Advertisement
E-Paper

তৈরি নয় সব স্টল, তবু উত্‌সাহের খামতি নেই উত্তরবঙ্গ বইমেলায়

রাত ৮টাতেও মেলার মূল গেটের একটির মাথায় উঠে আছেন ডেকোরেটর্স-র দুই কর্মী। সজোরে হাতুড়ে দিয়ে পেরেক ঠুকে ব্যস্ত সাদা, নীল কাপড় দিয়ে গেটের উপরের অংশ ঢাকতে। মেলার হাঁটার রাস্তার কোথাও মাটিতে পড়ে গড়াগড়ি খাচ্ছে লোহার গেট। কোথাও আবার আবার খালি বইয়ের ব্যাক্স। কোথাও বা ছড়িয়ে ছিটিয়ে প্ল্যাস্টিকের রশি বা কাটের বাক্সের ভাঙা অংশ। হাঁটার ক্ষেত্রে অবশ্যই সাবধানতা দরকার। বেশির ভাগ দোকানে বই সাজানোই হয়নি। অনেক স্টল আবার আলো জ্বললেও লোহের গেট দিয়ে তালা বন্ধ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৫ ০২:৩৭

রাত ৮টাতেও মেলার মূল গেটের একটির মাথায় উঠে আছেন ডেকোরেটর্স-র দুই কর্মী। সজোরে হাতুড়ে দিয়ে পেরেক ঠুকে ব্যস্ত সাদা, নীল কাপড় দিয়ে গেটের উপরের অংশ ঢাকতে। মেলার হাঁটার রাস্তার কোথাও মাটিতে পড়ে গড়াগড়ি খাচ্ছে লোহার গেট। কোথাও আবার আবার খালি বইয়ের ব্যাক্স। কোথাও বা ছড়িয়ে ছিটিয়ে প্ল্যাস্টিকের রশি বা কাটের বাক্সের ভাঙা অংশ। হাঁটার ক্ষেত্রে অবশ্যই সাবধানতা দরকার। বেশির ভাগ দোকানে বই সাজানোই হয়নি। অনেক স্টল আবার আলো জ্বললেও লোহের গেট দিয়ে তালা বন্ধ।

এই অবস্থাতেও শহরের বাসিন্দাদের উত্‌সাহের অবশ্য খামতি ছিল না। তার উপর যদি হয় বিনামূল্যে ঢোকার ব্যবস্থা। মেলার পরিকাঠামো ঠিকঠাক না হওয়ায় তাই শুক্রবার শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গ বইমেলার প্রথম দিন টিকিট ছাড়াই অবাধ প্রবেশ রাখলেন উদ্যোক্তারা। তাতেই রাত অবধি মেলায় ভিড় করে থাকলেন বাসিন্দারা। উপভোগ করলেন মূল মঞ্চের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছাড়াও সাহিত্যিক সুকান্ত গঙ্গোপাধ্যায়ের মুখোমুখি অনুষ্ঠান। নির্ধারিত সময়ের একটু বেশি রাত করেই বন্ধ হল মেলা। তখনও অবশ্য স্টল সাজানোর কাজ শেষ হয়নি।

বৃহস্পতিবার বিকালে অবশ্য উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের উপস্থিতিতে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছিলেন সাহিত্যিক সুকান্তবাবু। এর ২৪ ঘন্টার মধ্যে পরিকাঠামো ঠিকঠাক হয়ে যাবে আশা করেছিলেন, উদ্যোক্তারা। কিন্তু তা না হওয়ায় কিছুটা ‘হতাশ’ গ্রেটার শিলিগুড়ি পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের অনেক কর্তাই। বইমেলা কমিটির সম্পাদক লালবাহাদুর রায় বললেন, “মেলার প্রথম দিন এমনটা হয়। তবে সব কাজ শেষ করতে ডেকোরেটর্স সংস্থা একটু দেরি করে ফেলেছে এটাও ঠিক। আজ, শনিবার থেকে মেলা পুরোদস্তুর শুরু হয়ে যাবে। প্রথম দিন সব ঠিকঠাক না থাকায় আমরা টিকিট রাখিনি।”

উত্তরবঙ্গ বইমেলায় স্থানীয় থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক প্রকাশনা সংস্থা মিলিয়ে ৮৭টি স্টল থাকছে। এদিন রাত অবধি অবশ্য অধিকাংশ স্টল ঠিকঠাক সাজিয়ে উঠতে পারেননি বিক্রেতারা। তাঁরা জানান, মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পরের দিনই মেলা জমে যায়। এখানে তা ঠিকঠাক হয়নি। স্টলের পরিকাঠামো, কাপড়, আলোর কাজ রাত অবধি চলছে। তাই অনেকেই বই এনেও সাজাননি। মূল অনুষ্ঠান মঞ্চটাই ঠিকঠাক হয়েছে। এদিন মেলার একপ্রান্তে একদল যুবক যুবতীকে মাটিতে ত্রিপল পেতে বসে গান গাইতেও দেখা যায়। তাও ভিড় করে শুনতে দেখা যায়, বাসিন্দাদের।

এ বারের মেলা কতটা জমবে তা নিয়ে বিক্রেতা এবং উদ্যোক্তাদের একাংশের মধ্যে কিছুটা সংশয় রয়েছে। তাঁরা জানান, মার্চ মাসের একেবারে মাঝ বরাবর গরমের মধ্যে মেলা হচ্ছে। আবার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হয়ে গিয়েছে। বহু স্কুলের পরীক্ষার মরশুম চলছে। সেখানে কচিকাঁচাদের নিয়ে মেলায় অভিভাবকেরা কতটা আসবেন তা নিয়ে অবশ্য সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে। বিশেষ করে গরমের দুপুর বেলায় কতটা ভিড় হবে তা নিয়ে চিন্তায় বিক্রেতারা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও প্রসঙ্গটি উঠেছিল। উদ্যোক্তাদের দাবি, কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের মেলা প্রাঙ্গণ না মেলায় এবারে মেলা করতে দেরি হয়েছে। আগামী বার যাতে আগাম মাঠ বুকিং করে রাখা হয় সেই কথা মন্ত্রী জানিয়ে দিয়ে গিয়েছেন।

মেলা কমিটির অন্যতম উদ্যোক্তা মধূসুদন সেন বলেন, “আজ, শনিবার আর পরেরদিন রবিবার, এই দুই দিনে আমাদের আশা মেলা জমে যাবে। আরও একটা শনিবার, রবিবার ছুটির দিন আমরা পাব। আগামীবার আরও আগে পুরো শীতের সময় মেলা করার চেষ্টা করব।” আগামী ২২ মার্চ অবধি বইমেলা চলবে। প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা অবধি মেলা খোলা থাকবে। দুটি রবিবার খোলা থাকবে রাত ৯টা অবধি। প্রতিদিন মেলার মূল মঞ্চে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও হবে।

siliguri book fair
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy