Advertisement
E-Paper

পাহাড়ে ধনখড় পুরো নভেম্বরই

বিজেপির একটি সূত্রের খবর, রাজ্যপাল দার্জিলিঙে থাকাকালীন তাঁর সঙ্গে দেখা করে উত্তরবঙ্গে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে অভিযোগ জানানোর নির্দেশ আসতে পারে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব থেকেই। 

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০২০ ০৩:৫৬
রাজ্যপাল: জগদীপ ধনখড়।

রাজ্যপাল: জগদীপ ধনখড়।

পয়লা নভেম্বর দার্জিলিং পাহাড়ে যাচ্ছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। প্রশাসন সূত্রের খবর, সেখানে রাজভবনে তিনি পুরো নভেম্বর মাস কাটাবেন বলেই আপাতত ঠিক আছে। তার আগে আজ, বৃহস্পতিবার দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে তাঁর বৈঠক। ইংরেজ আমলে বড়লাটদের গ্রীষ্মাবাস ছিল যে রাজভবন, সেখানে শীতের মুখে কোনও রাজ্যপাল একটানা এত দিন থাকছেন, এমনটা সচরাচর দেখা যায় না। কাকতালীয় ভাবে, কয়েক দিন আগেই বিমল গুরুং কলকাতায় আত্মপ্রকাশ করেছেন। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, বিজেপির সঙ্গ ছেড়ে তিনি তৃণমূলের হাত ধরছেন। এই অবস্থায় রাজ্যপালের দার্জিলিং সফর নিয়ে তাই নানা মহলে গুঞ্জন উঠেছে। উত্তরবঙ্গে বিজেপির নেতা-সাংসদরাও জানিয়েছেন, তাঁরা দার্জিলিং গিয়ে দেখা করবেন রাজ্যপালের সঙ্গে। যার ফলে এই সফর অন্য মাত্রা পাবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। এই প্রেক্ষিতে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ প্রশ্ন তুলেছেন, এই সফরের পিছনে কোনও অভিসন্ধি নেই তো তাঁর? বিজেপি নেতাদের জবাব, অভিসন্ধি তো করে তৃণমূল।

চিনা সেনার সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত বিপুল রায়ের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে রাজ্যপাল সম্প্রতি আলিপুরদুয়ারে গিয়েছিলেন। বিপুলের বাবা-মা ও স্ত্রীকে সব মিলিয়ে ১১ লাখ টাকার অনুদান দেন তিনি। ঘটনাচক্রে, ঠিক তার কয়েক দিন আগেই রাজ্য সরকারের চাকরিতে যোগ দেন বিপুলের স্ত্রী রুম্পা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে তাঁর হাতে চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেন।

রাজ্যপালের দার্জিলিং সফরের কথা শুনে কোচবিহারের বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক বলেন, ‘‘অবশ্যই রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করব।’’ একই কথা জানিয়েছেন উত্তর মালদহের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু ও বৈষ্ণবনগরের বিধায়ক স্বাধীন সরকার।

উত্তরবঙ্গে ৫৪টি বিধানসভা আসন রয়েছে। এক বছর আগে লোকসভা ভোটে তার মধ্যে ৩৮টিতে এগিয়ে ছিল বিজেপি। এর মধ্যেই বিধানসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নেমেছে তারা। বিজেপির একটি সূত্রের খবর, রাজ্যপাল দার্জিলিঙে থাকাকালীন তাঁর সঙ্গে দেখা করে উত্তরবঙ্গে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে অভিযোগ জানানোর নির্দেশ আসতে পারে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব থেকেই।

তৃণমূলের পাল্টা বক্তব্য, এই সফরের পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকাটা অস্বাভাবিক নয়। রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী তথা উত্তরবঙ্গের শীর্ষস্থানীয় তৃণমূল নেতা গৌতম দেব বলেন, ‘‘দার্জিলিং রাজভবন রাজ্যপালদের গ্রীষ্মকালীন আবাস বলেই জানতাম। যদিও উনি শীতের শুরুতে আসছেন। উনি রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। আমরা আশা করব, এখানে এসে সাংবিধানিক কাজকর্মের মধ্যেই নিজেকে আবদ্ধ রাখবেন।’’ কোচবিহারের তৃণমূল জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘এমন একটা সময়ে তিনি কোনও রাজনৈতিক অভিসন্ধি বা চক্রান্ত নিয়ে আসেননি তো?’’ তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করার পরেই রাজ্যপালের এই দার্জিলিং সফর থেকে আমাদের ধারণা, এটা বৃহত্তর অভিসন্ধি। পাহাড়ে শান্তি নষ্ট করারও চক্রান্ত।’’ তৃণমূল সাংসদ মৌসম নুর বলেন, ‘‘উনি কী ঘোট পাকাবেন জানি না। তবে ঘোট পাকালে জবাব পাবেন।’’

কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্যও বলেন, ‘‘রাজ্যপালের যদি কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচিকে প্রভাবিত করার অভিপ্রায় থাকে, সেটা কোনও বিরোধী দলের কাছেই সমর্থনযোগ্য হবে না।’’ বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী অবশ্য জানিয়েছেন, সেখানে গিয়ে রাজ্যপাল কী করছেন, সেটা না দেখে আগাম মন্তব্য করতে চান না তিনি।

North Bengal Jagdeep Dhankhar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy