Advertisement
০৩ মে ২০২৪

অর্পিতা দল সাজাবেন নিজ-হাতে

আগামিকাল, মঙ্গলবার বালুরঘাটে ফিরছেন দক্ষিণ দিনাজপুরে নতুন জেলা সভানেত্রী অর্পিতা।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নীহার বিশ্বাস
গঙ্গারামপুর শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৯ ০২:৫২
Share: Save:

একদিকে নতুন দায়িত্ব। অন্যদিকে দলনেত্রীর সবুজ সঙ্কেত। দুই অস্ত্রে এবার জেলায় পূর্ণোদ্যমে কাজ শুরু করার বার্তা দিলেন অর্পিতা ঘোষ। জানালেন, এবার দলের জেলা সংগঠনকে নতুন করে সাজাতে চান তিনি।

আগামিকাল, মঙ্গলবার বালুরঘাটে ফিরছেন দক্ষিণ দিনাজপুরে নতুন জেলা সভানেত্রী অর্পিতা। ওইদিনই তিনি বালুরঘাট কেন্দ্রে দলের পরাজয়ের ময়নাতদন্ত করবেন। দলীয় সূত্রেরই খবর, জেলা সংগঠনের খোলনলচে বদলে ফেলতে চান অর্পিতা। এই নির্বাচনে দলের যেসমস্ত পদাধিকারী কোনও কাজ করেননি, তাঁদের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে। এমনকি, একই অভিযোগে গঙ্গারামপুর ও বুনিয়াদপুরের দুই পুরপ্রধানকেও সরিয়ে দিতে পারেন অর্পিতা। যা নিয়েই জোর চর্চা শুরু হয়েছে দুই শহরে।

এবারের নির্বাচনে প্রায় ৩৩ হাজার ভোটে পরাজিত হয়েছেন অর্পিতা। মূলত গঙ্গারামপুর ও বুনিয়াদপুর পুরসভায় ব্যাপক ভোটে পিছিয়ে থেকে বিজেপির কাছে হেরেছেন তিনি। গত বৃহস্পতিবার গণনাকেন্দ্রে বসেই এ নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন অর্পিতা। সেদিনই এই দুই পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। গত শনিবার সন্ধেয় দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কালীঘাটের বৈঠক থেকে বিপ্লব মিত্রকে সরিয়ে অর্পিতাকে জেলা সভাপতি ঘোষণা করেন। তারপরেই জল্পনা তুঙ্গে উঠেছে, দুই পুরসভা থেকে বিজেপি লিড পাওয়ায় কোপ পড়তে পারে পুরপ্রধানদের উপরে। যদিও কলকাতা থেকে ফোনে অর্পিতা সরাসরি এর উত্তর না দিলেও তিনি বলেন, ‘‘দুই পুরসভাতেই আমরা বিপুল ভোটে পিছিয়ে গিয়েছি। জেলায় ফিরে দলীয় বৈঠকে এ নিয়ে নিশ্চয়ই আলোচনা করব।’’

দলীয় সূত্রে খবর, বিদায়ী জেলা সভাপতি বিপ্লবের ভাই প্রশান্ত মিত্র গঙ্গারামপুরের পুরপ্রধান। এই পুরসভার ১৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে মাত্র একটি ওয়ার্ডে তৃণমূল ২৩ ভোটের লিড পেয়েছে। বাকি সব ওয়ার্ডেই বিপুল ভোটে পেয়ে বিজেপি প্রায় ১২ হাজার ভোটের লিড নিয়েছে। প্রশান্তের নিজের ওয়ার্ডেও বিজেপি ১০৫ ভোটের লিড নিয়েছে। পাশাপাশি, বিপ্লব-ঘনিষ্ঠ বুনিয়াদপুর পুরসভার পুরপ্রধান অখিল বর্মণও নিজের ওয়ার্ডে প্রায় সাড়ে ৬০০ ভোটে পিছিয়ে যান। পাশাপাশি পুরসভার ১৪টি ওয়ার্ড মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার ভোটে বিজেপির থেকে পিছিয়ে গিয়েছে দল। অর্পিতা-ঘনিষ্ঠ নেতাদের দাবি, ভোটের প্রচার শুরু থেকে বুনিয়াদপুর শহরে অখিলরা যে প্রচারে নামেননি, সেই খবর পেয়েছেন অর্পিতা। এ নিয়ে অর্পিতা প্রচণ্ড ক্ষোভও প্রকাশ করেছিলেন বিপ্লবের কাছে। অখিলের অবশ্য দাবি, ‘‘দল যা ভাল বুঝবে করবে। শুধু এই পুরসভা নয়, গোটা রাজ্য জুড়েই খারাপ ফল হয়েছে।’’ গঙ্গারামপুর পুরসভা প্রশান্তের দখলে থাকলেও তারাও সেইভাবে প্রচারে নামেননি বলে অভিযোগ অর্পিতা-ঘনিষ্ঠ নেতাদের। ফলে এই শহরেও বিপর্যয় হয়েছে তৃণমূলের। এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে একাধিকবার প্রশান্তকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

একইসঙ্গে, দলের প্রাক্তন মন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তীর বিধানসভা এলাকা, বালুরঘাটেও বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে তৃণমূল। এই কেন্দ্রে তৃণমূলের ভোটবাক্সে যেন ধস নেমেছে। বালুরঘাট থেকে ৩৯ হাজার ভোট লিড পেয়েছে বিজেপি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE