Advertisement
E-Paper

ক্ষুদ্র চাষির বিদ্যুতের বিল এল ৪১ লক্ষ, পান দোকানির ২১

মালদহের রতুয়ার মাগুড়ায় মহানন্দা বাঁধের উপরে পানের দোকান চালান আনিকুল ইসলাম। পাশে একটি দোকানঘর ভাড়া দিয়েছেন তিনি। তার বিদ্যুতের বিল এসেছে ২১ লক্ষ টাকা। হরিশ্চন্দ্রপুরের রানিপুরার সাজেদ হোসেন ক্ষুদ্র চাষি। তার বিলের পরিমাণ ৪১ লক্ষ টাকা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০২:৩৪
সেই বিল। নিজস্ব চিত্র।

সেই বিল। নিজস্ব চিত্র।

মালদহের রতুয়ার মাগুড়ায় মহানন্দা বাঁধের উপরে পানের দোকান চালান আনিকুল ইসলাম। পাশে একটি দোকানঘর ভাড়া দিয়েছেন তিনি। তার বিদ্যুতের বিল এসেছে ২১ লক্ষ টাকা। হরিশ্চন্দ্রপুরের রানিপুরার সাজেদ হোসেন ক্ষুদ্র চাষি। তার বিলের পরিমাণ ৪১ লক্ষ টাকা।

একেই বিদ্যুৎ বিভ্রাটে নাকাল হচ্ছেন গ্রাহকরা। তার উপরে মালদহের চাঁচল মহকুমার একাধিক গ্রাহককে বিপুল পরিমাণ বিদ্যুতের বিল পাঠানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিল দিতে না পারায় অনেকের বিদ্যুত সংযোগ কেটে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বিল জমা না করা হলে পুলিশে অভিযোগ জানানোর হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

বিপুল ওই বিলের বোঝায় যখন নাজেহাল গ্রাহকরা, তখন তাদের বিল কমিয়ে দেওয়া হবে এই আশ্বাস দিয়ে সক্রিয় হয়ে উঠেছে এক শ্রেণির দালালচক্র। দরিদ্র মানুষজনের কাছে তারা মোটা টাকা দাবি করছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। যদিও ভুয়ো বিলের অভিযোগ অস্বীকার করে আনিকুল বিদ্যুত চুরি করে বিক্রি করেছেন বলে পাল্টা অভিযোগ তুলেছে বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি। গত পাঁচ বছর ধরে দোকানে গেলেও তাকে পাওয়া যায়নি বলেও দফতরের কর্তারা দাবি করেছেন। আনিকুল অবশ্য সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির উত্তর মালদহের ডিভিশনাল ম্যানেজার অমিয় আদকের দাবি, ‘‘আনিকুল লাগোয়া দোকানে বিদ্যুৎ বিক্রি করতেন। পাঁচ বছর ধরে ওর দোকানে গেলেও তা বন্ধ থাকায় ওর দেখা মেলেনি। সম্প্রতি আমরা ওর মিটার পরীক্ষা করে দেখেছি। কিন্তু কোনও ত্রুটি ধরা পড়েনি। আমরা ওর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ জানাব।’’ কিন্তু পাঁচবছর ধরে ওই দোকান বন্ধ থাকলেও কেন আগে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, বা যে সময়ে ওই বিলের পরিমাণ দেখানো হয়েছে সেই সাত মাসে কী করে অত টাকা বিল হওয়া সম্ভব, সে প্রশ্নের জবাব মেলেনি। এছাড়া বিলের টাকা কমিয়ে দেওয়া হবে বলে এক শ্রেণির দালাল মোটা টাকা দাবি করছে বলে আনিকুল যে অভিযোগ করেছেন তা শুনে ডিভিশনাল ম্যানেজার ফোনের সংযোগ কেটে দেন তিনি।

বিদ্যুত বণ্টন কোম্পানির সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর ১৯ অগস্ট আনিকুল ইসলামকে যে বিল পাঠানো হয় তাতে ১৭৩৪ ইউনিট ছিল। তার পর এ বছরের ১৭ মার্চ মিটারে দু লক্ষ ১৩ হাজার ৮৩৯ ইউনিট ওঠে। সেই বাবদ তাকে ২০ লক্ষ ৯৩ হাজার ৬৯৫ টাকা বিল পাঠানো হয়।

যদিও আনিকুলের দাবি, বাঁধের উপরে যে কয়েকটি দোকান রয়েছে তার মধ্যে একমাত্র তার দোকান সকাল থেকে রাত্রি পর্য়ন্ত খোলা থাকে। কর্মীরা যে দোকানে এসে মিটার রিডিং নিয়ে গিয়েছেন তার প্রমাণও রয়েছে। ২০১৪ সালের ১৯ অগস্ট মিটারে ১৭৩৪ ইউনিট হয়েছিল। তার সাত মাস বাদে কী ভাবে দু’লক্ষাধিক ইউনিট উঠল সেই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।

আনিকুল বলেন, ‘‘এক শ্রেণির দালাল এসে আমার কাছে মোটা টাকা দাবি করে বিল কমিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিল। কিন্তু পানের দোকান চালাই। ফলে টাকা দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানানোয় এখন আমাকে চুরির দায়ে ফাঁসাতে চাইছে।’’

হরিশ্চন্দ্রপুরের রানিপুরা চাষি সাজেদ হোসেনও বলেন, ‘‘গত বছর জুন থেকে অগস্ট তিন মাসে ৪০ লক্ষ ৩১ হাজার ২৭১ টাকা বিল পাঠানো হয়েছিল। ফের ওই বিল পাঠিয়ে আমাকে তা দিতে বলা হয়েছে। তা না হলে ব্যবস্থা নেওয়া হলে বলে হুমকি দিচ্ছে। সব বিক্রি করলেও ওই টাকা জোটানো সম্ভব নয়।’’

হরিশ্চন্দ্রপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতির সিপিএমের মত্স্য কর্মাধ্যক্ষ তথা সাজেদ হোসেনের প্রতিবেশী নুর ইসলাম বলেন, ‘‘দফতরের বিরুদ্ধে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলা করার কথা ভাবছি।’’

malda ratua harishchandrapur poor farmer poor farmer electric bill pan vendor electric bill 21 lakh rupees 41 lakh rupees poor farmers electric bill absurd electric bill surprising electric bill
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy