আর জি কর হাসপাতালে চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের পরে জেলার সব হাসপাতালগুলির নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে শুরু হয় পরিদর্শন। সেই পরিদর্শনেই উঠে আসে, আলিপুরদুয়ার জেলার তিনটি বড় হাসপাতালেই রয়েছে নজরদারি সিসি ক্যামেরা থেকে শুরু করে বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষীর ঘাটতি। তিনটি হাসপাতালের কোনটিতে কত সংখ্যায় সিসি ক্যামেরা বা নিরাপত্তারক্ষী প্রয়োজন, তা নিয়ে আলাদা করে রাজ্যের কাছে রিপোর্টও পাঠানো হয় বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর। কিন্তু তার পরে ছ’মাস কেটে গেলেও গোটা বিষয়টি শুধুমাত্র পরিদর্শন ও প্রস্তাব পাঠানোতেই থেমে রয়েছে বলে অভিযোগ।
সূত্রের খবর, গত অগষ্টে, আর জি কর-কাণ্ডের পরে আলিপুরদুয়ারের তিনটি বড় হাসপাতাল—জেলা হাসপাতাল, ফালাকাটা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল ও বীরপাড়া রাজ্য সাধারণ হাসপাতাল পরিদর্শন করেন পুলিশের শীর্ষ কর্তারা। যার রিপোর্ট জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের কাছে পৌঁছয়। এর পাশাপাশি, জেলার স্বাস্থ্য কর্তারাও তিনটি হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখেন। তার পরেই জেলার এই তিন বড় হাসপাতালে সিসি ক্যামেরা বাড়ানোর প্রস্তাব রাজ্যে পাঠানো হয়। একই সঙ্গে, তিনটি বড় হাসপাতালে বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যা বৃদ্ধির প্রস্তাবও রাজ্যের কাছে যায়। কিন্তু অভিযোগ, মাঝের এই ছয় মাসে প্রস্তাব অনুযায়ী জেলার তিনটি বড় হাসপাতালের একটিতেও নতুন সিসি ক্যামেরা বসেনি। নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যাও বৃদ্ধি হয়নি।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, আর জি কর-কাণ্ডের সময়ে আলিপুরদুয়ারে সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও বড় সরকারি হাসপাতাল বলে পরিচিত জেলা হাসপাতালে ৬৪টি সিসি ক্যামেরা ছিল। ওই ঘটনার পরে, হাসপাতালগুলির নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে নড়েচড়ে বসতেই পরীক্ষা করে দেখা যায়, তার মধ্যে ৩২টি ক্যামেরা অকেজো অবস্থায় রয়েছে। গত ছ’মাস সেই ক্যামেরাগুলির সংস্কার হয়েছে বলে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতাল সূত্রের খবর। কিন্তু জেলারসবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই হাসপাতালে প্রস্তাব অনুযায়ী নতুন স সি ক্যামেরা বসেনি। পাশাপাশি, প্রস্তাব মতো বাড়েনি নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যাও। বিষয়টি নিয়ে একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফোন ধরেননি আলিপুরদুয়ারের সিএমওএইচ সুমিত গঙ্গোপাধ্যায়। মোবাইল বার্তারও উত্তরদেননি তিনি।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য আধিকারিকদের একাংশ জানিয়েছেন, নিরাপত্তার স্বার্থে একেবারে যে কাজ হয়নি তা নয়। আর জি কর-কাণ্ডের পরে জেলার তিনটি বড় হাসপাতালে বেশ কিছু কাজ হয়েছে। যার মধ্যে হাসপাতালের বিভিন্ন জায়গায় আলোর ব্যবস্থা বাড়ানো থেকে শুরু করে চিকিৎসক কিংবা নার্সদের রেস্ট রুম ও শৌচাগার তৈরির মতো কিছু কাজ রয়েছে। তবে পড়ুয়া ও চিকিৎসকদের দাবি, তা যথেষ্ট নয়।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)