Advertisement
E-Paper

জিপিএস দেখে মায়ের কাছে অ্যাম্বুল্যান্স

লঙ্কাপাড়া, চ্যাঁচাখাতা, কুমারগ্রামের মতো প্রত্যন্ত এলাকা থেকে মাঝে মধ্যেই এমন অভিযোগ পাচ্ছিলেন স্বাস্থ্যকর্তারা। এ বার সে সব জায়গায় অন্তঃসত্ত্বাদের জরুরি পরিষেবা দিতে জিপিএস ট্র্যাকার দেখে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছে যাবে অ্যাম্বুল্যান্স।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৮ ০১:৪৫
জিপিএস ট্র্যাকার-যুক্ত এই নতুন অ্যাম্বুল্যান্সের পরিষেবা মিলবে জেলায়।

জিপিএস ট্র্যাকার-যুক্ত এই নতুন অ্যাম্বুল্যান্সের পরিষেবা মিলবে জেলায়।

পাহাড়ি রাস্তায় জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে পথ চিনে কখন আসবে অ্যাম্বুল্যান্স, সেই অপেক্ষায় তখনও জেগে লঙ্কাপাড়া। ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে গ্রামে পৌঁছতে এমনিতেই ঘণ্টা খানেকের বেশি লাগার কথা। তার উপরে রাতের অন্ধকারে পঁচিশ-ত্রিশ কিলোমিটার উজিয়ে কত ক্ষণে এসে পৌঁছবে অ্যাম্বুল্যান্স, তাও বোঝা যাচ্ছে না। ফোনের নেটওয়ার্কও সব সময়ে মিলছে না চালকের। স্ত্রীর প্রসব বেদনা যখন অসহ্য হয়ে উঠেছে, তখন আর কিছু না ভেবে বাধ্য হয়ে তাঁকে নিয়ে অটোয় চেপে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রওনা হলেন স্বামী। অস্ত্রোপচার শেষে সন্তানকে কোলে দিয়ে চিকিৎসক জানান, আর একটু এ দিক-ও দিক হলে জীবন সঙ্কটে পড়তেন মা ও শিশু।

লঙ্কাপাড়া, চ্যাঁচাখাতা, কুমারগ্রামের মতো প্রত্যন্ত এলাকা থেকে মাঝে মধ্যেই এমন অভিযোগ পাচ্ছিলেন স্বাস্থ্যকর্তারা। এ বার সে সব জায়গায় অন্তঃসত্ত্বাদের জরুরি পরিষেবা দিতে জিপিএস ট্র্যাকার দেখে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছে যাবে অ্যাম্বুল্যান্স। ফোন থেকে কেবল ১০২ ডায়াল করতে হবে। তা হলেই কল সেন্টার থেকে খবর যাবে চালকের কাছে। ওলা বা উবারের মতো তখন জিপিএস দেখে রাস্তা চিনে বাড়িতে পৌঁছে যাবে এই নতুন অ্যাম্বুল্যান্স। অ্যাম্বুল্যান্স কোথায় আছে রোগীর কাছে যেতে কত সময় লাগবে তার উপর নজর রাখা হবে কল সেন্টার থেকে। ফলে অ্যাম্বুল্যান্স আসতে দেরি হচ্ছে বলে যে অভিযোগ ওঠে তা অনেকটাই কমবে বলে আশা স্বাস্থ্যকর্তাদের।

মার্চ মাসের গোড়াতেই আলিপুরদুয়ার জেলায় চালু হতে চলছে জিপিএস ট্র্যাকার যুক্ত এই নতুন অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা। চালু থাকছে নিশ্চয়যান পরিষেবাও।

আলিপুরদুয়ার জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক পূরণ শর্মা জানান, বর্তমানে জেলায় ৭০টি নিশ্চয়যান কাজ করছে। তারা তাদের মতো কাজ করবে। সঙ্গে জেলায় ১২টি জিএপিএস ট্র্যাকার অ্যাম্বুল্যান্স আসবে। জেলা হাসপাতালে দু’টি, জয়গাঁ, মাদারিহাট, কুমারগ্রাম, পাঁচকেলগুড়ি, ফালাকাটা-সহ পুরো জেলায় বারোটি। অন্তঃসত্ত্বা ও সদ্যোজাত থেকে এক বছর বয়সী শিশুদের চিকিৎসার স্বার্থে চালু হচ্ছে নতুন এই পরিষেবা। তাতে মা ও শিশুদের জন্য অক্সিজেন ব্যবস্থা থাকছে। তা ছাড়াও চিকিৎসা সংক্রান্ত নানা সুবিধা, দু’জন করে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চালক ও দু’জন করে স্বাস্থ্যকর্মী থাকবে। ২৪ ঘণ্টা পরিষেবা পাওয়া যাবে এই অ্যাম্বুল্যান্স থেকে। তবে প্রত্যন্ত এলাকায় জিপিএস চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় ইন্টারনেট কানেকশন সব সময়ে মিলবে কিনা, সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে বাসিন্দাদের।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্তঃসত্ত্বাদের স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য তিনটি ভাউচার দেওয়া হয়। তা দেখিয়ে মায়েরা বিনামূল্যে নিশ্চয়যানে করে হাসপাতাল যাওয়ার সুবিধা পান। সদ্যোজাত শিশুদেরও এই পরিষেবা দেওয়া হয়। ওই ভাউচারেই এই পরিষেবাও পাওয়া যাবে। কিন্তু রোগীদের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, অনেক সময়েই চালককে ফোনে পাওয়া না গেলে বা তিনি অন্যত্র ব্যস্ত থাকলে নিশ্চয়যানের ঠিক সময়ে পৌঁছনোর নিশ্চয়তা পাওয়া যায় না। আবার হাসপাতাল থেকে ফেরার সময়ে শিশু-সহ দু’তিন জন প্রসূতিকে এক সঙ্গে না পেলে চালক যেতে চান না, এমন অভিযোগও মাঝে মধ্যে শোনা গিয়েছে। এই নতুন ব্যবস্থায় এ সমস্ত দিকেও নজর রাখা যাবে।

Alipurduar Ambulance GPS Tracker আলিপুরদুয়ার জিপিএস ট্র্যাকার অ্যাম্বুল্যান্স
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy