মালদহে ভাঙন কবলিতদের সঙ্গে বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু। — নিজস্ব চিত্র।
উত্তর মালদহের সাংসদ খগেন মুর্মুকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখালেন গ্রামবাসীরা। মালদহের রতুয়া ১ ব্লকের মহানন্দাটোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের কান্তুটোলা গ্রামে ভাঙন পরিদর্শনে গিয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ। তাঁকে ঘিরে ধরেন স্থানীয়েরা। অভিযোগ, গ্রামের অনেক বাড়ি গঙ্গার গ্রাসে তলিয়ে গিয়েছে। বার বার এ বিষয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও কেউ কোনও পদক্ষেপ করেনি। ভিটেমাটি হারিয়ে আশ্রয়হীন ভাবে দিন কাটছে গ্রামবাসীদের অনেকেরই।
সাংসদ খগেনের কাছে সাহায্য চান ভাঙন কবলিতরা। তাঁদের দাবি, যাঁদের বাড়ি আংশিক ভেঙেছে বা পুরোপুরি জলে তলিয়ে গিয়েছে, তাঁদের অবিলম্বে পুনর্বাসন দিতে হবে। এ ছাড়া, পাথর দিয়ে গঙ্গার পার বাঁধাতে হবে। সাংসদকে তার ব্যবস্থা করতে বলেন গ্রামবাসীরা। অনেকে কাঁদতে কাঁদতে তাঁর পায়ে পড়ে যান। জানান, জলে বাড়ি ভেসে যাওয়ার সময় এক মুহূর্তও সময় পাননি তাঁরা। তাই প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, টাকাপয়সা কোনও কিছুই বার করতে পারেননি। সর্বস্ব খোয়াতে হয়েছে।
গ্রামবাসীদের দাবি, গ্রামের মোট ১৫০টি বাড়ি এই মুহূর্তে ভাঙন কবলিত। তার মধ্যে ২০টি বাড়ি সম্পূর্ণ তলিয়ে গিয়েছে। বাকি বাড়িগুলির অবস্থাও শোচনীয়। বাধ্য হয়ে রাস্তায় ত্রিপল টাঙিয়ে কোনও রকমে মাথা গোঁজার ঠাঁই করে নিয়েছেন তাঁরা। কেউ কেউ আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে উঠেছেন। পঞ্চায়েত থেকে কেবল ভাঙন কবলিতদের খাবার দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলার পর খগেন অবশ্য এই পরিস্থিতির দায় চাপিয়েছেন প্রশাসন তথা রাজ্য সরকারের উপরেই। তিনি বলেন, ‘‘যিনি জেগে ঘুমান, তাঁকে জাগানো যায় না। আমাদের এই গঙ্গাঘেঁষা গ্রামগুলি রাজ্য সরকারের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। তা এড়িয়ে ওঁরা কেন্দ্রীয় সরকারের দিকে আঙুল তুলছেন। কেন্দ্রকে তাঁরা নিজেদের অপারগতার কথা স্বীকার করে একটাও চিঠি দিয়েছেন? কোনও আর্থিক সাহায্য চাওয়া হয়েছে? আমি লোকসভায় এ কথা অনেক বার বলেছি। রাজ্য সরকার ভাঙনরোধে চূড়ান্ত ব্যর্থ। ওঁরা একটা চিঠি দিলে আমি সেটা নিয়ে কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রী গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াতের সঙ্গে কথা বলব।’’
ভাঙন কবলিতদের পুনর্বাসনের দায়িত্ব রাজ্য সরকারের, জানিয়েছেন খগেন। কিন্তু অভিযোগ, তৃণমূল নেতারা শুধু এসে ঘুরে চলে যাচ্ছেন। কাজের কাজ কিছু করছেন না। দরকারে জমি কিনে গ্রামবাসীদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন তিনি। তবে ভাঙনরোধে কী পদক্ষেপ করা যায়, সে বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড এবং বিহারকে নিয়ে কেন্দ্রের তরফেও ভাবনাচিন্তা চলছে বলে জানিয়েছেন সাংসদ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy