Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
tribals

ভোর সাড়ে তিনটেয় বেরিয়ে, ঘুরপথেও পৌঁছতে পারলাম না

গাড়ি চালকেরা জানান, ইসলামপুর থেকে শিলিগুড়ি যেতে কমপক্ষে লাগবে দেড় ঘণ্টা। তখন কান্না পাচ্ছে। রাস্তাতেই শেষ হয়ে গেল পরীক্ষা।

দাবি: ডালখোলা স্টেশনে আদিবাসীদের অবরোধ। ছবি: মেহেদি হেদায়েতুল্লা

দাবি: ডালখোলা স্টেশনে আদিবাসীদের অবরোধ। ছবি: মেহেদি হেদায়েতুল্লা

প্রভাবতী রায় (পিএসসি পরীক্ষার্থী)
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২০ ০৫:১১
Share: Save:

রবিবার ছিল পাবলিক সার্ভিস কমিশনের ক্লাকশিপের পার্ট-টু পরীক্ষা। দু’শো কিলোমিটার দূরে শিলিগুড়ির এক স্কুলে পরীক্ষার কেন্দ্র করা হয়েছিল। তাই ভোরেই বের হয়েছিলাম। চারটের সময় বাসে উঠেও পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছতে পারলাম না। কারণ, আদিবাসীদের ডাকা রেল ও রাস্তা অবরোধ। পথেই ছটফট করতে করতে কেটে গেল গোটা দিন।

রায়গঞ্জের কর্ণজোড়া থেকে ভোর সাড়ে তিনটের বাড়ি থেকে বের হয়েছিলাম। শীতের সময় বলে তখনও আলো ফোটেনি। চারটে নাগাদ রায়গঞ্জের শিলিগুড়ির মোড় থেকে কলকাতা-শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি বাসে উঠে বসি। আমার সঙ্গে ছিলেন আরও পাঁচ পরীক্ষার্থী। দু’জনের বাড়ি দক্ষিণ দিনাজপুরে।

একেই রাস্তার অবস্থা খুব খারাপ, তার মধ্যে কুয়াশা। গোটা সড়কে লরির ভিড়। এমনিতেই দেরি হচ্ছিল। ডালখোলার দোমহনাতে হঠাৎ বাস থেমে গেল। বিশাল যানজট। তখন সকাল সাতটা। চিন্তায় আমরা ছটফট করছি। আদৌ পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছতে পারবো তো? বাস চালকের কাছে আমরা কয়েকজন পরীক্ষার্থী গিয়ে অনুরোধ করলাম। চালক আমাদের কথা শুনে ঘুরপথে ‘বেঙ্গল টু বেঙ্গল’ সড়ক পথটা ধরলেন।

সেই যাত্রা ছিল অনেকটাই ঝুঁকির। এবড়ো-খেবড়ো রাস্তা। ইসলামপুর যখন এসে পৌঁছলাম সাড়ে দশটা বেজে গিয়েছে। ১১ টা থেকে পরীক্ষা। বাধ্য হয়েই ইসলামপুরেই নেমে পড়লাম। বাস স্ট্যান্ডে নেমে আমরা ছোট গাড়ি ভাড়া করার চেষ্টা করি। কিন্ত গাড়ি চালকেরা জানান, ইসলামপুর থেকে শিলিগুড়ি যেতে কমপক্ষে লাগবে দেড় ঘণ্টা। তখন কান্না পাচ্ছে। রাস্তাতেই শেষ হয়ে গেল পরীক্ষা। ইসলামপুর থেকেই আবার ফিরলাম রায়গঞ্জে।

প্রাথমিক পরীক্ষার পাশ করার পর এ দিন ছিল পার্ট-টু। চাকরি পেতেই হবে তাই এতদিন পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। একদিন আগে শিলিগুড়িতে গিয়ে থাকার চিন্তাভাবনাও ছিল। কিন্ত বাড়ি থেকে সবাই বাধা দিলেন, করোনার সময়ে হোটেলে থাকাটা ঝুঁকির। করোনা পরিস্থিতিতে জেলার মধ্যে পরীক্ষা কেন্দ্র করা উচিত ছিল, তাহলে এমন দুর্ভোগে পড়তে হত না। সবাই সুষ্ঠভাবে পরীক্ষা দিতে পারতাম।

তবে বাড়ি ফেরার পথে জানলাম, সরকার থেকে জানানো হয়েছে, অবরোধের জেরে আটকে পড়া পরীক্ষার্থীদের আবার পরীক্ষা নেওয়া হবে। তারপরেই কিছুটা স্বস্তি পেলাম। এখন দেখা যাক, আবার কবে হয় পরীক্ষা!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE