Advertisement
১৮ মে ২০২৪

প্রতিবাদে কর্মবিরতি আদালতে

এ দিন সকালে দু’টি আদালতের বিচারকেরা চেম্বারে ঢোকার চেষ্টা করলে আন্দোলনকারীরা আদালতে ঢোকার একাধিক গেট বন্ধ করে দেন বলে অভিযোগ। বাধা পেয়ে তাঁরা ফিরে যান। এ দিন বুকে কালো ব্যাজ লাগিয়ে আদালত চত্বরে অবস্থান বিক্ষোভে সামিল হন কর্মীরা।

অনির্দিষ্ট-কাল: রায়গঞ্জ আদালতে কর্মবিরতিতে কর্মচারীরা। নিজস্ব চিত্র

অনির্দিষ্ট-কাল: রায়গঞ্জ আদালতে কর্মবিরতিতে কর্মচারীরা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা 
রায়গঞ্জ ও ইসলামপুর শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৯ ০৭:১৩
Share: Save:

রায়গঞ্জ আদালতের এজলাসে গোলমালের ঘটনার প্রতিবাদে অনির্দিষ্ট কাল কর্মবিরতি শুরু করলেন আদালত কর্মীরা। সোমবার বেলা ১০টা থেকে রায়গঞ্জ জেলা আদালত ও ইসলামপুর মহকুমা আদালতের কর্মীরা দু’টি আদালত চত্বরে কর্মবিরতি শুরু করেছেন। উত্তর দিনাজপুরের জেলা জজ উদয় কুমারের বদলি ও আদালতের কর্মীদের যোগ্য সম্মান দেওয়ার দাবি তুলেছেন তাঁরা। এ দিন আন্দোলনকারীদের কথা বলতে ডেকে পাঠান জেলা জজ। জেলা জজের সঙ্গে তাঁরা দেখা করতে যাবেন কি না তা নিয়ে আলোচনায় বসেন আন্দোলনকারীরা। পশ্চিমবঙ্গ আদালত কর্মচারী সমিতির রাজ্য এবং কেন্দ্রী নেতৃত্বও এসেছিলেন। তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন হাইকোর্টের হস্তক্ষেপের আগে তাঁরা বিষয়টি নিয়ে জেলা জজের সঙ্গে দেখা করতে যাবেন না।

এ দিন সকালে দু’টি আদালতের বিচারকেরা চেম্বারে ঢোকার চেষ্টা করলে আন্দোলনকারীরা আদালতে ঢোকার একাধিক গেট বন্ধ করে দেন বলে অভিযোগ। বাধা পেয়ে তাঁরা ফিরে যান। এ দিন বুকে কালো ব্যাজ লাগিয়ে আদালত চত্বরে অবস্থান বিক্ষোভে সামিল হন কর্মীরা। রাজ্যের অন্য আদালতেও কালো ব্যাজ পড়ে কর্মীরা তাঁদের সমর্থন জানিয়েছেন।

রাজ্য আদালত কর্মচারী সমিতির রায়গঞ্জ শাখার সম্পাদক কৃষ্ণগোপাল সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘জেলা জজ আদালতের কর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও গালাগালি করে সম্মান নষ্ট করেছেন। পুলিশকে আদালতে ডেকে কর্মীদের মারধর করিয়েছেন। সমিতির তরফে আমাদের আবেদন, হাইকোর্ট অবিলম্বে বিষয়টি নিয়ে হস্তক্ষেপ করুক। জেলাজজকে বদলি করা হোক। সেই সঙ্গে হাইকোর্টের বিচারপতিদের হস্তক্ষেপে আইনীজীবী এবং মুহুরিদের উপস্থিতিতে জেলাজজকে আদালতের কর্মীদের কাছে ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চাইতে হবে। এতেই আদালতের কর্মীদের যোগ্য সম্মান ফিরবে।’’

যত দিন এ সব না হচ্ছে, তত দিন দু’টি আদালতের কর্মীরা কর্মবিরতি চালিয়ে যাবেন বলে তিনি জানান। জেলা জজ উদয় কুমারের দফতর থেকে আগের দিনই জানানো হয় তিনি বিষয়টি নিয়ে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলবেন না।

তবে আদালতের এক আধিকারিকের দাবি, আদালতের কর্মীদের একাংশ যাতে নিয়মিত সঠিক সময়ে হাজিরা দেন, তার জন্য কিছু দিন ধরে জেলা জজ সক্রিয় হয়েছেন। সেই সক্রিয়তার জেরেই আদালতের কর্মীদের সঙ্গে বিরোধ তৈরি হয়। দাবিদাওয়া নিয়ে জেলা জজের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি পুলিশ ডাকলে পুলিশের সঙ্গে গোলমাল বাধে বলে অভিযোগ।

আদালতের কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, শুক্রবার বেলা ১০টা ১০ মিনিট নাগাদ জেলা জজ আদালতের বিভিন্ন বিভাগে গিয়ে কর্মীদের হাজিরা খাতা খতিয়ে দেখেন। এর পর তিনি জানিয়ে দেন, ওই সময়ের পরে কোনও কর্মী হাজিরা খাতায় সই করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে। তা নিয়ে অসন্তোয ছড়ায়। সেই সঙ্গে ‘গ্রুপ ডি’ কর্মীদের দিয়ে চায়ের কাপ-প্লেট ধোয়ানো হয় বলে অভিযোগ। বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দেওয়া থেকে কর্মীদের বঞ্চিত করার হচ্ছে বলেও কর্মীরা বিষয়গুলো নিয়ে জেলা জজের সঙ্গে দেখা করার সিদ্ধান্ত নেন। অভিযোগ, কথা বলতে গেলে জেলা জজ তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। চেম্বারের বাইরে বিক্ষোভ শুরু হলে পুলিশ গিয়ে আদালতের কর্মীদের একাংশের উপর লাঠিচার্জ করে বলে অভিযোগ।

কৃষ্ণগোপালের বক্তব্য, পুলিশ আদালতের কর্মীদের পিটিয়ে ৪২ জন কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে বলে আমরা শুনেছি। সেই মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার সুমিত কুমার বলেন, ‘‘পুলিশ আইন মেনেই কাজ করে। আদালতের বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Strike Lawyer Raiganj Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE