Advertisement
E-Paper

রথে চড়ে মাসির বাড়ি যাত্রা করলেন বড়বাবা

রাজ আমলের রীতি মেনে রথে সওয়ার হয়ে জনজোয়ারে ভেসে ‘মাসির বাড়ি’ গেলেন ‘বড়’ মদনমোহন। ওই বিগ্রহ ভক্তদের অনেকের কাছেই ‘বড়বাবা’ নামে পরিচিত। টানা এক সপ্তাহ গুঞ্জবাড়ি কোচবিহারের গুঞ্জবাড়ি এলাকায় ডাঙ্গোরাই মন্দিরের ওই মাসির বাড়িতে রাখা হবে বিগ্রহ।

অরিন্দম সাহা

শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৫ ০১:৫৬

রাজ আমলের রীতি মেনে রথে সওয়ার হয়ে জনজোয়ারে ভেসে ‘মাসির বাড়ি’ গেলেন ‘বড়’ মদনমোহন। ওই বিগ্রহ ভক্তদের অনেকের কাছেই ‘বড়বাবা’ নামে পরিচিত। টানা এক সপ্তাহ গুঞ্জবাড়ি কোচবিহারের গুঞ্জবাড়ি এলাকায় ডাঙ্গোরাই মন্দিরের ওই মাসির বাড়িতে রাখা হবে বিগ্রহ। ২৫ জুলাই উল্টো রথের দিন ফের একই ভাবে রথে সওয়ার হয়ে মূল মন্দিরে ফেরানো হবে বড় মদনমোহনের বিগ্রহ।

এই সাত দিন মূল মন্দিরের সিংহাসনে থাকবে ‘ছোটবাবা’র বিগ্রহ। মদনমোহনের দুটি বিগ্রহের মধ্যে তুলনামূলকভাবে আকারে ছোট ওই বিগ্রহটি। কোচবিহারের সদর মহকুমাশাসক তথা দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ডের সদস্য বিকাশ সাহা বলেন, “সব মিলিয়ে লক্ষাধিক মানুষ এ বার মদনমোহনের রথ উৎসবে সামিল হয়েছেন।”

দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ড সূত্রে জানা গিয়েছে, বড় বিগ্রহটিই বেশির ভাগ সময় মন্দিরের মূল সিংহাসনে রাখা হয়। ভক্তরা ওই বিগ্রহই সারা বছর দেখার সুযোগ পান। ছোট বিগ্রহটি মন্দিরের ভেতরে আলাদা একটি সিংহাসনে রাখা হয়। তবে রথের সময় বড় বিগ্রহটি গুঞ্জবাড়ি নিয়ে যাওয়া হয় বলে মূল সিংহাসনে ওই ক’দিন ছোট বিগ্রহকে বসানো হয়। দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ডের কর্মী জয়ন্ত চক্রবর্তী বলেন, “প্রাচীন রীতি মেনে মন্দিরে বড়বাবার বিগ্রহ ফেরার পর ছোটবাবা শয়নে যান। একেবারে রাসের আগে তিথি মেনে বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে বিগ্রহকে শয়ন থেকে তোলা হয়।”

দেবোত্তর সূত্রেই জানা গিয়েছে, শনিবার দুপুর থেকেই মদনমোহন মন্দিরে ভক্তদের আনাগোনা শুরু হয়। বিকেল হতেই গোটা মন্দির চত্বরে আর তিল ধারণের জায়গা নেই। লাগোয়া রাস্তাজুড়ে জনস্রোত। পঞ্জিকার নির্ঘণ্ট মেনে বিকেল ৪টা ৩৫ মিনিট বাজতেই বিশেষ পুজোর পর ‘মাসির বাড়ি’র উদ্দেশে রওনা হল রাজাদের কুলদেবতা মদনমোহন দেবের রথ। ওই মন্দিরের পামতলা মোড় থেকে হরিশ পাল চৌপথী তত ক্ষণে গিজগিজ করছে ভিড়ে। সেখানে আম জনতার সঙ্গে প্রশাসনিক কর্তারাও মিলেমিশে একাকার হয়ে যান।

রীতি মেনে মদনমোহনের রথের দড়িতে প্রথম টান দেন রাজ পরিবারের দুয়ারবক্সী কোচবিহারের প্রবীণ বাসিন্দা অমিয় দেববক্সী। রাজ পরিবারের দুয়ায়বক্সী অমিয় দেববক্সী বলেন, “ঠাকুরদা, বাবা, কাকার পর আমি প্রায় চার দশক ধরে ফি বছর রথের দড়িতে প্রথম টান দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছি।”

দেবোত্তর সূত্রের খবর, এক সপ্তাহ সেখানে ‘বড়বাবার’ নিত্য পূজার্চানার ব্যবস্থা হয়েছে। সেখানে মদনমোহন বিগ্রহের জন্য নিশ্চিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে জেলা পুলিশ। বসানো হয়েছে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা। এ দিন মদনমোহন রথের যাত্রাপথ জুড়েও কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছিল জেলা পুলিশ। কোচবিহারের পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব বলেন, “বিপুল ভিড়ের সম্ভাবনা মাথায় রেখেই আমরা ঝুঁকি নিতে চাইনি।”

প্রসঙ্গত, গুঞ্জবাড়ি মন্দির চত্বরে এ দিন থেকে ১৫ দিন ব্যাপী রথের মেলা শুরু হয়েছে। কোচবিহারে এ দিন ইসকনের রথযাত্রাতেও ভিড় ছিল দেখার মতো। ওই অনুষ্ঠানে সাংসদ রেণুকা সিংহ, সভাধিপতি পুষ্পিতা ডাকুয়া, বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, মহকুমাশাসক বিকাশ সাহা ছিলেন।

arindam saha madanmohan rathayatra cooch behar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy