Advertisement
E-Paper

পুড়ে গেল ‘নুড্‌ল ফ্যাক্টরি’

দলাই লামার দাদা গিয়ালো থন্ডুপ তৈরি করেছিলেন কালিম্পংয়ের বিখ্যাত ‘নুড্‌ল ফ্যাক্টরি’। শনিবার রাত ১০টা নাগাদ পুড়ে গেল কালিম্পংয়ের আট মাইলে সেন্ট ফিলোমেনা স্কুলের কাছের ওই কারখানা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৯ ০০:৫৫
লেলিহান: কালিম্পংয়ের আট মাইলে ‘নুড্ল ফ্যাক্টরি’তে আগুন। শনিবার রাতে। নিজস্ব চিত্র

লেলিহান: কালিম্পংয়ের আট মাইলে ‘নুড্ল ফ্যাক্টরি’তে আগুন। শনিবার রাতে। নিজস্ব চিত্র

দলাই লামার দাদা গিয়ালো থন্ডুপ তৈরি করেছিলেন কালিম্পংয়ের বিখ্যাত ‘নুড্‌ল ফ্যাক্টরি’। শনিবার রাত ১০টা নাগাদ পুড়ে গেল কালিম্পংয়ের আট মাইলে সেন্ট ফিলোমেনা স্কুলের কাছের ওই কারখানা।

ইতিহাস বলছে, নুড্‌ল তৈরির এই কারখানার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে তিব্বতিদের ভারতে এসে বসতি স্থাপন ও রোজগারের নানা কাহিনি। বর্তমান দলাই লামার দাদা গিয়ালো থন্ডুপ ওই কারখানা তৈরি করেন। শনিবার রাত্রি ১০ টা নাগাদ কারখানায় আগুন লাগে বলেই দমকল সূত্রে জানা গিয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের পরে দমকল কর্তাদের অনুমান শর্ট সার্কিট থেকেই আগুন লাগে। দমকলের তিনটি ইঞ্জিন ঘণ্টা তিনেকের চেষ্টার পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। কারখানার গুদাম ঘরও ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে বলেই দমকল সূত্রে জানা গিয়েছে।

কারখানা লাগোয়া বাড়িতেই থাকেন গিয়ালো। আগুনে তাঁর বাড়ির কোনও ক্ষতি হয়নি।

কী ভাবে তিব্বত থেকে ভারতে এসে বসবাস শুরু করেছিলেন, কিভাবেই বা কারখানা চালু করলেন, সবটাই তাঁর লেখা ‘দ্য নুডল মেকার অব কালিম্পং’ বইটিতে লিপিবদ্ধ করেছেন গিয়ালো। বইটিতে তিনি জানিয়েছেন, ১৯৫২ সালে তিব্বত থেকে চলে আসার পরে তাঁর ও তাঁর স্ত্রীর ইচ্ছে ছিল, দার্জিলিং পাহাড়ে একটু জমি কিনবেন। ‘দার্জিলিংয়ে জমির দাম তখন আমাদের ধরাছোঁয়ার বাইরে’ বলেছেন তিনি। সে সময় তাঁর এক পরিচিতর একটি চায়ের দোকান ছিল ওই এলাকায়। তিনি গিয়ে জানান, কালিম্পংয়ের কাছে বিড়লাদের কিছু জমি আছে। ওরা বিক্রি করবে বলছে। থন্ডুপ আর তাঁর স্ত্রী তখন জিপে চেপে সেখানে গেলেন। বিড়লাদের প্রতিনিধি শহরের দশটা জায়গায় তাঁদের দশটা জমি দেখালেন। কিন্তু সে সবই ছিল খুব দামি। শেষে তিনি শহর থেকে বাইরে একটি জমি দেখাতে নিয়ে গেলেন। সেটার দাম তাঁদের পছন্দ হয়। থন্ডুপরা একশো ডলার দিয়ে তিন একর জমি কেনেন। তাঁর কথা মতো, সেখানে কারখানা তৈরি করতে আরও অনেক সময় লাগে। ১৯৮০ সালে তৈরি হয় নুড্‌ল কারখানা। পরের বছর আবার তিনি কালিম্পং ছেড়ে চলে যান। ফেরেন ১৯৯৯ সালে। তখন এসে পুরনো লোকজনের অনেককে সরিয়ে নতুন করে কারখানাটি চালু করেন। গিয়ালো বলেন, ‘‘অনেক ঘটনার সাক্ষী ওই কারখানা। কারখানা তৈরির পেছনে অনেক কাহিনি রয়েছে। ফের যাতে কারখানা চালু করা যায়, তার চেষ্টা করব।’’

কারখানার এক পুরনো কর্মী জানিয়েছেন, কালিম্পং, দার্জিলিং ছাড়াও শিলিগুড়ি, সিকিম সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকাতে যায় তাদের তৈরি নুড্‌ল। শুরু থেকেই কারখানায় নুড্‌ল তৈরির প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়। পাহাড়ের বহু যুবক, যুবতী সেখানে প্রশিক্ষণ নিয়ে স্বনির্ভর হয়েছেন বলে জানান তিনি। কালিম্পংয়ের প্রাক্তন বিধায়ক হরকা বাহাদুর ছেত্রী বলেন, ‘‘নুড্‌ল ফ্যাক্টরি কালিম্পংয়ের ইতিহাসের অংশ। কালিম্পংয়ে কর্মসংস্থান তৈরির ক্ষেত্রে ওই কারখানার যথেষ্ট ভূমিকা আছে। আমরা চাই কারখানা ফের নতুন করে পথচলা শুরু করুক।’’ কালিম্পং পুরসভার প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান দেনদুপ ভুটিয়া বলেন, ‘‘প্রয়োজনে আমরা সব ধরনের সাহায্য করব।’’

Fire Noodle Factory Kalimpong
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy