নদীর বুকে বিভিন্ন অংশে নিয়ম ভেঙে ‘বাঁধ’ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ, বেআইনি সেই বাঁধ দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে পারাপার চলছে স্কুলপড়ুয়া, অভিভাবকদের। শিলিগুড়ির নকশালবাড়িতে খেমচি নদীতে। অভিযোগ, নদীতে এমন বাঁধের নির্মাণ বেআইনি। কারা, কেন এমন বাঁধ দিয়েছে, তা জানে না সেচ দফতর। নদীতে বাঁধ দিয়ে পাশের এলাকার জমি দখলের ছক রয়েছে কিনা, খতিয়ে দেখার দাবি উঠেছে।
সম্প্রতি খেমচি নদীর তীর সাজানোর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি অরুণ ঘোষ। খেমচির তীরে দুই কোটি টাকা খরচে কালীবাড়ি পার্কে পাঁচিল দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়। তার উল্টো দিকে কিছু জমি পড়ে রয়েছে। সেই জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে অনেক বার। সেই এলাকায় যেতে হলে প্রধান রাস্তা ধরে ঘুরে যেতে হয়। কালীবাড়ি পার্ক থেকে সরাসরি যেতে হলে নদী পার করতে হয়। সে জন্যই নদীর বুকে কয়েকটি বাঁধ দেওয়া হয়েছে কিনা, সেই প্রশ্ন উঠছে। যদিও সভাধিপতির বক্তব্য, ‘‘বেআইনি বাঁধ তৈরি করা হলে তা ভাঙা হবে। নদীর চর দখলের অভিযোগ উঠলে সেচ দফতরকে বলে খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেব।’’
খেমচি নিয়ে ‘আক্ষেপ’ রয়েছে নকশালবাড়ির বাসিন্দাদের একাংশের। ওই নদী নকশালবাড়ি বাজার এলাকা ঘিরে রয়েছে। যে খেমচি এক সময় দু’কুল ভাসিয়ে নিয়ে যেত, তার কঙ্কালসার অবস্থা নিয়ে ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের অনেকে। অভিযোগ, খেমচির তীরে নানা নির্মাণ, পাঁচিল দেওয়ায় নদী সরু হয়ে গিয়েছে। বিভিন্ন অংশে আবর্জনায় নদীর গতি প্রায় বন্ধ। প্রতিমা বিসর্জনের পরে সাফাইও হয় না বলে অভিযোগ।
এলাকাবাসী একাংশের আশঙ্কা, নদীর মাঝে বাঁধ তৈরি করা হলে তার গতিপথ ঘুরে যেতে পারে। বন্যায় বড় ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কাও থাকবে। তা নিয়ে চিন্তায় নকশালবাড়ির অনেকেই। তাঁরা দ্রুত সেচ দফতর এবং প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।
নকশালবাড়ির ব্যবসায়ী সমিতির তরফে ধর্মেন্দ্র পাঠক, নিখিল ঘোষ বলেন, ‘‘নদীটিকে দেখলে খারাপ লাগে। নদী বাঁচানোর কোনও উদ্যোগ নেই। দিনের পর দিন নদীর চর দখল হয়ে যাচ্ছে।’’ সেচ দফতরের শিলিগুড়ির এক আধিকারিক বলেন, ‘‘লিখিত কোনও অভিযোগ পাইনি। তবে খতিয়ে দেখতে বলব।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)