স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মোহিতনগরের পূর্বপাড়া এলাকায় বাড়ি ছিল মলয়বাবুদের৷ বাবা ও মা দু’জনেই শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন৷ পাড়াতে বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে খেলাধুলো করলেও পড়াশোনার প্রতি একটু বেশিই মনযোগ ছিল তাঁর। তাঁর বন্ধু আশিস সরকার পেশায় মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসের কর্মী। আশিসবাবু বলেন, “তবে সকাল বেলায় এক সঙ্গে দৌড়ানো থেকে শুরু করে বিকালে মাঠে গিয়ে ফুটবল ক্রিকেট খেলতাম এক সঙ্গে৷ একবার এক সঙ্গে দার্জিলিং-ও ঘুরতে গিয়েছিলাম৷” আশিসবাবু বলেন, ‘‘আমার থেকে দুই ক্লাস উপরে পড়লেও বাবুকে আমি নাম ধরেই ডাকতাম৷ সেই বাবুই আজ রাজ্যের মুখ্যসচিব৷ কী যে আনন্দ হচ্ছে তা বলে বোঝাতে পারবো না৷’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক বছর আগে বাবা মারা যাওয়ার পর মোহিত নগরের পৈতৃক ভিটা বিক্রি করে দেন মলয়বাবু৷ তখন মাকে এখান থেকে নিয়ে যান তিনি৷ তবে এখনও সেখানে তাঁদের খানিকটা জমি রয়েছে৷ এলাকার আর এক বাসিন্দা রণজিৎ কর বলেন, ‘‘বাবু আমার থেকে বয়সে বছর তিনেকের ছোট হবে৷ ছোটবেলায় খুব মন দিয়ে পড়াশোনা করতো দেখতাম৷ ওর বাবার মৃত্যুর পরই শেষবার এখানে এসেছিল৷ তখন কথাও হয়েছিল৷ আমাদের সেই বাবু আজ রাজ্যের সবচেয়ে বড়বাবু হয়ে গিয়েছে৷ আমলাদের মধ্যে সর্বোচ্চ৷ ওর জন্য গোটা গ্রামই গর্বিত৷’’
তবে গ্রামের ছেলে মুখ্যসচিব হওয়ায় তাঁর থেকে কিছু চাহিদাও রয়েছে এলাকার মানুষের৷ স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, মলয়বাবু যে বাড়িতে থাকতেন, সেই বাড়ির সামনের রাস্তাটা বহু বছর ধরে বেহাল হয়ে পড়ে রয়েছে৷ অথচ, তা ঠিক হয় না৷ এলাকায় রয়েছে পানীয় জলের সমস্যাও৷ রাস্তার ধারে মাত্র দুটি টাইম কলের জলের উপর তাঁরা নির্ভরশীল৷ এই পরিস্থিতিতে এলাকার বাসিন্দা মল্লিকা সরকার, অনামিকা কররা বলেন, ‘‘আমরা চাই মুখ্যসচিবের গ্রামের এই রাস্তা ও জলের সমস্যার সমাধান হোক৷’’ এলাকার আর এক বাসিন্দা নরেশ সরকার বলেন, ‘‘আমার আশা, জলপাইগুড়ির ছেলে মুখ্যসচিব হওয়ায় গোটা জেলায় শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে৷’’
মলয়বাবু যে স্কুলে পড়তেন সেই মোহিতনগর কলোনি তারাপ্রসাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যেও এখন তাঁকে নিয়েই আলোচনা৷ প্রধানশিক্ষক মৃত্যুঞ্জয় দে সরকার বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের কাছে তাঁকে উদাহরণ হিসাবে তুলে ধরব৷’’