উলটপুরাণ মানিকচকে। তৃণমূল নানা জায়গায় দল ভাঙিয়ে ক্ষমতা দখল করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে, এখন তারাই আটকে গেল পাল্টা কৌশলে। মানিকচক পঞ্চায়েত সমিতিতে সভাপতি পদে নির্বাচনে তৃণমূলের অফিসিয়াল প্রার্থীকে রুখতে এক তৃণমূল সদস্যকেই ভোট দিয়ে নির্বাচিত করলেন বাম ও কংগ্রেস সদস্যরা। নয়া সভাপতি কাগজে-কলমে তৃণমূলের হওয়ায় স্বভাবতই বোর্ড কার, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।
৩১ আসনের মানিকচক পঞ্চায়েত সমিতিতে সিপিএমের ১৪ জন, তৃণমূলের ১৩ জন, কংগ্রেসের ৩ জন ও সিপিআইয়ের একজন সদস্য ছিলেন। বাম ও কংগ্রেস মিলে প্রথম বোর্ড করেছিল এবং সিপিএমের রাখি মণ্ডল সভাপতি হয়েছিলেন। গত মাসে সিপিএমের দু’জন ও সিপিআইয়ের একজনের সমর্থন নিয়ে সেই সভাপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা আনে তৃণমূল। ১৬-১৫ ভোটে সেই অনাস্থা পাশও হয়ে অপসারিত হন রাখিদেবী।
এ দিন, নতুন সভাপতির নির্বাচনে পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সদস্য রাজকুমার মণ্ডল সভাপতি পদে সিপিএম থেকে সদ্য তাঁদের দলে আসা শাহনাজ বিবির নাম প্রস্তাব করেন। অপর দিকে সিপিএমের সদস্য সমীরণ মুখোপাধ্যায় দলের কারও নাম প্রস্তাব না করে তৃণমূলেরই জরিনা বিবির নাম প্রস্তাব করেন। এই ঘটনায় বেকায়দায় পড়ে তৃণমূলের আর এক সদস্য মনোরঞ্জন চৌধুরী সভাপতি পদে সদ্য অপসারিত সিপিএমের রাখি মণ্ডলের নাম প্রস্তাব করেন। কিন্তু রাখিদেবী নির্ধারিত ফর্মে স্বাক্ষর না করায় তৃণমূলের সেই প্রস্তাব খারিজ হয়ে যায়। এরপরই ভোটাভুটি হয় এবং দেখা যায় সিপিএম ও কংগ্রেসের সমর্থিত জরিনাবিবিই ১৬-১৫ ভোটে শাহনাজ বিবিকে হারিয়ে সভাপতি হয়ে যান। ফল ঘোষণা হতেই পঞ্চায়েত সমিতির বাইরে অপেক্ষায় থাকা জোট সমর্থকরা অকাল হোলিতে মেতে ওঠেন। সিপিএমের ১২, কংগ্রেসের ৩ জন ও জরিনাবিবি নিজেকে ভোট দিয়েছেন।
তৃণমূলের একাংশের বক্তব্য, জরিনা বিবি দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করলেন। আরেক পক্ষের মতে, এই ঘটনায় প্রমাণ হল মানিকচকে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এখনও কতটা সক্রিয়। সাবিত্রী মিত্র বলেন, ‘‘কেউ যদি বিশ্বাসঘাতকতা করে তবে কিছু করার নেই। দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে জানিয়েছি।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেনের দাবি, ‘‘পরিকল্পনার ভুলেই এমনটা হল।’’