সংঘর্ষে তৃণমূলের দু’পক্ষের অন্তত পাঁচজন কর্মী জখম হয়েছেন। প্রতীকী ছবি।
খাসজমি দখলকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে গুলি, বোমাবাজিতে উত্তেজনা ছড়াল রায়গঞ্জ শহর লাগোয়া এলাকায়। বৃহস্পতিবার রাত ১০টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে রায়গঞ্জ থানার গৌরি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিশাহার এলাকায়। সংঘর্ষে দু’পক্ষের অন্তত পাঁচজন কর্মী জখম হয়েছেন।
খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নিকিতা ফোনিংয়ের নেতৃত্বে রায়গঞ্জের ডিএসপি প্রসাদ প্রধান ও আইসি সুরজ থাপা-সহ বিরাট পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে দু’পক্ষের সদস্যদের তাড়া করে। পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশকেও গুলি চালাতে হয় বলে তাদেরই একটি সূত্রে জানা গিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে পুলিশের সামনেই দুই গোষ্ঠী ফের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সেই সময় পুলিশ শূন্যে কয়েক রাউন্ড গুলি চালিয়ে দু’পক্ষের লোকেদের হটিয়ে দেয়। সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে রাতেই বিশাহার ও কাচিমূহা থেকে দু’পক্ষের দুই তৃণমূল সমর্থককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম ঝরু মহম্মদ ও পারভেজ আলম।
উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্যের দাবি, ‘‘জমি দখলকে কেন্দ্র করে ওই এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে গন্ডগোল হয়েছে। তার সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। পুলিশ আইন অনুযায়ী অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক।’’
উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার সুমিত কুমার বলেন, ‘‘পুলিশ গুলি চালায়নি। জমি দখলকে কেন্দ্র করে ওই এলাকার দুই গোষ্ঠীর সদস্যরা পরস্পরকে লক্ষ্য করে বোমাবাজি করেছে বলে অভিযোগ পেয়েছি। দু’পক্ষের সদস্যদের মধ্যে মারপিটও হয়েছে। তবে কোথাও গুলি চালানোর কোনও প্রমাণ মেলেনি। দু’পক্ষের মোট তিনটি অভিযোগের ভিত্তিতে দু’জনকে গ্রেফতার করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’’
পুলিশ জানিয়েছে, বিশাহার এলাকায় ৫১ শতক করে তিনটি প্লটে খাসজমি রয়েছে। গত কয়েক দশক ধরে ওই তিনটি জমি নওসাদ আলি, ফারুক মহম্মদ ও সায়রত আলি নামে তিন তৃণমূল কর্মীর দখলে রয়েছে। ফারুকের ছেলে মফুজ আলমের অভিযোগ, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূলের স্থানীয় কর্মীদের একাংশ ওই তিনটি জমি দখল করার চেষ্টা করছে। অভিযুক্তেরা ওই তিনটি জমি দখল করে ক্লাব ও দলীয় কার্যলয় তৈরির ছক করেছে।’’
বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত অভিযুক্তেরা বেশ কয়েকবার ওই তিনটি জমিতে গিয়ে খুঁটি পুঁতে দখলের চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। সেইসময় নওসাদ, ফারুক ও সায়রতের পরিবারের লোকজন ও তাঁদের অনুগামীরা বাধা দিলে অভিযুক্তরা তাঁদের মারধর ও বোমাবাজি করে। শূন্যে কয়েক রাউন্ড গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায়।
পুলিশের অবশ্য দাবি, দু’পক্ষের কারওরই ওই তিনটি জমির সরকারি মালিকানা নেই। কিছুদিন আগে দুই গোষ্ঠীর তৃণমূল কর্মীরা বৈঠক করে ওই তিনটি জমির মধ্যে একটি জমির একধারে ক্লাব ও দলীয় কার্যালয় তৈরির সিদ্ধান্ত নেন। সেইমতো ওইদিন তৃণমূলের কর্মীদের একাংশ ওই জমিতে দলীয় কার্যালয় তৈরির চেষ্টা করতে গেলে বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর তৃণমূলের কর্মীরা বাধা দেন।’’ তাদের হাতাহাতি, সংঘর্ষ ও বোমাবাজি হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy