ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান পদ থেকে কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরীকে সরানোর দাবি এবার জোরালো হল দলেরই। ওই দাবিতে শনিবার ভাইস চেয়ারম্যান দুলাল সরকার সহ আট জন তৃণমূল কাউন্সিলার পুরসভার বিভিন্ন পদ থেকে পদত্যাগ করলেন। এ দিনই তাঁরা তাঁদের পদত্যাগপত্র পুরসভায় জমা দেন।
শুধু তাই নয়, ওই কাউন্সিলাররা এ দিন সাংবাদিক বৈঠক করে হুমকি দিয়েছেন, যদি দলের রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশ মেনে কৃষ্ণেন্দুবাবু চেয়ারম্যানের পদ থেকে ইস্তফা না দেন তবে তাঁরা দলের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে পরবর্তীতে অনাস্থাও আনবেন। কৃষ্ণেন্দুবাবু অবশ্য পদত্যাগের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তিনি এ দিনও বলেন, ‘‘দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে এই পদে বসিয়েছেন। তিনি যা নির্দেশ দেবেন তাই আমি মানব। আমাকে এখনও কেউ কিছু বলেনি।’’
এ দিকে এই ডামাডোলের মধ্যেই পাঁচশো ও হাজার টাকার নোট বাতিল নিয়ে মানুষের হয়রানির অভিযোগকে সামনে রেখে আগামী সোমবার ইংরেজবাজার শহরে মহা মিছিলের ডাক দিয়েছেন কৃষ্ণেন্দুবাবু। এ নিয়ে এ দিন শহরজুড়ে মাইকে প্রচারও করা হয়েছে। যদিও তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘‘দলের তরফে সোমবার কোনও মিছিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।’’
গত বুধবার ইংরেজবাজারের নির্দল বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষ মালদহ জেলা পরিষদের তলবি সভায় কংগ্রেস-সিপিএমের সঙ্গে না যাওয়ায় তৃণমূল তাঁকে দলে টেনে নেয়। সে দিন সাংবাদিক বৈঠক করে দলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন ঘোষণাও করেন, ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান পদ থেকে কৃষ্ণেন্দুবাবুকে সরতে হবে এই শর্তে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন তিনি। এবং রাজ্য নেতৃত্ব তা মেনে নিয়েছে। তারপর তিনদিন কেটে গেলেও কৃষ্ণেন্দুবাবু কিন্তু স্বপদেই বহাল রয়েছেন। শনিবারও তিনি পুরসভায় গিয়ে দফতর সামলান।
এ দিকে পুরসভায় ২৯ জন কাউন্সিলারের মধ্যে যে ১৬ জন তৃণমূলের রয়েছেন. এঁদের মধ্যে পুরভার ভাইস চেয়ারম্যান সহ আটজন কাউন্সিলর এ দিন পুরসভার নিজেদের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। ভাইস চেয়ারম্যান ছাড়া বাকি কাউন্সিলাররা হলেন আশিস কুণ্ডু, সুমনা অগ্রবাল, চৈতালী ঘোষসরকার, শুভময় বসু, রাজশ্রী দে, শম্পা সাহাবসাক ও পুর পারিষদ অম্লান ভাদুড়ি। এ দিন সন্ধ্যায় তৃণমূলের জেলা পার্টি অফিসে সাংবাদিক বৈঠকে বাবলা সরকার সহ পদত্যাগীরা বলেন, ‘‘গত বুধবার রাজ্য তৃণমূলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দলের সহসভাপতি মুকুল রায় এবং সাধারণ সম্পাদক ও মালদহ জেলার দলীয় পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী পুরসভার চেয়ারম্যান পদ থেকে কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু এ দিন পর্যন্ত তিনি দলের সেই নির্দেশকে মান্যতা দেননি। তাই আমরা আটজন কাউন্সিলার পুরসভার বিভিন্ন দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করলাম।’’ সেই বৈঠকেই আশিসবাবু হুমকি দিয়েছেন, ‘‘যদি চেয়ারম্যান নিজে থেকে না সরেন তবে তাঁর বিরুদ্ধে আমরা দলীয় কাউন্সিলাররাই অনাস্থা আনব এবং তাঁকে ওই পদ থেকে হঠিয়ে দেব।’’ এসব বিষয়ে কৃষ্ণেন্দুবাবু অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy