স্ত্রী হাসপাতালে ভর্তি। রাতটা হাসপাতাল চত্বরেই ঘুমিয়ে কাটাচ্ছিলেন গোপীনাথ সরকার। আচমকাই তাঁকে বেধড়ক মারধর করে টাকা লুঠ করার অভিযোগ উঠল দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। শনিবার ভোরে মালদহ মেডিক্যাল কলেজের ঘটনা। জখম গোপীনাথবাবুকে হাসপাতালের মেল সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর কলেজ পড়ুয়া মেয়ে ইংরেজবাজার থানায় ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত শুরু হয়েছে।
এ দিকে, হাসপাতাল চত্বরে চিকিৎসাধীন রোগীর পরিজনদের উপরে এই হামলা ও টাকা লুঠের ঘটনায় নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। রোগীদের পরিজনদের অভিযোগ, এই ধরনের ঘটনা এর আগেও বেশ কয়েক বার হয়েছে। অর্থাভাবে শীতের রাতেও রোগীর পরিবারের লোকেরা হাসপাতাল চত্বরে ঘুমিয়ে থাকেন। কিন্তু পুলিশি নিরাপত্তা বলে
কিছুই নেই। হাসপাতালের ডেপুটি সুপার জ্যোতিষচন্দ্র দাস বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখা হচ্ছে।’’
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুরের চাঁদগঞ্জের বাসিন্দা গোপীনাথবাবুর স্ত্রী অলকাদেবী কিডনিজনিত সমস্যা নিয়ে আট দিন ধরে মালদহ মেডিক্যালে ভর্তি। অলকাদেবীর সঙ্গে ওয়ার্ডে তাঁর মেয়ে পায়েল থাকে। সে গঙ্গারামপুর কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। পায়েল বলেন, ‘‘মাকে ভর্তি করার পর থেকে বাবা প্রতিদিনই রাতে হাসপাতালের বাইরে ঘুমোতেন। এ দিন সকালে বাবা ওয়ার্ডে এসে আমাদের সঙ্গে দেখা না করায় বাবার খোঁজ নিতে শুরু করি। তখনই জানতে পারি ভোররাতে কয়েক জন দুষ্কৃতী বাবাকে মেরে অজ্ঞান করে দিয়ে প্রায় বারোশো টাকা ছিনিয়ে নেয়।’’
গোপীনাথবাবু কোনও রকমে জানান, তিনি রাতে হাসপাতালের মূল গেটের কাছেই অ্যাম্বুল্যান্স স্ট্যান্ডে ঘুমিয়েছিলেন। ভোর রাতে কয়েক জন দুষ্কৃতী তাঁকে ঘিরে ধরে টাকা দাবি করে। না দিতে চাওয়ায় মুখে-চোখে ঘুসি মারা হয়। তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। জ্ঞান ফিরলে লোকজন ধরাধরি করে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করে।
মা ভর্তি থাকায় পাঁচ দিন ধরে হাসপাতালেই রয়েছেন মুর্শিদাবাদের সমসেরগঞ্জের ব্লকের টিএমসিপি সম্পাদক প্রকাশ প্রামাণিক। তিনি বলেন, ‘‘দিনভর হাসপাতাল চত্বরে প্রচুর সিভিক ভলান্টিয়ারদের দেখা গেলেও রাতে তাঁদের বা কোনও পুলিশেরই দেখা মেলে না।’’ একই অভিযোগ গাজোলের রফিকুল ইসলাম, চাঁচলের রতন রায়-সহ অসংখ্য রোগীর পরিজনদের।
ইংরেজবাজার থানার আইসি পূর্ণেন্দু কুণ্ডু বলেন, ‘‘রাতে হাসপাতালে পুলিশি টহল থাকে। আমরা ঘটনার তদন্ত করছি।’’ হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান জেলাশাসক শরদ দ্বিবেদীও জানান, বিষয়টি নিয়ে পুলিশ ও হাসপাতাল সুপারের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy