Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

স্ত্রীর চোখের সামনেই খুন

হাহাকার: সুবোধ বাইনের দেহ ঘিরে শোকার্ত পরিজনেরা। নিজস্ব চিত্র

হাহাকার: সুবোধ বাইনের দেহ ঘিরে শোকার্ত পরিজনেরা। নিজস্ব চিত্র

মেহেদি হেদায়েতুল্লা
ডালখোলা শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৯ ০৬:২৮
Share: Save:

কীর্তন দেখে বাড়ি ফেরার পথে মঙ্গলবার রাতে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হলেন সূর্যাপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান সুবোধকুমার বাইন (৬২)। উত্তর দিনাজপুরের ডালখোলা থানার হাসান গ্রামের ঘটনা।

রাত ১১টা নাগাদ সুবোধবাবু তাঁর স্ত্রী নীরা বাইনকে সঙ্গে করে নিয়ে পাশের গ্রাম থেকে একটা কীর্তন দেখে ফিরছিলেন। বাড়ির কাছাকাছি পৌঁছতে দুষ্কৃতীরা তাঁর বাইক দাঁড় করিয়ে খুব কাছ থেকে গুলি করে। সুবোধবাবু লুটিয়ে পড়েন। ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মারা যান। নীরাদেবী ভেঙে পড়েছেন। তাঁর চোখের সামনে দুষ্কৃতীরা স্বামীর মাথায় গুলি করে।

এই ঘটনার পরেই রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। তৃণমূলের দাবি, এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত উত্তম সরকার বিজেপির কর্মী। যদিও বিজেপি তা অস্বীকার করেছে। উত্তমবাবুকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের স্ত্রী অভিযোগের ভিত্তিতে উত্তমবাবুকে সরকারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ উত্তম সরকারকে সাত দিনের পুলিশ হেফাজত নিয়েছে।

এই খুনের পিছনে বেশ কিছু তথ্য পেয়েছে পুলিশ। উত্তর দিনাজপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কার্তিকচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘উত্তম পুলিশের জেরায় খুনের ঘটনা কবুল করেছেন।’’ পুলিশ সূত্রে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, উত্তমবাবুর সঙ্গে গ্রামের এক বিবাহিত মহিলার সম্পর্ক ছিল। এই নিয়ে গ্রামে সালিশি সভাও হয়। সেই সালিশি সভায় ছিলেন সুবোধবাবুও। পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘সুবোধবাবুর পরামর্শে ওই মহিলা উত্তমবাবুর বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করে। উত্তমবাবু বেশ কিছু দিন জেল হাজতে ছিলেন। কিছু দিন আগে জেল থেকে ছাড়া পান। তা নিয়ে ক্ষোভ ছিল। সেই ক্ষোভ থেকে সুবোধবাবুকে হত্যা করে।’’ তবে আর কোনও কারণ রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

মন্ত্রী গোলাম রব্বানি দাবি করেন, এই খুনের পিছনে বিজেপির হাত রয়েছে। চাকুলিয়া ব্লক কংগ্রেস নেতা ভোলা রায়ের অভিযোগ, ‘‘বিজেপি চক্রান্ত করে সুবোদবাবুকে খুন করেছে। অভিযুক্ত উত্তম বিজেপির কর্মী।’’ যদিও জেলা বিজেপির সহ সভাপতি সুরজিৎ সেনের দাবি, ‘‘উত্তম সরকার আমাদের দলের সঙ্গে যুক্ত নয়। তৃণমূল অপ্রচার করছে। এই খুনের পিছনে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল রয়েছে। পুলিশ প্রকৃত ঘটনার তদন্ত করলে সবটাই পরিষ্কার হয়ে যাবে।’’

চাকুলিয়ার ফরওয়ার্ড ব্লকের বিধায়ক আলি ইমরান রমজ (ভিক্টর) বলেন, ‘‘এলাকার প্রভাব ছিল সুবোধবাবুর। কিন্তু একটা সালিশি সভার জন্য কেন খুন করা হবে? এর পিছনে গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে। সুর্যাপুর রেলের রেক পয়েন্ট চালানো নিয়ে দুটি সিন্ডিকেট রয়েছে। একটি বিজেপি এবং একটি তৃণমূলের। ঘটনার সঙ্গে তার সুত্র থাকতে পারে।’’ তৃণমূলের নেতারা অবশ্য সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ভিক্টরের ক্ষোভ, ‘‘তৃণমূলের সরকারের আমলে অবাধে অস্ত্র এলাকায় ঢুকে পড়ছে। কোন নিয়ন্ত্রণ নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Dalkhola
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE