Advertisement
০৭ মে ২০২৪

দলেই কি বিজেপি, তদন্ত তৃণমূলে

গত ২২ জানুয়ারি তপসিখাতায় তৃণমূল কর্মী তুষার বর্মণ খুন হন৷ অভিযোগ ওঠে, দলেরই স্থানীয় উপপ্রধান শম্ভু রায় ও তার দলবল মিলে জয় বাংলা হাটে তুষারকে প্রথম মারধর করে৷ তারপর শম্ভু কোমর থেকে রিভলভার বের করে শম্ভুর মাথা লক্ষ করে গুলি চালিয়ে দেয় বলে অভিযোগ৷

স্মরণে: তপসিখাতার জয়বাংলা হাটে তৈরি হচ্ছে নিহত তুষার বর্মণের স্মৃতিস্তম্ভ। ছবি: নারায়ণ দে

স্মরণে: তপসিখাতার জয়বাংলা হাটে তৈরি হচ্ছে নিহত তুষার বর্মণের স্মৃতিস্তম্ভ। ছবি: নারায়ণ দে

নিজস্ব সংবাদদাতা
আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:৫২
Share: Save:

ভাবমূর্তি নষ্ট করতে বিজেপি পরিকল্পনা করে দলের অন্দরে লোক ঢোকাচ্ছে বলে আশঙ্কা তৃণমূল নেতাদের৷ তৃণমূল সূত্রে খবর, তপসিখাতার ঘটনার পর এমন ‘লোক’ খুঁজে বের করতে আলিপুরদুয়ার ১ ব্লকের প্রতিটি বুথে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে শাসক দল। দলের নেতারা জানিয়েছেন, তদন্তে যাঁরা বিজেপির লোক হিসাবে উঠে আসবেন, তাঁদের প্রত্যেককে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। বিজেপি অবশ্য তৃণমূলের এই উদ্যোগকে হাস্যকর বলে কটাক্ষ করেছে।

গত ২২ জানুয়ারি তপসিখাতায় তৃণমূল কর্মী তুষার বর্মণ খুন হন৷ অভিযোগ ওঠে, দলেরই স্থানীয় উপপ্রধান শম্ভু রায় ও তার দলবল মিলে জয় বাংলা হাটে তুষারকে প্রথম মারধর করে৷ তারপর শম্ভু কোমর থেকে রিভলভার বের করে শম্ভুর মাথা লক্ষ করে গুলি চালিয়ে দেয় বলে অভিযোগ৷ ঘটনার পর ইতিমধ্যেই তৃণমূলের এক গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য-সহ দু’জন ধরা পড়লেও, শম্ভু-সহ দু’জন এখনও পলাতক৷

তুষার-খুনের ঘটনার পর থেকেই গোটা তপসিখাতা এলাকায় শম্ভুদের বিরুদ্ধে কার্যত জনরোষ তৈরি হয়৷ যার আঁচ কিছুটা হলেও গিয়ে পড়ে দলের নেতাদের একাংশের উপরেও৷ তুষার খুনের পর থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা তো বটেই, এমনকি খোদ তৃণমূল কর্মীদের একাংশও অভিযোগ তোলেন, দলের নেতাদের একাংশের হাত মাথার উপরে থাকার জন্যই এলাকায় কার্যত ‘ত্রাস’ হয়ে উঠেছিল শম্ভুরা৷ এই অবস্থায় শম্ভুদের গ্রেফতারের দাবিতে এলাকায় বেশ কয়েকদিন ধরে লাগাতার আন্দোলনও চালিয়ে যান স্থানীয় বাসিন্দারা৷ আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন খোদ তৃণমূলেরই স্থানীয় কর্মী-সমর্থকদের একটা অংশ৷

পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে শম্ভুদের দল থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা করেন তৃণমূল৷ তারপর দলের জেলা শীর্ষ নেতারা তুষারের বাড়িতেও যান৷ দলের ওই নেতাদের একাংশের তরফে সে সময় বারবার অভিযোগ তোলা হয়েছিল, বিরোধীরা, বিশেষ করে বিজেপিই এলাকায় গোলমাল জিইয়ে রাখছে৷ এ বার দলের ভিতরে তাদের কেউ ঢুকে পড়েছে কি না তা বাছাই করতে চাইছেন নেতারা৷

তৃণমূলের আলিপুরদুয়ার ১ ব্লক সভাপতি তথা জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি মনোরঞ্জন দে বলেন, “ভাবমূর্তি নষ্ট করতে বিজেপির কোনও লোক আমাদের দলে ঢুকেছে কি না সেটা আমরা আলিপুরদুয়ার ১ ব্লকে তদন্ত করে দেখছি৷ প্রতিটি বুথ ও অঞ্চল সভাপতিদের সঙ্গে দলের সক্রিয় কর্মীদের এটা তদন্ত করে দেখতে বলা হয়েছে৷ যারা দিনের বেলায় আমাদের সামনে মুখে মুখে তৃণমূল ও রাতে বিজেপি করছেন, তাদের আমরা খুঁজে বের করছি৷” তৃণমূলের তরফে জানানো হয়েছে, তদন্তে এমন লোক বের হওয়া মাত্র তাদের দল থেকে বহিষ্কার করা হবে৷

তৃণমূলের এই উদ্যোগকে হাস্যকর বলে কটাক্ষ করতে শুরু করেছেন বিজেপির জেলা নেতারা৷ দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত রায় বলেন, ‘‘শম্ভুরা কোন দলের লোক তা থেকেই তো পরিষ্কার গোটা আলিপুরদুয়ার- ১ ব্লকে কী ঘটনা ঘটছে৷ গোটা ব্লকের মানুষ তা জেনেও গিয়েছেন৷ তাই এখন বিজেপির উপরে হাস্যকর দোষারোপ করে তৃণমূলের কোনও লাভ হবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC BJP Tapsikhata
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE