Advertisement
E-Paper

আরও রক্ত দিতে হবে নির্যাতিতাকে

পুরোপুরি সুস্থ হতে আরও রক্ত দিতে হবে ধূপগুড়ির নির্যাতিতা আদিবাসী মহিলাকে। বর্তমানে জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে রাখা হয়েছে নির্যাতিতাকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৮ ০৪:৪৯

পুরোপুরি সুস্থ হতে আরও রক্ত দিতে হবে ধূপগুড়ির নির্যাতিতা আদিবাসী মহিলাকে। বর্তমানে জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে রাখা হয়েছে নির্যাতিতাকে। গত রবিবার রাতে অস্ত্রোপচার করে নির্যাতিতার গোপনাঙ্গের জখম সেলাই করা হয়েছে। অস্ত্রোপচারের আগে রক্ত দিতে হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, রক্তক্ষরণ এখনও বন্ধ হয়নি। তবে তাঁর শারীরিক পরিস্থিতি আপাতত স্থিতিশীল। সর্বক্ষণের নজরদারিতে রাখা হয়েছে। নির্যাতিতা যাতে মানসিক অবসাদ থেকে বের হয়ে আসতে পারেন সে জন্য কাউন্সেলিংও চলছে বলে জানানো হয়েছে।

নির্যাতিতার মে়ডিক্যাল পরীক্ষা হয়েছে বেশ কয়েকবার। প্রাথমিক রিপোর্টও জমা পড়েছে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, রিপোর্টে ধর্ষণের উল্লেখ রয়েছে। সেই সঙ্গে যৌনাঙ্গে ধারালো কিছু ঢুকিয়ে দেওয়া হয়ে থাকতে পারে বলেও পর্যবেক্ষণে জানানো হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, জেরায় ধৃত কবুল করেছে, সে ওই মহিলার শরীরে মাছ ধরার লোহার ফলা ঢুকিয়ে দিয়েছিল। তবে হাসপাতালের চূড়ান্ত রিপোর্ট এখনও জমা পড়েনি। পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে গোপনাঙ্গে অসংখ্য ক্ষত তৈরি হয়েছে। তাতেই রক্তপাত হয়ে চলেছে। চামড়ার উপরের অংশের অনেকটাই ছিঁড়ে গিয়েছে। জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, “শরীরের যে কোনও অংশের চামড়ার ওপর দিয়ে যদি বাঁশের টুকরো ঘষে দেওয়া হয় তবে যেমন ক্ষত হবে তেমনই ক্ষত রয়েছে মহিলার শরীরে। অস্ত্রোপচার করে অনেকটাই ঠিক করে দেওয়া হয়েছে।” মহিলার শরীরের বিভিন্ন অংশে ক্ষত, নখের আচঁড়ের চিহ্নও রয়েছে বলে দাবি।

গত রবিবার রাতে জলপাইগুড়ি জেলা সদর হাসপাতালে প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে যৌনাঙ্গের অস্ত্রোপচার হয়েছে। অভ্যন্তরীণ ক্ষতস্থানগুলো সেলাই করতে চিকিৎসকদের যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে বলেও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। দুই জন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের উপস্থিতিতে অস্ত্রোপচার হয়েছে।

পুলিশ ধর্ষিতা গৃহবধূকে আদালতে নিয়ে এসে গোপন জবানবন্দি নেওয়ার চেষ্টা চালালেও চিকিৎসকেরা এই বিষয়ে এ দিন অনুমতি দিতে রাজি হননি বলেও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে পুলিশ পরে জানিয়েছে বুধবার গোপন জবানবন্দি নেওয়া হতে পারে।

পুলিশ ধৃতদের দুই দিনের জন্য পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানায় আদালতের কাছে। এ দিন বিকেলে জলপাইগুড়ি মুখ্য বিচার বিভাগীয় আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক হিমনীল ভট্টাচার্য ধৃতদের দুই দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশ জানায়, ধৃতদের ফের ঘটনাস্থলে নিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণের চেষ্টা হবে।

এ দিকে ধূপগুড়ির ঘটনাকে গণধর্ষণ বলতে রাজি হননি পুলিশের একাংশ। তাঁদের দাবি, প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে একজনই ধর্ষণ করেছে, অন্যজন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল। আইনজীবীদের একাংশের দাবি, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী ধর্ষণের সময় অন্য কোনও ব্যক্তি সাহায্য করলে বা উপস্থিত থাকলে গণধর্ষণের মামলা রুজু করে সকলের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নিতে হবে। জেলা পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি বলেন, ‘‘মামলা শুরু হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের কী নির্দেশ রয়েছে তা জেনে নিশ্চয়ই পদক্ষেপ করা হবে।’’

এ দিন ধূপগুড়িতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা এই ঘটনার নিন্দা করেছেন। ওই আদিবাসী মহিলার বাড়িতেও গিয়েছেন কেউ কেউ।

Woman Treatment Blood
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy