বছর পাঁচেক প্রেম করেছেন তাঁরা। কিন্তু এখন দেখা হলেও না-চেনার ভান করছিল প্রেমিকা। এই আক্রোশে দশম শ্রেণির ছাত্রীর গলায় চাকু চালিয়েছেন তিনি! পুলিশের হাতে ধরা পড়ে এমনই ‘ব্যাখ্যা’ দিলেন মালদহকাণ্ডে ধৃত যুবক। অন্য দিকে, আক্রান্ত ছাত্রীর অবস্থা এখনও শঙ্কাজনক। মালদহ মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন রয়েছে সে।
গত সোমবার বাড়ি থেকে খানিকটা দূরে টিউশন পড়তে গিয়েছিল মালদহ থানার সাহাপুর এলাকার দশম শ্রেণির ছাত্রীটি। ফিরতে রাত হয়েছিল তার। অভিযোগ, রাস্তায় ছাত্রীর পিছু নেন স্থানীয় এক যুবক। একটি নির্জন জায়গা দেখে মেয়েটির পথ আগলে দাঁড়ান তিনি। কিছু বুঝে ওঠার আগে নাবালিকার গলায় চাকু চালিয়ে দেন। মেয়েটির চিৎকার-চেঁচামেচিতে স্থানীয়েরা ছুটে গিয়েছিলেন। কিন্তু তার আগেই দৌড়ে পালিয়ে যান অভিযুক্ত। ছাত্রীটিকে উদ্ধার করে মালদহ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়।
মঙ্গলবার ছাত্রীর বাবা থানায় অভিযোগ করেন। তাঁর দাবি, স্থানীয় এক যুবক তাঁর কন্যাকে কটূক্তি করতেন। রাস্তাঘাটে অপদস্থ করতেন। সে কথা মেয়ে বাড়িতেও জানিয়েছিল। সোমবার ওই যুবকই তাঁর মেয়েকে খুনের চেষ্টা করেন।
আরও পড়ুন:
অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তের খোঁজ শুরু করে পুলিশ। শেষমেশ ইংরেজবাজারের রায়পুরের গোপালপুর এলাকা থেকে তাঁকে পাকড়াও করে তারা। পুলিশ জানিয়েছে, গোপালপুরে একটি নির্জন জায়গায় আত্মগোপন করেছিলেন ওই যুবক। পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাঁকে খুঁজে বার করেছে। অভিযুক্তের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে ছাত্রীর উপর হামলায় ব্যবহৃত চাকু এবং ছাত্রীর মোবাইল।
বুধবার ধৃতকে আদালতে হাজির করিয়েছিল পুলিশ। আদালতে যাওয়ার পথে যুবক বলেন, ‘‘ওর সঙ্গে পাঁচ বছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু এখন পাত্তা দিচ্ছিল না।’’ তিনি স্বীকার করেন, আক্রোশের বশে ছাত্রীর উপর হামলা চালিয়েছেন তিনি। অন্য এক জনের সঙ্গে ‘প্রেমিকা’র ঘনিষ্ঠতা মেনে নিতে পারেননি। অন্য দিকে, ছাত্রীর পরিবার ধৃতের এই সমস্ত মন্তব্য অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি, ওই যুবকের কুখ্যাতি রয়েছে পাড়াতে। তা ছাড়া দশম শ্রেণির পড়ুয়া কী ভাবে তাঁর সঙ্গে পাঁচ বছর ধরে সম্পর্কে ছিল? পুলিশের হাতে ধরা পড়ে এখন বানিয়ে বানিয়ে কথা বলছেন অভিযুক্ত।