বরুণ ভুজেল। ফাইল চিত্র।
জেলবন্দি মোর্চা নেতা বরুণ ভুজেলের ঠিক কী চিকিৎসা হয়েছিল, কারা করেছিলেন, তা নিয়ে বিশদে তদন্ত চায় পাহাড়-সমতলের প্রায় সব রাজনৈতিক দলই।
কালিম্পঙের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বরুণ ভুজেলের মৃত্যুর পরে অডিও বার্তা পাঠিয়ে বিমল গুরুঙ্গ সরাসরি রাজ্য সরকারকে দুষেছেন। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের অভিযোগ, রাজ্য সরকার ‘খুন’ করেছে বরুণকে। পাহাড়ের অন্য দলগুলি অবশ্য দোষারোপের পথে পা ফেলতে চায়নি। তাদের দাবি, মৃতের পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করলে তা খতিয়ে দেখা উচিত। জিটিএ-র প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান বিনয় তামাঙ্গও এই ঘটনার উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত চেয়েছেন।
বিনয় তামাঙ্গের তরফ থেকে এ দিন একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সেই বিবৃতিতে জিটিএ-র তদারকি চেয়ারম্যান হিসেবে নিজেকে উল্লেখ করেননি বিনয়। মোর্চার মুখ্য আহ্বায়ক হিসেবেই বিবৃতি জারি করেছেন। বিনয় বলেন, ‘‘ঘটনার উচ্চ পর্যায়ে খতিয়ে দেখা হোক।’’ গুরুঙ্গের মোকাবিলায় বিনয় বিবৃতিতে লিখেছেন, ‘‘কোনও আন্দোলন যেন আর একটিও প্রাণ না কাড়তে পারে। কাউকে মেরে অথবা কাউকে বিসর্জন দিয়ে আলাদা রাজ্য আসতে পারে না।’’
জিএনএলএফ থেকে সিপিআরএম-গোর্খা লিগ— সব দলের তরফ থেকেই তদন্তের দাবি উঠেছে। তবে পাহাড় নিয়ে রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা প্রক্রিয়া চলতে থাকায় দলগুলি সুর না-চড়ানোর নীতি নিয়েছেন। জিএনএলএফের এক নেতা বলেন, ‘‘বরুণের মৃত্যুর কারণ এখনও আমাদের কাছে পরিষ্কার নয়। তাই আগেভাগে কোনও দাবি করে আলোচনার পরিবেশে বিঘ্ন ঘটানো ঠিক হবে না।’’ সিপিআরএমের প্রবক্তা গোবিন্দ ছেত্রীর কথায়, ‘‘খুবই দুঃখজনক ঘটনা। এ ছাড়া আর কিছু বলার নেই।’’
সমতলের নেতারাও তদন্তের পক্ষপাতী। সিপিএমের দার্জিলিং জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকারের বক্তব্য, ‘‘বিচারাধীন কোনও বন্দির মৃত্যুর ঘটনা সব সময়েই খুবই স্পর্শকাতর এবং তদন্তসাপেক্ষ। এ ক্ষেত্রেও তাই হওয়া উচিত।’’ দলের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এ দিন উত্তরবঙ্গেই ছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপবাবু। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘‘বরুণ ভুজেল অসুস্থ হওয়ার পরেও তাঁর বাড়ির লোকের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। এক জন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির সুরক্ষা যে রাজ্যে নেই, সেই রাজ্যে গণতন্ত্রও নেই।’’
রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী তথা তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি গৌতম দেব দাবি করেছেন, ভাল চিকিৎসার জন্যই বরুণকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তাঁর আরও অভিযোগ, বরুণের মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে। গৌতমবাবু বলেন, ‘‘কেউ যদি রাজনীতি করতে চান, তবে সূর্য কেন দেরিতে উঠল, সেই প্রশ্নও তুলতে পারেন। তবে বরুণ ভুজেলের চিকিৎসার কোনও ত্রুটি হয়নি। তাঁর মৃত্যু আমাদের কাছেও শোকের।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy