Advertisement
E-Paper

চোখের জলে, বৃষ্টিতে সমাধি সেই ৯ জনের

উত্তরপ্রদেশের ভদোহীর রোহতা বাজারে কার্পেট কারখানায় বিস্ফোরণ কাণ্ডে মৃত মালদহের নয় শ্রমিকের দেহ চার দিন পরে গ্রামে ফিরল।

অভিজিৎ সাহা

শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৪:৪৯
শোকজ্ঞাপন: দেহের সামনে প্রার্থনায় এনায়েতপুরবাসী। —নিজস্ব চিত্র

শোকজ্ঞাপন: দেহের সামনে প্রার্থনায় এনায়েতপুরবাসী। —নিজস্ব চিত্র

বুধবার সকাল থেকেই কখনও মুষল ধারে বৃষ্টি, আবার কখনও মেঘলা আকাশ। বৃষ্টি মাথায় নিয়েই এ দিন সকাল থেকেই মাঠে থিকথিক করে ভিড়। এমনকি, মাঠ সংলগ্ন বাড়ির ছাদেও দাঁড়িয়ে শয়ে শয়ে মানুষ। এ দিন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ কফিনবন্দি দেহগুলি এক এক করে ঢুকতেই কান্নার রোল পড়ে যায় মালদহের এনায়েতপুর ফুটবল ময়দানে।

উত্তরপ্রদেশের ভদোহীর রোহতা বাজারে কার্পেট কারখানায় বিস্ফোরণ কাণ্ডে মৃত মালদহের নয় শ্রমিকের দেহ চার দিন পরে গ্রামে ফিরল। গত, শনিবার থেকে এনায়েতপুর ও মানিকচকেরই কামালপুর গ্রামের ছবিটা একেবারে বদলে গিয়েছে। যাঁরা পরিজন হারিয়েছেন, তাঁরা তো বটেই, তাঁদের পড়শিরাও অপেক্ষা করেছিলেন, কবে দেহগুলি ফিরবে।

মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ উত্তরপ্রদেশ থেকে সড়ক পথে শ্রমিকদের দেহ নিয়ে আসা হয় মালদহে। তখন দেহগুলি রাখা হয় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের মর্গে। এ দিন সকাল থেকেই বৃষ্টি। ফলে দেহ নিয়ে আসতে সময় লেগে যায়।

এনায়েতপুর ফুটবল ময়দানে স্মরণসভার আয়োজন করা হয়েছিল। আবহাওয়া খারাপ থাকায় হেলিকপ্টার ওড়েনি। তাই হাজির থাকার কথা থাকলেও আসতে পারেননি রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর। তবে স্মরণসভা মঞ্চে হাজির ছিলেন সাংসদ মৌসম নুর, জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌড়চন্দ্র মণ্ডল। ছিলেন জেলাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য, পুলিশসুপার অর্ণব ঘোষ-সহ প্রশাসনের একাধিক কর্তা। রাজ্য সরকারের তরফে মৃতদের পরিবারগুলিকে দু’লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিয়েছিলেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। এ দিন জেলা পরিষদের তরফে সংখ্যালঘু বিধবা মহিলাদের পুনর্বাসন প্রকল্পে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার একটি করে ঘর দেওয়ার কথা ঘোষণা হয়। এ ছাড়া জেলা পরিষদের তরফে নগদ ২০ হাজার এবং সমব্যথী প্রকল্পে দু’হাজার করে টাকা দেওয়া হয়। ফিরহাদ হাকিমের প্রতিশ্রুতির মতো বাড়ির মহিলাদের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে চাকরি, ভাতা দেওয়া হবে বলে জানান গৌড়চন্দ্র মণ্ডল। তিনি বলেন, “আমরা সব সময় ওঁদের পাশে রয়েছি।”

প্রিয়জনের মৃত্যুতে চার দিন ধরে নাগাড়ে চোখের জল ফেলছেন ফারহানা বিবি, মুন্নি বিবিরা। তরতাজা দু’ছেলের কফিন বন্দি দেখে হাউ হাউ করে কাঁদতে থাকেন তাইনুর বেওয়া। তিনি বলেন, “পথ দুর্ঘটনায় স্বামীকে হারিয়েছিলাম। তিন ছেলেকে নিয়ে বেঁচে ছিলাম। এ বার তরতাজা দুই ছেলেকে হারালাম।” মৌসম বলেন, ‘‘ওঁদের সমবেদনা জানানোর ভাষা নেই।”

এ দিন শোকমিছিল করে দেহগুলি নিয়ে যাওয়া হয় গ্রামেরই কবরস্থানে। সেখানেই সমাধি দেওয়া হয় ন’জনকে। সেই শেষযাত্রায় সামিল হন মোয়াজ্জেম হোসেন, বিধায়ক ইশা খান চৌধুরীর মতো অনেকেই।

Malda Enayetpur Uttar Pradesh Blast Last Rites
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy