E-Paper

পুজোয় বলি নিয়ে নির্দেশ উচ্চ আদালতের

কলকাতা হাইকোর্টের মুখ্য বিচারপতি টিএস শিবগণনম জানিয়ে দিয়েছেন, এ বছর যেন কড়া ভাবে বিধি মেনে পুজো হয়। ‘গণবলি’ দেওয়ার পক্ষে রায় দেয়নি আদালত। যদিও বলি বন্ধের বিরুদ্ধেও কোনও কথা বলেননি বিচারপতি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:৩৪
‘গণবলি’ দেওয়ার পক্ষে রায় দেয়নি আদালত।

‘গণবলি’ দেওয়ার পক্ষে রায় দেয়নি আদালত। — ফাইল চিত্র।

বোল্লাকালীর পুজোয় এ বছর বলি নিয়ে আরও সচেতন হতে নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। কলকাতা হাইকোর্টের মুখ্য বিচারপতি টিএস শিবগণনম জানিয়ে দিয়েছেন, এ বছর যেন কড়া ভাবে বিধি মেনে পুজো হয়। ‘গণবলি’ দেওয়ার পক্ষে রায় দেয়নি আদালত। যদিও বলি বন্ধের বিরুদ্ধেও কোনও কথা বলেননি বিচারপতি।

আজ, শুক্রবার রাতে বোল্লাকালীর পুজো। প্রতিমার এ বারের আকর্ষণ ভক্তদের দেওয়া প্রতিমার রুপোর মুণ্ডমালা, সোনার জিভ, এবং হিরের টিপ। পুজো কমিটির তরফে এ দিন দাবি করা হয়েছে, যাতে বলির বদলে উৎসর্গ করে ভক্তেরা পশু বাড়িতে নিয়ে যান সেই প্রচারে জোর দেওয়া হবে। যদিও বৃহস্পতিবার বিকেলে আদালতের নির্দেশের পরে প্রচারের কতটা সুযোগ থাকবে, সে প্রশ্ন উঠছে।

গত বছর থেকে বোল্লাকালীর পুজোয় বলি বন্ধে জনস্বার্থ মামলা চলছে। বৃহস্পতিবার সেই মামলার শুনানি ছিল কলকাতা হাই কোর্টে। প্রধান বিচারপতি টি এস শিবগণনম ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যের নির্দেশ —নির্দিষ্ট জায়গায়, মন্দির চত্বর থেকে দূরে, বলি দিতে হবে এবং একসাথে অন্য পশুর উপস্থিতিতে বলি দেওয়া যাবে না। পর্যাপ্ত নিয়ম ও শর্ত না মানলে মন্দিরের বলি সংক্রান্ত কমিটির বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার হুশিয়ারি দেন প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।

পুজোয় বলির পক্ষে সওয়ালকারী মন্দির কমিটির তরফে আইনজীবী কল্যাণ চক্রবর্তীর দাবি মন্দির কর্তৃপক্ষ কাউকে বলি দিতে উৎসাহিত করে না, সাধারণ মানুষ তাঁদের মনস্বকামনা পূরণের ও ঠাকুরের আশীর্বাদের জন্যে স্বেচ্ছায় পশুবলি দেয়। এই প্রথা যেহেতু বহু পুরোনো তাই একদিনে বন্ধ করা সম্ভব নয় বলেও দাবি করেন তিঁনি।
প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ৪০০ বছর আগের পরিস্থিতির সঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতির অনেক ফারাক। পশুবলি কমাতে কর্তৃপক্ষকে বলি দিতে আসা মানুষদের সচেতন করার উপদেশ দেন তিঁনি। একদিনে তা বন্ধ করতে গেলে মানুষের বিশ্বাসে আঘাত লাগতে পারে এবং তা শান্তি শৃঙ্খলায় প্রভাব পড়তে পারে বলেও জানায় আদালত। মানুষের চিন্তাভাবনা না পাল্টালে এই ধরনের প্রথা জোর করে বন্ধ করা প্রায় অসম্ভব বলে মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি টি এস শিবগণনম। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ বলির নির্দিষ্ট আইন মেনেই সংঘটিত করতে হবে এবং অনুমোদিত নির্দিষ্ট স্থানে বলি দিতে হবে। গত বছর বোল্লাকালীপুজোয় বিধিভঙ্গের অভিযোগে দু'জনের নামে এফআইআরও দায়ের করে পুলিশ। সেটি তদন্ত চলছে বলে পুলিশের দাবি।

কেন্দ্রীয় পশুকল্যাণ বোর্ডের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার সাম্মানিক সদস্য ব্রতীন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘২০–২৫টির বেশি বলি হলেই ‘গণবলি’ হিসেবে ধরা হবে। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে যেন পুজো হয় সে দাবি তুলব।’’ পুজো কমিটির ম্যানেজার মানস চৌধুরী বলেন, ‘‘উৎসর্গ প্রথার জন্য প্রচার চালাব।’’ জেলাশাসক বিজিন কৃষ্ণ বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশ পাইনি। আদালত যে ভাবে বলবে, সে ভাবেই পূজো হবে।’’ জেলা পুলিশ সুপার চিন্ময় মিত্তল বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশ দেখে মন্তব্য করব।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

High Court kalipuja puja

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy