বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলে রায়ডাক নদীতে ভেসে আসা হাতির মুন্ডু কাটা দেহ নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা কাটেনি বনর্কতাদের। কে বা কারা কোথায় ওই হাতিটির মাথা কেটে নিয়েছে সে সম্পর্কে কোনও স্পষ্ট সূত্র না মেলায় উদ্বিগ্ন বনদফতর।
এক বনকর্তা জানান, ভূটানে হাতির দাঁতযুক্ত মাথার খুলির চাহিদা রয়েছে। সেখানকার গুম্ফাতে ওই রকম হাতির মাথা শোভা পেতে দেখা যায়। হাতির মাথার খুলিতে প্রদীপ জ্বালানোর প্রচলন রয়েছে ভূটানে। সে দেশের বিভিন্ন বাড়িতেও হাতি সহ অন্য জীবজন্তুর দেহাংশ শোভা বাড়াতে ব্যবহার করা হয়। এ দিন যেখানে দেহটি মিলেছে সেখান থেকে ভূটানের দূরত্ব বড়জোর ৬ কিমি। তাই ভূটানে ওই হাতিটির মুন্ডু কেটে দেহটি নদীতে ভাসিয়ে দেওয়ার সম্ভাবনা একবারে উড়িয়ে দিতে পারছেন না বনকর্তারা। আবার বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলে চোরাশিকারিদের আনাগোনার বহু প্রমাণ রয়েছে। সেক্ষেত্রে দাঁত ও মাথার অংশ সংগ্রহ করার জন্য হাতিটির মাথা কেটে নিয়ে যেতে পারে চোরাশিকারিরা। এর সঙ্গে ভূটানের চোরা শিকারিদের যোগসূত্রও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। তবে বক্সার জঙ্গল থেকে পূর্ণ বয়স্ক হাতিটির মুন্ডু কেটে সেটি নিয়ে যেতে গাড়ির প্রয়োজন রয়েছে। এ সমস্ত দিকই খতিয়ে দেখছেন বনকর্তারা।
রাজ্যের বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ নিজেও এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন,‘‘এটা খুবই চিন্তার বিষয়। ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিকও। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে ঠিক কারা যুক্ত সেটা জানার চেষ্টা চলছে। তবে উত্তরের বনাঞ্চলে চোরাশিকারি রুখতে ভাল কাজ হচ্ছে। গত পাঁচ বছরে দু’শোরও বেশী চোরাশিকারি ধরা পড়েছে।’’
এই ঘটনার তদন্তে এসএসবি এবং পুলিশেরও সাহায্য নিচ্ছে বনদফতর। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ক্ষেত্র অধিকর্তা উজ্বল ঘোষ জানিয়েছেন, মুন্ডুহীন হাতির দেহ উদ্ধার হওয়ার পর, সবার আগে ঘটনাটি ঠিক কোথায় ঘটেছে এবং তা কাদের কাজ তা জানার চেষ্টা হচ্ছে। তদন্তের কাজে এসএসবি এবং পুলিশের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘ভূটানের দূরত্ব ঘটনাস্থলের কাছেই। সেদেশে হাতির দাঁত সহ মাথার খুলির চাহিদা রয়েছে। তাই নদীতে মুন্ডুকাটা দেহটি ভাসিয়ে দেওয়ার সম্ভাবনার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
শুক্রবার বিকালে টহল দিতে গিয়ে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের টিয়ামারি জঙ্গলে রায়ডাক নদীতে মুন্ডুহীন পূর্ণবয়স্ক পুরুষ হাতির দেহ দেখতে পান বনকর্মীরা। শনিবার হাতিটির ময়নাতদন্ত করে মুন্ডুহীন দেহটি রায়ডাক নদীর চরে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এ দিকে এই ঘটনার উপযুক্ত তদন্তের দাবি তুলেছেন বিভিন্ন প্রকৃতিপ্রেমী সংগঠন। ন্যাফের কো অর্ডিনেটর অনিমেষ বসু বলেন, ‘‘এই ঘটনায় আমরা রীতিমত উদ্বিগ্ন। আমরা চাই এর সঠিক তদন্ত হোক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy