন একে অন্যকে লক্ষ করে বোমা ছোড়ে বলে অভিযোগ। আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয় অস্থায়ী হোটেল-সহ পাঁচটি দোকান। বেশ কয়েকটি সাইকেল ও বাইক ভাঙচুর করা হয়। গণ্ডগোলের সময় গুলিও চালানো হয় বলেও দাবি করেছেন প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকে। তবে গুলিতে কেউ হতাহত না হলেও বোমার আঘাতে গুরুতর জখম হয়েছেন একজন। তাকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।

ঘটনার খবর পেয়েই পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। গুলি চালানোর ঘটনা অস্বীকার করেছে পুলিশ। মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘হাঙ্গামায় জড়িত উভয় পক্ষের তিনজন করে মোট ছ’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এলাকায় পুলিশ রয়েছে।’’

অর্থমন্ত্রী থাকার সময় রতুয়ার ফুলহারে সেতু তৈরির জন্য ২৬৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিলেন বর্তমান রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। রতুয়া-ভালুকা রাজ্য সড়কের বালুপুর থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে নাককাটি ঘাটে সম্প্রতি সেতু তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। সেতু তৈরির বরাত পেয়েছে হরিয়ানার একটি সংস্থা। সেতুর কাজ শুরুর পর হোটেল ছাড়াও বেশ কয়েকটি অস্থায়ী দোকানও গড়ে উঠেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সেতুর কাজ শুরু হওয়ায় বরাত প্রাপ্ত সংস্থাটি তাদের থাকার জন্য স্থানীয় সিপিএম নেতা অতুল ঘোষের কাছ থেকে লিজে জমি নিয়ে সেথানে অস্থায়ী ঘরদোর তৈরি করে। নির্মান সামগ্রী সরবরাহ-সহ শ্রমিক সরবরাহও করে আসছেন তিনিই। কিন্তু স্থানীয় কংগ্রেস বিধায়কের ঘনিষ্ঠ ইদ্রিশ আলিও সেতুর কাজে শ্রমিক সরবরাহের দাবি জানাতে থাকেন।

এ দিন দুপুরে অতুলবাবুর জমিতে অস্থায়ী ঘর তৈরি করছিলেন ইদ্রিশ আলির লোকজন। তখন অতুলবাবুর লোকজন বাধা দেওয়ায় দুপক্ষের বচসা বেধে যায়। বিবাদের খবর চাউর হতেই ইদ্রিশ আলির দলবল বোমাবাজি করতে শুরু করে বলে অভিযোগ। বেশ কয়েক রাউন্ড গুলিও চলে বলেও প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি। বোমায় গুরুতর আহত হন অতুলবাবুর ভাই ভানু ঘোষ। ঘন্টাখানেক ধরে বোমাবাজি চলায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ইদ্রিশ আলির লোকজন অস্থায়ী দোকানঘরগুলিতে আগুন লাগিয়ে দেয় বলে অভিযোগ।

বাসিন্দাদের দাবি মেনে গত একদশক ধরে সেতুর দাবিতে লড়াই চালাচ্ছিলেন রতুয়ার বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়। মূলত তারই কৃতিত্বে সেতুর জন্য বরাদ্দ মেলে। বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায় এ দিন অবশ্য ঘটনার জন্য অতুলবাবুকেই দায়ী করেন। তিনি বলেন, ‘‘ওর জমি সংস্থা লিজ নিয়েছে বলে ও যা খুশী তাই করে যাচ্ছে। জমির ভাড়া নিচ্ছে। তারপরেও শ্রমিক সরবরাহ থেকে শুরু করে নির্মাণ সামগ্রী সব কিছুই একাই উনি সরবরাহ করতে চান। উনি যে এলাকায় দাদাগিরি করছেন তা পুলিশকে জানানো হলেও কোনও ফল হয়নি।’’

যদিও অতুলবাবু দাবি করেন, ‘‘শ্রমিক সরবরাহ করতে চায় বলে ইদ্রিস আলি আমাকে জানিয়েছিল। আমি ওকে সংস্থার সঙ্গে কথা বলতে বলেছিলাম। তারপর এ দিন গায়ের জোরে আমার জমিতে ওরা অস্থায়ী ঘরদোর তৈরির কাজ করছিল। বাধা দেওয়ায় বোমাবাজি শুরু করে।’’

state news ratuya worker supply disturbance
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy