Advertisement
E-Paper

টোটোর দাপটে নাভিশ্বাস উঠছে শিলিগুড়ির

শহরবাসীদের অভিযোগ, পুলিশ-প্রশাসন-পুরসভার একাংশের উদাসীনতার জেরেই শিলিগুড়ির জনজীবন টোটো ভারাক্রান্ত হয়ে উঠেছে। নাগরিকদের বক্তব্য, পুলিশকে বলা হলে পুরসভাকে দোষারোপ করা হচ্ছে। পুরসভা দুষছে পরিবহণ দফতরকে। আবার পরিবহণ দফতর দায় চাপিয়েছে নেতাদের উপরে।

ভোগান্তি: শিলিগুড়ি হিলকার্ট রোডে প্রবল যানজটে চলছে অপেক্ষা। নিজস্ব চিত্র

ভোগান্তি: শিলিগুড়ি হিলকার্ট রোডে প্রবল যানজটে চলছে অপেক্ষা। নিজস্ব চিত্র

কিশোর সাহা

শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৮ ০৮:১০
Share
Save

রোজ গড়ে ৫ ঘণ্টা টোটো চালালেই খরচ বাদ দিয়ে হাতে কমপক্ষে ৪-৫ শো টাকা এসে যেতে পারে। তাতেই প্রতিদিনই হুহু করে শিলিগুড়িতে টোটোর সংখ্যা বাড়়ছে। বড় রাস্তা বা ছোট গলি, সকাল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত টোটোর স্রোত বইছে। হাসপাতাল, নার্সিংহোম, স্কুল-কলেজ, দোকান, পাড়ার অলিগলিতেও টোটোর সারি।

শহরবাসীদের অভিযোগ, পুলিশ-প্রশাসন-পুরসভার একাংশের উদাসীনতার জেরেই শিলিগুড়ির জনজীবন টোটো ভারাক্রান্ত হয়ে উঠেছে। নাগরিকদের বক্তব্য, পুলিশকে বলা হলে পুরসভাকে দোষারোপ করা হচ্ছে। পুরসভা দুষছে পরিবহণ দফতরকে। আবার পরিবহণ দফতর দায় চাপিয়েছে নেতাদের উপরে। আর গতিহীন হয়ে পড়ছে শিলিগুড়ির নগরজীবন।

মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘শহরে ট্রাফিক পরিষেবার মান কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে তা যে কোনও নাগরিক একদিন সকালে কোর্ট মোড় থেকে দার্জিলিং মোড় কিংবা হাসমি চক থেকে দুই মাইলের দিকে যাতায়াত করলেই টের পাবেন। আমি কতবার পুলিশ, পরিবহণ দফতরের অফিসারদের বৈঠকে আসার অনুরোধ করেছি। কেউ সাড়া দেন না।’’

নাগরিকদের এখনকার অভিজ্ঞতাও তেমনই। চম্পাসারির কলেজ পড়ুয়া সরিতা শর্মা, মণীষা ছেত্রী, সুরভি সরকাররা রোজ কলেজে যাতায়াত করতে সমস্যা পড়েন। ওঁরা বলেন, ‘‘মিলন মোড় থেকে চম্পাসারি পেরিয়ে মহানন্দা সেতু যেতেই এক-দেড় ঘণ্টা লেগে যায়। রাস্তার ধারে শয়ে-শয়ে টোটো দাঁড়িয়ে থাকে। কিছুদূর অন্তরই টোটো ও অটো স্ট্যান্ড। পুলিশ-প্রশাসন কেন পদক্ষেপ করে না বুঝি না।’’ সূর্য সেন কলেজ, মুন্সি প্রেমচন্দ কলেজ, ডাবগ্রামের মহিলা কলেজের পড়ুয়াদেরও ক্ষোভ, টোটো, অটোর বেপরোয়া আচরণ রুখতে সমস্যা কোথায় সেটা নেতা-মন্ত্রীরা খোলসা করে বলছেন না। এই পরিস্থিতিতে হাজার-হাজার টোটোয় শিলিগুড়ির রাস্তাঘাট, পাড়ার অলগিলি ছেয়ে যাবে কিনা সেই প্রশ্ন তুলেছেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মাস অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রধান দেবব্রত মিত্র। তিনি বলেন, ‘‘টোটো, অটো সবই নাগরিক জীবনের অঙ্গ। কিন্তু, মাত্রা ছাড়া হলে সেটাই জনপদের সঙ্কট হয়ে দাঁড়ায়। নেতা-মন্ত্রীরা আসরে নামলে টোটো-অটো নিয়ন্ত্রণ হতে পারে।’’

টোটোচালক, মালিকদের কয়েকজন জানান, অন্য কাজের ফাঁকে সকালে, সন্ধ্যায় কয়েক ঘণ্টায় টোটো চালিয়ে কয়েকশো টাকা বাড়তি আয় করা যায়। কোনওমতে ধারদেনা করে, লাখখানেক টাকা জোগাড় করে টোটো কিনে ফলেছেন অনেকেই। তাঁরাও মনে করেন, রোজ নতুন কত টোটো শহরে বিক্রি হচ্ছে, কারা কিনছেন, কোথায় চালাতে চাইছে সেটার হিসেব না থাকলে শিলিগুড়ি একদিন ‘টোটো-শহর’ হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠবে। শিলিগুড়ি ট্রাফিক পুলিশের ডিসি নগেন্দ্র ত্রিপাঠী অবশ্য বিধি ভেঙে টোটো চালানো, বেআইনি পার্কিং রুখতে রোজই অভিযান চলছে বলে দাবি করেছেন।

Siliguri Toto Traffic Jam

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}