Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

১০ টাকাতেই ময়ূরের পালক, ভিড় রাসমেলায়

বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বেশ কয়েক বছর আগে ময়ূরের পালক ব্যবহার করে দুর্গাপুজো থেক কার্তিক পুজোয় মাটির পাখিকে সাজানোর একটা প্রবণতা বিভিন্ন জায়গায় দেখা যেত। যার জেরেই মূলত পালক সংগ্রহের হিড়িক পড়ে যেত।

অবাধে মেলার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে ময়ূরের পালক। নিজস্ব চিত্র

অবাধে মেলার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে ময়ূরের পালক। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৪৯
Share: Save:

কোথাও ফেরি করে বিক্রি করা হচ্ছে। কোথাও আবার মাঠের এক কোণে বসে ক্রেতাদের ডাকা হচ্ছে। রাসমেলা জুড়ে মাত্র ১০ টাকাতে ময়ূরের পালক বিক্রির এমন রমরমা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছেন পরিবেশপ্রেমীরা। তাদের একাংশের বক্তব্য, বন্যপ্রাণীর দেহাংশ বিক্রি বন্ধে বাসিন্দাদের সচেতনতা বাড়ান দরকার। তা হয়নি বলেই রাজ্যের বনমন্ত্রীর নিজের জেলা কোচবিহারের রাসমেলায় জাতীয় পাখির পালক বিক্রির কারবার শুরু হয়েছে।

বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন অবশ্য বলেছেন, “পুরো বিষয়টি বিশদে খোঁজ নিয়ে দেখছি।” কোচবিহারের ডিএফও বিমান বিশ্বাসও ওই ব্যাপারে খোঁজ নেবেন বলে জানিয়েছেন। পরিবেশপ্রেমীদের একাংশের কথায়, আগেও এমন কারবারীরা রাসমেলায় পালক বিক্রি করেছে বিনা আপত্তিতেই। তাই এবারেও তারা পসরা নিয়ে এসেছেন। বনকর্মীরা সতর্ক নজরদারি চালালেই পালক বিক্রির কারবার স্পষ্ট হবে। পাশাপাশি ওই উদ্যোগেই বন্যপ্রাণ রক্ষা নিয়ে জোরাল বার্তাও তুলে ধরা সম্ভব হবে।

বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বেশ কয়েক বছর আগে ময়ূরের পালক ব্যবহার করে দুর্গাপুজো থেক কার্তিক পুজোয় মাটির পাখিকে সাজানোর একটা প্রবণতা বিভিন্ন জায়গায় দেখা যেত। যার জেরেই মূলত পালক সংগ্রহের হিড়িক পড়ে যেত। এমনকী ময়ূরের অস্তিত্ব নিয়ে সংকটের অবস্থাও তৈরির আশঙ্কায় উদ্বেগ বেড়ে যায়। ওই ঘটনার জেরেই পালক বিক্রি নিয়ে কড়াকড়ি শুরু হয়।

পরিবেশপ্রেমী সংগঠন ন্যাফের মুখপাত্র অনিমেষ বসু বলেন, “সৌন্দর্যের টানেই ময়ূরের পালকের চাহিদা দেখা যায়। জাতীয় পাখি ময়ূরের পালক বিক্রি পুরোপুরি ভাবেই বেআইনি। শুধু তাই নয়, বকের পালক দিয়ে ঢাকিদের ঢাক সাজানও বেআইনি হিসেবেই ধরা হয়।”

পরিবেশপ্রেমী সংস্থা ন্যাসগ্রুপের সম্পাদক অরুপ গুহ বলেন, “বন্যপ্রাণীর দেহাংশ রাখা, কেনা-বেচা দু’টিই নিষিদ্ধ। রাসমেলায় এবারেও ময়ূরের পালক বিক্রি হচ্ছে। জেনকিন্স স্কুল, স্টেডিয়াম, মদনমোহন বাড়ি সংলগ্ন এলাকায় প্রকাশ্যে বিক্রেতারা ঘুরছেন। ওই প্রবণতা বন্যপ্রাণী সুরক্ষার পক্ষে উদ্বেগজনক। বন দফতরের এনিয়ে অভিযান চালান উচিত। পাশাপাশি সচেতনতাও বাড়ানো দরকার।”

বিক্রেতারা কী বলছেন?

ক্রেতা ধরতে তাঁদের একজন বলছেন, আসলে ময়ূরের পালক রাখা মঙ্গলজনক। তিনি বলেন, ‘‘তবে এ সবই কলকাতার বাজার থেকে কিনে সামান্য লাভে বিক্রি করছি।’’ কিন্তু এভাবে ওই আসল পালক বিক্রি কি করা যায়? পরিস্থিতি সামলাতে তার দাবি, ‘‘আমার কাছে আসল পালকই নেই।’’ পরিবেশপ্রেমীরা জানান, ঘর সাজানো, হাতের কাজের সৌন্দর্যায়ন, খাতায় লাগান ছাড়াও বাড়িতে বিগ্রহের পাখা তৈরি সহ নানা শখ মেটাতে ওই পালক বিক্রি হয়। সবই খতিয়ে দেখা উচিত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE