ফাইল চিত্র
ফুড কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া (এফসিআই) ধান না কেনায় মরসুমের শেষ মুহূর্তে পৌঁছে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে দিল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা খাদ্য দফতর। প্রশাসনিক সূত্রে এমনই জানা গিয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন জেলার অনেক চাষি।
এমন পরিস্থিতিতে প্রতিটি ব্লকের কিসানমান্ডিতে নথিভুক্ত চাষিদের কাছ থেকে অল্প পরিমাণে ধান কেনা হচ্ছে বলে অভিযোগ। চাষিদের একাংশের নালিশ, এক মাস আগেও কিসানমান্ডিতে প্রতি দিন গড়ে প্রায় ৪০ জন চাষির কাছ থেকে ১০ কুইন্ট্যাল করে সহায়ক মূল্যে ধান কেনা হয়েছে। এখন তা কমিয়ে প্রতি দিন ২৫ জন চাষির কাছ থেকে ৫ কুইন্ট্যাল করে ধান কেনা হচ্ছে।
বালুরঘাটের খাঁপুর এলাকার চাষি দীনেশ বর্মণ, ঠাকুরপুড়ার মতিউর রহমানের অভিযোগ, এক বার ধান বিক্রির পরে দ্বিতীয় বার আর সুযোগ মেলেনি। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, চলতি ধান সংগ্রহের মরসুমে দক্ষিণ দিনাজপুরে চাষিদের কাছ থেকে প্রতি কুইন্ট্যাল ১ হাজার ৮৩৫ টাকা সহায়ক দামে প্রায় ৯০ হাজার মেট্রিক টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিল জেলা খাদ্য দফতর। জেলায় এ বার প্রায় ৮ লক্ষ মেট্রিক টন আমন ধান উৎপাদন হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়তি ধানের বড় অংশ চালকল ও একাধিক ব্যবসায়ীর মাধ্যমে বাইরের জেলায় চলে যায়। তবে প্রতি কুইন্ট্যাল ১ হাজার ৮৩৫ টাকা সহায়ক দামে সরকারি কেন্দ্রে ধান কেনার প্রক্রিয়া জারি থাকায় হাট ও খোলাবাজারে ধানের দামে কিছুটা প্রভাব পড়ে। সরকারি দর থেকে কুইন্ট্যাল প্রতি ৩০০-৪০০ টাকা কমের বেশি ফারাক থাকে না।
জেলা খাদ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ধান সংগ্রহের শেষলগ্নে পৌঁছেও এফসিআই জেলা থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও ধান কেনেনি। তার জেরে চাষিদের কাছ থেকে ধান সংগ্রেহের লক্ষ্যমাত্রা ৯০ হাজার মেট্রিক টন থেকে কমিয়ে ৭১ হাজার মেট্রিক টন করা হয়েছে।
সোমবার জেলা খাদ্য নিয়ামক জয়ন্ত রায় জানান, গত বছর পর্যন্ত এফসিআই সহায়ক মূল্যে ১০ হাজার মেট্রিক টন ধান কিনেছিল। এ বার এখনও পর্যন্ত এক ছটাক ধানও কেনেনি। অথচ বিভাগীয় খাদ্য দফতরের পাশাপাশি এফসিআইয়ের ধান ক্রয়ের উপরে হিসেব করে প্রতি বছর চাষিদের কাছে ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়। জয়ন্ত জানান, এ দিন পর্যন্ত জেলা খাদ্য দফতর ৬৬ হাজার মেট্রিক টন ধান কিনেছে। ফলে নথিভুক্ত ২৮ হাজার চাষির সবার কাছ থেকে এখনও ধান কিনে উঠতে পারেনি খাদ্য দফতর।
প্রশাসনিক ও স্থানীয় সূত্রে খবর, দু’মাস আগে বালুরঘাট থেকে এফসিআইয়ের দফতর সরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। আন্দোলনের জেরে আপাতত ওই দফতর রয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখন ধান কেনা বন্ধ করে অসযোগিতার অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে।
এফসিআইয়ের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘ধান কেনার জন্য এখনও অর্থ বরাদ্দ করা হয়নি। টাকা মিললে ধান সংগ্রহে নামা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy