Advertisement
০২ মে ২০২৪

প্রথম টিভি এল সুজয়ের বাড়ি

জীবনের দ্বিতীয় বড় পরীক্ষায় দুর্দান্ত সাফল্যের পর বাড়িতে প্রথম টিভি এল ৪৮৩ নম্বর পাওয়া উচ্চ মাধ্যমিকে সপ্তম স্থানাধিকারি সুজয় মল্লিকের বাড়িতে৷ পেশায় এলআইসি-র কর্মী বাবা ভুলন মল্লিকের থেকে পুরস্কারটি পেয়ে রীতিমত উচ্ছাসিত সুজয়৷

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০১৭ ১৪:০০
Share: Save:

উচ্চ মাধ্যমিকে মেধা তালিকায় নিজের জায়গা করে নেওয়ার পরেই বাড়িতে এল ৩২ ইঞ্চি এলইডি টিভি সেট৷

জীবনের দ্বিতীয় বড় পরীক্ষায় দুর্দান্ত সাফল্যের পর বাড়িতে প্রথম টিভি এল ৪৮৩ নম্বর পাওয়া উচ্চ মাধ্যমিকে সপ্তম স্থানাধিকারি সুজয় মল্লিকের বাড়িতে৷ পেশায় এলআইসি-র কর্মী বাবা ভুলন মল্লিকের থেকে পুরস্কারটি পেয়ে রীতিমত উচ্ছাসিত সুজয়৷

তবে একটা আক্ষেপও রয়েছে মনে৷ ‘‘এরপর তো পড়াশোনা করতে বাইরেই চলে যাব৷ তাহলে টিভিটা দেখব কখন?’’ তবে বাবার থেকে পাওয়া এই উপহারটা তাকে যে জীবনে আরও বড় হতে তাকে যে উৎসাহিত করবে তাও জানাতে ভুললনা সে৷

আসলে উচ্চ মাধ্যমিকে নিজের এই সাফল্যের জন্য বাবার কড়া মনোভাব ও অনুশাসনকেই সবচেয়ে এগিয়ে রাখছে সুজয়৷ জীবনে বড় হতে গেলে পড়াশোনায় ভাল করতেই হবে – ছোটবেলা থেকে সুজয়কে এটাই শিখিয়েছিলেন ভুলনবাবু৷ তার কথায়, ‘‘পড়াশোনা ছাড়া জীবনে কখনই উন্নতি সম্ভব নয়৷ এই বাস্তবটা অনুভব করেই ছেলেকেও সেটা বোঝাতে চেয়েছিলাম৷ ছেলে বুঝেওছিল৷ তাই আজ তার এই সাফল্য৷’’

সুজয় ছোটবেলায় ভোটপট্টা হাই স্কুলে পড়াশোনা করতো৷ ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত সেখানে পড়াশোনা করে সপ্তম শ্রেণিতে সুভাষনগর হাইস্কুলে ভর্তি হয়৷ ওই বছর থেকেই সুজয়ের জন্য কড়া রুটিন তৈরি করে দেন ভুলনবাবু৷ কোন বিষয় কতক্ষণ পড়াশোনা করবে তার চার্ট তৈরি করে দেওয়ার পাশাপাশি সুজয় কখন খেতে যাবে বা কতক্ষণ ঘুমাবে তাও রুটিনেই বলা থাকতো৷ ভুলনবাবুর কথায়, ‘‘রুটিন মাঝে মধ্যেই বদলাতে হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা পর্যন্ত সেটাই ছিল৷’’

সুজয়ের কথায়, বাবার এই কড়া মনোভাবের জন্যই তাকে খুব ভয় পেতাম৷ তার তৈরি রুটিন ধরেই চলতাম৷ আর সেটাই আমার সাফল্যের অন্যতম কারণ৷ এর পাশাপাশি তার এই সাফল্যের পেছনে স্কুলের শিক্ষক ও সহপাঠীদেরও অবদান রয়েছে বলে জানায় সুজয়৷ তার কথায়, ‘‘আমাদের ব্যাচে অনেক ভাল ছাত্র ছিল৷ ফলে প্রতিযোগিতাও ছিল। এটাও সাফল্যের একটা বড় কারণ৷ সুজয়ের মা অঞ্জলি মল্লিক আইসিডিএস-এর সহায়িকা৷ ছেলের পড়াশোনায় যাতে কোন বিঘ্ন না ঘটে সে দিকে তিনিও নজর রাখতেন৷

উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার আগে সুজয়ের গৃহ শিক্ষক ছিলেন মোট সাতজন৷ তাঁদের কাছে টিউশন নেওয়া ও বাড়িতে পড়াশোনার ফাঁকে কখনও কখনও বাবার রুটিন চুপিসারে ভেঙেওছে সে ৷ সুজয়ের কথায়, ‘‘বাবা-মা যখন কাজে বেরিয়ে পড়তেন তখন মাঝে মাঝে বন্ধুদের সঙ্গে গিয়ে দাবা খেলতাম৷ আর সুযোগ পেলে পাশের বাড়িতে গিয়ে টিভিতে একটু ক্রিকেট খেলাও দেখে নিতাম৷’’ অঙ্ক নিয়ে গবেষণার পর শিক্ষকতা করতে চায় সে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE