Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
mobile phone

ফোনে আসক্তিই কি কাড়ল প্রাণ

পুলিশ জানায়, ওই বালক বাবা মায়ের সঙ্গে ভাড়া বাড়িতে থাকত। শহরের একটি নামি স্কুলের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র। লকডাউনের সময় স্কুল ছিল না বলে বাড়িতে কাটত বেশিরভাগ সময়। তাতেই বেড়েছিল মোবাইলের প্রতি আসক্তি।

প্রতীকী চিত্র

প্রতীকী চিত্র

শান্তশ্রী মজুমদার
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০২০ ০৪:১১
Share: Save:

সাধারণ সময়ে রোজ স্কুলে যেতে হয়। ছুটি থাকলে বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলোও করা যায়। কেউ কেউ গান, আঁকা বা নাচের মধ্যে দিয়ে কাটায় অবসর। কিন্তু লকডাউনে এসব কিছু থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ছোটরা। সারাদিন থাকতে হচ্ছে ঘরে। অনলাইন ব্যবস্থায় পড়াশোনা চললেও, মাঠে নেমে খেলাধুলো বা সিলেবাসের বাইরে কিছু শেখা—বন্ধ সবকিছু। এর ফলে ছোটদের অনেকেই আনন্দ খুঁজে নিতে নির্ভর করছে মোবাইল ফোনের উপর। শিক্ষক, অভিভাবকরা বলছেন, লকডাউনে বাচ্চাদের মধ্যে ভয়াবহভাবে বেড়েছে মোবাইলে আসক্তি। শুক্রবার রাতে শহরে এক বালকের মৃত্যুতে উঠে এল এমন মোবাইল আসক্তির সম্ভাবনাই।
শিলিগুড়ি পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের টিউমলপাড়ার ঘটনা। শুক্রবার রাতে ঘর থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় ১০ বছরের এক বালকের দেহ। পুলিশ সূত্রের খবর, মোবাইল ঘাটাঘাঁটি নিয়ে শুক্রবার সন্ধেয় ওই বালককে বকাবকি করে তার মা। পরে রাতে ঘরের দরজা বন্ধ দেখে ডাকাডাকি করছিল বালকের মা। তখন পড়শিরা এসে দরজা ভেঙে বালকের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পায়। ওই পাড়ার বাসিন্দা তথা ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পরিমল মিত্র বলেন, ‘‘মোবাইল নিয়ে বাড়িতে নিয়মিত অশান্তি হতো। বাবা-মায়ের বকুনি খেত। অল্পবয়সী ছেলেদের হাতে মোবাইল একেবারেই না দেওয়াই ভাল।’’

পুলিশ জানায়, ওই বালক বাবা মায়ের সঙ্গে ভাড়া বাড়িতে থাকত। শহরের একটি নামি স্কুলের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র। লকডাউনের সময় স্কুল ছিল না বলে বাড়িতে কাটত বেশিরভাগ সময়। তাতেই বেড়েছিল মোবাইলের প্রতি আসক্তি। ছেলেটির মা ভাড়া বাড়ির নিচতলায় একটি মোমোর দোকান চালান। বাবা একটি নিরাপত্তা সংস্থার কর্মী। পুলিশের দাবি, আত্মহত্যা করে থাকতে পারে ওই বালক। তবে তার কারণ মানসিক অবসাদ কিনা তা এখনও স্পষ্ট করে বলতে পারছেন না পুলিশকর্তারা। প্রতিবেশীদের একাংশের দাবি, সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যুর খবরে মনমরা ছিল বালক। যদিও তা মানছেন না পুলিশকর্তারা। শহরের ডিসি ( সদর) নিমা নরবু ভুটিয়া বলেন, ‘‘মোবাইল নিয়ে বকাবকির কথাই শুনেছি। সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর সঙ্গে সম্পর্ক নেই বলেই মনে হয়।’’

ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় চিন্তার ভাঁজ পড়েছে শহরের অভিভাবকদের কপালে। মৃত্যুর কারণ যাই হয়ে থাকুক, মোবাইলে আসক্তি যে বাচ্চাদের ক্ষেত্রে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে সেই কথা মানছেন শহরের অভিভাবকদের একটা বড় অংশ। হাতিয়াডাঙ্গার বাসিন্দা, বেসরকারি সংস্থার কর্মী প্রণব পাল বলেন, ‘‘অনলাইন ক্লাসের জন্য মোবাইল দিতে হচ্ছে ছেলেকে। কিন্তু আসক্তি বেড়ে গেলে তা খুব চিন্তার। এরকম ঘটনা খুবই দুঃখজনক।’’ লকডাউন উঠে গেলে ছোটদের কাউন্সেলিংয়ের কথাও ভাবছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mobile Phone Siliguri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE