Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Bimal Gurung

কর্তৃত্ব কায়েমে টক্কর যুব মোর্চায়

বিমল গুরুং আর বিনয় তামাং-এর সঙ্গে শুরু হয়ে গিয়েছে যুব মোর্চার এলাকা দখলের লড়াই৷

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

কৌশিক চৌধুরী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২১ ০৪:৪৯
Share: Save:

বিমল গুরুং আর বিনয় তামাং-এর সঙ্গে শুরু হয়ে গিয়েছে যুব মোর্চার এলাকা দখলের লড়াই৷ একপাশে প্রকাশ গুরুং, দ্বীপেন মালে আর একদিকে অলককান্তমণি থুলুং, কেশব পোখরেল। রোজই দলীয় দফতর দখলের চেষ্টা থেকে দল ভাঙানোর খেলা চলছে বলে অভিযোগ। গুরুং থেকে তামাং- দুই শিবিরই এ বার সক্রিয় যুব মোর্চার কর্মীদের সামনে রেখেই পাহাড়ের নিয়ন্ত্রণ হাতে নিতে। এতে পুলিশ-প্রশাসনের কাছে গোলমালের আশঙ্কা বাড়ছে প্রতিদিনই।

আগামী ৩ জানুয়ারি গুরুং-এর খাসতালুক তাকভারে সভার ডাক দিয়েছেন বিনয়পন্থী যুব মোর্চার। সেখানে পাহাড়ের পর সমতলেও সংগঠন বিস্তারের কাজে যুব মোর্চাকে গুরুং নামিয়ে দিয়েছেন। মুখে অবশ্য দুই পক্ষ শান্তির পরিবেশ বজায় রাখার ডাক দিচ্ছেন। মোর্চা সূত্রের খবর, দার্জিলিং, কালিম্পং শহরের বাইরে ঘুম, বিজনবাড়ি, গোখ, পান্ডাম, ফুবশেরিং, লেবং, তাকভরে জোর নিজেদের কর্তৃত্ব ধরে রাখতে টানাপড়েন শুরু হয়েছে।

দু’দিন আগেই পান্ডাম এলাকায় যুব মোর্চার একটি দফতর নিয়ে দুই পক্ষের গোলমাল বাধে। ২০১৭ সালের আন্দোলনের পর থেকে অফিসটি বন্ধ ছিল। ঘটনার দিন সকাল বিমলপন্থী যুব মোর্চার সদস্যরা সেটি খুলে বসে পড়েন। সন্ধ্যার মধ্যে সেটির আবার দখল নেন বিনয়পন্থী যুব মোর্চার কর্মীরা। তাঁরা দাবি করেন, বিনয়পন্থী একজনের ব্যক্তিগত জমিতে দফতরটি রয়েছে। সেটি জোর করে দখলের চেষ্টা হয়েছে। এলাকায় উত্তেজনাও ছড়ায়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

বিনয়পন্থী যুব মোর্চার নেতা অলককান্তমণি থুলুং বলেন, ‘‘আমরা চাইলে এতদিনে পাতলেবাস, সিংমারি দফতর দখল করে বসে পড়তে পারতাম। আমরা তা করিনি। ওই দু’টি দফতর ব্যক্তিগত কারও নামে রয়েছে বলে জানি। অথচ সেখানে উল্টো কাজ করা হচ্ছে। এমনটা চললে তো আমরাও আগামীতে অন্যরকম ভাবব।’’ নতুন বছরের আগের দিনই পুল-বিজনবাড়ির এক যুব নেতা ভক্ত যোগী বিনয় শিবির ছেড়ে বিমল শিবিরে ঢুকেছেন। বিনয়পন্থীরা এঁদেরকে সুবিধাবাদী বলে অভিযোগ করেছেন। তেমনই, শিলিগুড়ি-তরাই এলাকার যুব মোর্চার কমিটি গঠন করে ফেলেছেন বিমলপন্থীরা। দীর্ঘদিন বসে থাকা যুব কর্মীরা মেডিক্যাল মোড়ে সভা করেছেন। বিনয় শিবির অবশ্য এখন তরাই-র বদলে পাহাড়ে বেশি নজর দিয়েছেন। এর কারণ গুরুংপন্থীদের কথায় স্পষ্ট। যুব নেতা প্রকাশ গুরুং বলে দিয়েছেন, ‘‘বিমল গুরুং-র নেতৃত্বেই যুব সমাজ পতাকার তলায় শক্তিশালী হয়ে উঠছে।’’

২০০৭ সালের অক্টোবর মাসে মোর্চা গঠনের পর প্রথমে নারী মোর্চাকে শক্তিশালী করেছিলেন গুরুং। প্রতিটি আন্দোলন, কর্মসূচিতে নারী মোর্চার সদস্যরা সবার আগে থাকত। তাঁর স্ত্রী আশা গুরুং ২০১৭ সালে পাহাড় ছাড়ার আগে অবধি নারী মোর্চার সভানেত্রী ছিলেন। গত সাড়ে তিন বছরে নারী মোর্চা অবশ্য কিছুটা বিক্ষিপ্ত হয়ে পড়ায় এ বার পাহাড়ে ফিরে গুরুং যুব মোর্চাকে শক্তিশালী করতে সক্রিয় হয়েছেন। সেখানে একদল ঘরছাড়ারা পাহাড়ে ফিরে সংগঠনের হাল ধরেছেন। তেমনই, বিনয় শিবির থেকে দল ভাঙানো ছাড়াও নিষ্ক্রিয় হয়ে বসে পড়া কর্মীদেরও মূলস্রোতে ফিরিয়ে প্রায় প্রতিদিন এলাকা ধরে ধরে কমিটি গঠন চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bimal Gurung Binay Tamng Conflict
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE