Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

সব স্কুল বাসের নথি যাচাই হবে

শিলিগুড়ি ও লাগোয়া এলাকার সব স্কুল বাসের পারমিট-সহ যাবতীয় নথিপত্র যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত নিল দার্জিলিং জেলা পরিবহণ দফতর।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৬ ০২:৩৮
Share: Save:

শিলিগুড়ি ও লাগোয়া এলাকার সব স্কুল বাসের পারমিট-সহ যাবতীয় নথিপত্র যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত নিল দার্জিলিং জেলা পরিবহণ দফতর।

সরকারি দফতর সূত্রের খবর, শিলিগুড়ি শহর এবং লাগোয়া এলাকার স্কুলগুলি মিলিয়ে কমবেশি ৬০০ মতো স্কুল বাস রোজ চলাচল করছে। তার মধ্যে অনেক বাসেরই স্কুলে ভাড়া দেওয়ার নথি নেই বলে অভিযোগ পেয়েছে পরিবহণ দফতর। সে জন্য সমস্ত বাসেরই স্কুল পারমিট, নথি আরেক দফায় খতিয়ে দেখবে পরিবহণ দফতর। চলতি সপ্তাহে চম্পাসারির দেবীডাঙায় একটি স্কুল বাস দুর্ঘটনার পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

পরিবহণ দফতর ও পুলিশ সূত্রের খবর, যে বাসটি দুর্ঘটনায় পড়েছে, সেটির প্রাথমিক পরীক্ষার পর কাগজপত্র ঠিক রয়েছে বলে দেখা গিয়েছে। অনেক বাসই ঠিক স্কুল পারমিট অথবা ঠিক ফিটনেস সার্টিফিকেট ছাড়া চলছে বলে তদন্তকারীদের কাছে খবর এসেছে। তেমনই, বাসগুলির রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে। সেগুলি খতিয়ে দেখার জন্য পরিবহণ দফতর ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জেলা পরিবহণ আধিকারিক রাজেন সুনদাস বলেন, ‘‘আমরা নিয়মিত স্কুল বাসের পারমিট পরীক্ষা করি ঠিকই। কিন্তু কোনও ঘটনা ঘটলে নানা প্রশ্ন ওঠে। সেদিক মাথায় রেখেই স্কুল বাসের পারমিটগুলি পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’

চম্পাসারির দুর্ঘটনায় স্কুল বাসটি একটি সিমেন্ট বোঝাই ট্রাকের পিছনে ধাক্কা মারলে শিক্ষিকা-সহ অন্তত ২০ জন ছাত্রছাত্রী জখম হন। বাসটি আটক করে চালককে গ্রেফতার করা হয়। ৬ জন ছাত্রছাত্রীকে হাসপাতালে ভর্তিও করাতে হয়। তাদের হাসপাতালে দেখতে যান মন্ত্রী গৌতম দেব, রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টচার্যরা। পরিবহণ দফতর বিষয়টি দেখে ব্যবস্থা নেবে বলেও তাঁরা জানিয়ে দেন। এর পরেই নোটিস দিয়ে বাসটির কাগজপত্র পরীক্ষা শুরু করা হয়। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ঘটনার পর বহু অভিভাবক যোগাযোগ করে স্কুল বাসের নথিপত্র পরীক্ষার দাবি জানিয়েছেন।

তাঁদের অভিযোগ, প্রতি মাসে মোটা টাকা বাস ভাড়ার জন্য নেওয়া হলেও মালিকদের একাংশ বাসের রক্ষণাবেক্ষণ ঠিকঠাক করেন না। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা তো দূরের কথা, বাসের আসন, জানলা, আলো, ওয়াইপার পর্যন্ত ঠিক থাকে না। বিভিন্ন রুটে চলা দীর্ঘ দিনের পুরানো বাসকে হলুদ রং করে স্কুল বাস হিসাবে নামানো হয়। এই ধরনের বাস চালানোর জন্য পরিবহণ দফতর থেকে স্কুল পারমিট থাকা বাধ্যতামূলক হলেও, তা থাকে না। পুলিশ, পরিবহণ দফতরের একাংশের ‘মদতে’ বাসগুলি চলতে থাকে বলে অভিভাবকদের অভিযোগ। গত কয়েক মাসে শিলিগুড়ি শহরে মদ খেয়ে বাস চালানো, ধাক্কায় বাইক আরোহীর মৃত্যু ছাড়াও পরপর গাড়িতে ধাক্কা মারার অভিযোগ ওঠে স্কুল বাসের বিরুদ্ধে।

তেমনই, স্কুল পারমিটের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট এলাকায় চালানো, ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জন্য ব্যবহার, বাসের ভিতরে সুষ্ঠু ব্যবস্থা থাকাটা জরুরি। এর জন্য আলাদা ফি জমা দিয়ে পাঁচ বছরের জন্য পারমিট নিতে হয় মালিকদের। সেক্ষেত্রে নিয়ম মানা হয় না বলে অভিযোগ। স্কুল বাস মালিকদের সংগঠন অবশ্য পরিবহণ দফতরের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। সংগঠনের সম্পাদক শুভ্র বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সব স্কুল বাসের ক্ষেত্রে নথি ঠিক রয়েছে কি না, তা দেখাটা অবশ্যই জরুরি। আমরা পরিবহণ দফতরকে অবশ্যই সহযোগিতা করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Document School bus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE