E-Paper

রাত বাড়ল, জেগে উঠল শব্দদৈত্য

শব্দদানবের আতঙ্ক কি এ বারও থাকবে, তা নিয়ে গত এক সপ্তাহ ধরেই চলছিল আলোচনা। শেষে, শব্দদানব পুরোপুরি ডেসিমেল বাড়িয়ে শব্দদৈত্যে পরিণত হল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:৩৪

সন্ধ্যার প্রথম ইনিংস দেখেই বোঝা গিয়েছিল, রাতে স্লগ ওভারে ঝড় উঠবে। আর ঘটল তাই। রবিবার গভীর রাত অবধি ঝোড়ো ব্যাটিং হল। আবার আইনত, খেলার ওভারের সংখ্যা ৯০ ডেসিমেল থেকে এবার ১২৫ ডেসিমেল হওয়ার ‘খেলোয়াড়দে’র সুবিধাই হল! দীপাবলির দিনের ভারত-নেদারল্যান্ডসের ম্যাচের টুকরো চিত্র নয়। এটা শিলিগুড়ি শহরের বরাবরের দীপবলির রাতের ছবি একই থাকল। শিলিগুড়ি যে শিলিগুড়িতেই আছে,তা বোঝা গেল আবার।

দিনের বেলায় বিশেষ সাড়াশব্দ না হলেও, সন্ধের পর থেকেই শিলিগুড়ি ফিরল পুরনো ‘ফর্মেই’। পুলিশ প্রশাসনের চোখ এড়িয়ে পাড়ার অলিগলি থেকে বড় রাস্তা, বহুতলের ছাদ, আবাসন, ফাঁকা মাঠে পুড়ল দেদার শব্দবাজি বা নিষিদ্ধ বাজি। গত এক মাসে শহরে যে লক্ষ লক্ষ টাকার নিষিদ্ধ শব্দবাজি ঢুকেছে তা জলের মত পরিষ্কার হয়ে গেল। বিকেল থেকে শহরের বিভিন্ন মণ্ডপের এ দিনই উদ্বোধন হয়েছে। শিলিগুড়়ি পুলিশের থানা-ফাঁড়ির আবাসিক বা এলাকাবাসীর নানা পুজোর উদ্বোধনও চলেছে। তাতে ব্যস্ত থেকেছেন পুরসভা থেকে পুলিশ-প্রশাসনিক কর্তারা। আর তার মধ্যে শহর জুড়ে ফেটেছে নিষিদ্ধ শব্দবাজি।

শব্দদানবের আতঙ্ক কি এ বারও থাকবে, তা নিয়ে গত এক সপ্তাহ ধরেই চলছিল আলোচনা। শেষে, শব্দদানব পুরোপুরি ডেসিমেল বাড়িয়ে শব্দদৈত্যে পরিণত হল। পুলিশ ধরপাকড়ের চেষ্টা, সতর্ক করে গেলেও মরিয়া হয়েই বাজি পুড়িয়ে গেলেন শহরের এক দল বাসিন্দা। শিলিগুড়়ি পুলিশের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘দেওয়ালি এবং কালীপুজো একই রাতে থাকায় আনন্দ উৎসবে মেতেছিলেন শহরবাসী। আর এর সঙ্গে যোগ ছিল বাজির। পুলিশ সাধ্যমতো পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে গিয়েছে।’’

মোটামুটি সন্ধে ৭টা বাজতে না বাজতেই বাজির দাপট শুরু যায় শিলিগুড়ি জুড়ে। খালপাড়া, মিলনপল্লি, শক্তিগড়, বাবুপাড়া, দেশবন্ধুপাড়া, পাঞ্জাবিপাড়া, আশ্রমপাড়া, হাকিমপাড়া, প্রধাননগর, এনজেপি এলাকায় ব্যাপক হারে বাজি ফেটেছে। রাত বাড়তেই গেটবাজার, ভারতনগর, বর্ধমান রোড, স্টেশন ফিডার রোড, প্রণামী মন্দির রোড, নয়াবাজার, মাল্লাগুড়ি, সেবক রোড, দুই মাইল, হায়দারপাড়া, মহানন্দা পাড়া— কোনও এলাকা বাকি ছিল না।

পুলিশ সূত্রের খবর, রাতে পুলিশ কমিশনারেটের কন্ট্রোল রুমে অভিযোগও এসেছে। খবর পেয়েই এলাকায় ভ্যান গিয়েছে। তবে তা পৌঁছনোর আগেই বেশিরভাগ জায়গা ফাঁকা হয়ে গিয়েছে। এরসঙ্গে সঙ্গে সেবক রোড, জংশন, হিলকার্ট রোডে ছিল স্কুটি, বাইক নিয়ে একদল যুবক যুবতীর বেপরোয়া ঘোরাফেরা। কিছু জায়গায় গাড়ি, বাইক থামিয়ে যুবকদের বাজি ফাটাতেও দেখা দিয়েছে। প্রত্যেক এলাকার রাত যত বেড়েছে, সঙ্গে সঙ্গে শব্দদানবের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। কিছু জায়গায় এক নাগাড়ে বাজি পোড়ানো হয়েছে। সবুজ বাজির, আতশবাজিও দেদারে নিষিদ্ধ বাজির সঙ্গে ফেটেছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Siliguri Firecrackers

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy