প্রতীকী ছবি।
খুশিনাথ হালদারের রেজিষ্ট্রেশন নম্বর যে ভুয়ো তা বছর দেড়েক আগেই টের পেয়েছিল জলপাইগুড়ি জেলা স্বাস্থ্য দফতর। আর তা বুঝতে পেরেই তড়িঘড়ি চাকরিতে ইস্তফা দেন। এরপর কিছুদিন গা ঢাকা দিয়ে থাকার পর ফের আলিপুরদুয়ারে প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসক হিসেবে যোগ দেন খুশিনাথ। মাস দুয়েক আগে আলিপুরদুয়ারের র শিশুবাড়ি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ওই চিকিৎসককে গ্রেফতার করে সিআইডি।
এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে সব জেনেও তখন কেন খুশিনাথের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেনি জলপাইগুড়ি জেলা স্বাস্থ্য দফতর?
জলপাইগুড়ির তৎকালীন জেলা মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক প্রকাশ মৃধা বর্তমানে রায়গঞ্জে কর্মরত। তিনি জানান, বিষয়টি নজরে আসতেই তিনি জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছিলেন। বর্তমানে জলপাইগুড়ির জেলাশাসক রচনা ভগত জানান, সেই সময় কী ঘটেছিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে জলপাইগুড়ির বেলাকোবায় চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োগ করা হয়েছিল খুশিনাথ হালদারকে। ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে খুশিনাথ হালদারের লেখা একটি ডেথ সার্টিফিকেট দেখে অন্য এক চিকিৎসকের সন্দেহ হয়। ডেথ সার্টিফিকেটে চিকিৎসকের রেজিস্ট্রেশন নম্বর লিখতে হয়। খুশিনাথ হালদার তার রেজিস্ট্রেশন নম্বর লিখেছিলেন ৯১২০৫। প্রকাশবাবু জানান, ওই চিকিৎসক তাঁকে চিঠি লিখে জানান সেই সময় শেষ পাস আউট চিকিৎসকদের রেজিষ্ট্রেশন নম্বর চলছে ৭২ হাজার। আর খুশিনাথ তার রেজিস্ট্রেশন নম্বর লিখেছিলেন ৯১ হাজার। বিষয়টি জানতে পেরেই খুশিনাথকে ডেকে পাঠান তিনি। আর তা জানা মাত্র বিএমওএইচ এর কাছে ইস্তফাপত্র দিয়ে চলে যায় খুশিনাথ। তিনি বলেন, ‘‘সঙ্গে সঙ্গেই বিষয়টি তৎকালীন জেলাশাসককে জানিয়ে কী কর্তব্য তা জানতে চেয়েছিলাম। তিনি তখন একটি তদন্ত কমিটি করার কথাও বলেছিলেন। এরপর ভোট এসে যায়। পরে জেলাশাসকও বদলি হয়ে যান।’’
বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে যেতেই অন্য রেজিস্ট্রেশন নম্বর নিয়ে আলিপুরদুয়ারে ফের চুক্তির ভিক্তিতে চিকিৎসক হিসেবে কাজে যোগ দেয় খুশিনাথ। আলিপুরদুয়ার জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, খুশিনাথ সম্পর্কে কোনও তথ্য জলপাইগুড়ি থেকে তাদের জানানো হয়নি। মঙ্গলবার আলিপুরদুয়ারের মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক পূরণ শর্মাকে প্রায় দেড় ঘন্টা জেরা করেন সিআইডি আধিকারিকরা। বেশ কিছু নথিও বাজেয়াপ্ত করেন। তিনপাতার একটি বয়ানে পুরো বিষয়টি জানান আলিপুরদুয়ারের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক।
পূরণ শর্মা জানান, তিনি ২০১৩ সালের মে মাসে জলপাইগুড়িতে কাজে যোগ দিয়েছিলেন, সেখান থেকে ২০১৫ সালের ফ্রেব্রুয়ারি মাসে আলিপুরদুয়ারে চলে আসেন। তাঁর জলপাইগুড়ি কাজে যোগ দেওয়ার আগে জলপাইগুড়ি জেলায় কাজে যোগ দিয়েছিল খুশিনাথ। এবং আলিপুরদুয়ারে আসার পরেও জলপাইগুড়িতে কাজ করে যাচ্ছিল ওই ভুয়ো চিকিৎসক। ফলে আলিপুদুয়ারে কাজ করতে এলে বিষয়টি নিয়ে তাঁর সন্দেহ হয়নি। ভুয়ো রেজিস্ট্রেশন সামনে আসাতেই যে জলপাইগুড়িতে কাজ ছেড়েছিলেন খুশিনাথ, তাও তিনি জানতেন না বলে দাবি করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy